'ফিরেছি, থাকব কি না জানি না'

l ব্রাদার্সে তিন বছর কোচ থাকার পর আড়ালে চলে গেলেন। দুই বছর পর আবার কী মনে করে ফিরলেন?

খন্দকার ওয়াসিম ইকবাল: কিছু মনে করে ফিরিনি। শেখ জামালের সভাপতি কাদের ভাই খুব করে ধরায় ছুটতে পারলাম না (হাসি)। তবে শুধু সুপার কাপেই তাঁর দলটাকে কোচিং করাব। এর বেশি কিছু এখন পর্যন্ত ভাবিনি।

l তার মানে, আপনি কোচিংটাকে পেশা হিসেবে নিতে রাজি নন?

ওয়াসিম: ফুটবল কোচিংকে পেশা হিসেবে নেব না, এটা আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। ব্রাদার্সের দায়িত্বও নিয়েছিলাম লাভলু ভাই, সেলিম ভাইদের অনুরোধে। কোচিংয়ে আসব, এটা আমি কখনোই ভাবিনি। আমার চরিত্রই হলো এমন, কোনো লক্ষ্য-টক্ষ্য ঠিক করি না। যা ঘটে, সবই হুটহাট করে।

l আপনার এই আসা-যাওয়ায় জানার কৌতূহল হচ্ছে, তাহলে আপনি কি কোচিংটা উপভোগ করেন না?

ওয়াসিম: উপভোগ করি। করব না কেন! আমার তো ভালোই লাগে। কিছু খেলোয়াড় নিজের হাতে তৈরি করা যায়। শীর্ষ পর্যায়ে হয়তো খেলোয়াড়েরা তৈরিই হয়ে আসে, তার পরও খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করার আলাদা একটা আনন্দ আছে। এটা আমার বেশ ভালো লাগে।

l তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে থাকার ইচ্ছা বা পরিকল্পনা নেই কেন আপনার?

ওয়াসিম: ব্রাদার্সে তিন বছর কোচিং করানোর পর ওরা সৈয়দ নঈমুদ্দিন ও লাডি বাবাকে কোচ করে এনেছে। আমি কিন্তু শীর্ষ পর্যায়ে ওই সময় কোচিং না করালেও তৃতীয় বিভাগের দল সিটি ইউনাইটেডের সঙ্গে ছিলাম এবং আছি। ওই দলের নুরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন অনুরোধ করল, ওদের সঙ্গে থাকতে। ওরা একটা একাডেমি করবে আমাকে সামনে রেখে। ওদের না করতে পারিনি।

l সুপার কাপ শেষে শেখ জামাল যদি আপনাকে না ছাড়ে...

ওয়াসিম: ওরা না ছাড়লে হয়তো চালিয়েও যেতে পারি। আবার হয়তো সুপার কাপেই শেষ। সত্যি বলি, কাদের ভাই ওভাবে না ধরলে আমার ফেরা হতো না। আবার কখনোই ফিরতাম না, এটাও নিশ্চিত করে বলা কঠিন। বলতে পারেন, আমি এই আছি, এই নেই! কোচিংয়ে ফিরেছি, থাকব কি না জানি না।

l এমনিতে ব্রাদার্সে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

ওয়াসিম: আসলে খেলোয়াড়ি জীবন ছিল এক রকম, কোচিং জীবন আরেক রকম। কোচিংয়ে এসে কিছুটা বিতর্কিত হয়ে পড়েছি। খেলোয়াড় হিসেবে এক ম্যাচ খারাপ খেললে হয়তো ক্লাব সেটা মেনে নিত...ঠিক আছে, পরের ম্যাচে পুষিয়ে দেবে। কিন্তু কোচিংটা ভিন্ন। এখানে সমালোচিত হতে হয়, যেটা অনেক সময় ভালো লাগে না।

ˆ কাঁটার আঘাত তো কোচিংয়ে থাকবেই। সেটা মানতে আপনি তাহলে তৈরি ছিলেন না?

ওয়াসিম: ব্রাদার্সের সঙ্গে আমার আসলে কোনো দ্বন্দ্ব বা মতভেদ হয়নি। এখন শেখ জামালে যোগ দিলেও আমি কিন্তু ব্রাদার্সেই আগের মতো আড্ডা মারি। খেলোয়াড়ি জীবনে দুই বছর আবাহনীতে খেলার সময়টাও আমার আড্ডা থাকত ব্রাদার্সে। মানে, আমি ব্রাদার্সের ওয়াসিম, ব্রাদার্সেরই আছি।

l বর্তমানে দেশে ফুটবল কোচিংয়ে অর্থ, সম্মান দুটোই বেড়েছে। এটা দেখেও কি কোচিংয়ে লম্বা সময় থাকার প্রেরণা পান না?

ওয়াসিম: আমি আসলে এসব নিয়ে চিন্তাই করি না। এখন অর্থ, সম্মান বেড়েছে ঠিকই, তবে এখনো পেশাদারি থেকে অনেক দূরে আমরা। আরও অনেক দূর যাওয়ার বাকি।