দিনে ময়লা-আবর্জনা কুড়িয়ে রাতে বডিবিল্ডিং

মিসরের বডিবিল্ডার আলী এল-শারকাউয়িছবি: রয়টার্স

মিসরে বডিবিল্ডারদের জাতীয় র‌্যাঙ্কিংয়ে তিনি আছেন। সেটি খুব যে বড় কোনো সাফল্য, তা নয়। কিন্তু আলী এল-শারকাউয়ি যেভাবে উঠে এসেছেন, সেটার জন্যই তিনি সংবাদপত্রের শিরোনাম। কীভাবে?

খুব সহজ। সকাল থেকে ময়লা-আবর্জনা কুড়িয়ে সেসব বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায়, তা দিয়ে বডিবিল্ডার হওয়ার স্বপ্নে তা দিয়েছেন। সে স্বপ্ন ডালপালা মেলে বড় হতে হতে আলী এল-শারকাউয়ি এখন বডিবিল্ডার। অনুশীলন করেন সন্ধ্যা থেকে।

আরও পড়ুন

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিসরে ব্যক্তিগত ক্রীড়ায় পায়ের তলে ভিত শক্ত করা কঠিন। আর্থিক সমস্যাই বড় কারণ। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে দুটি ব্রোঞ্জ পদকজয়ী এল-শারকাউয়ি এখানে ব্যতিক্রম। হোক না ময়লা-আবর্জনা কুড়ানো, কাজ তো কাজই! আর এই কাজ করেই বডিবিল্ডার হয়ে উঠেছেন এই অ্যাথলেট।

ঘোড়ার গাড়িতে ময়লা কুড়িয়ে পাওয়া টাকায় বডিবিল্ডার হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন আলী এল-শারকাউয়ি
ছবি: রয়টার্স

ময়লা-আবর্জনা কুড়ানোর জন্য ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করেন এল-শারকাউয়ি। ঘোড়ার গাড়িতে আবর্জনা টেনে সেগুলো গারবিয়া অঞ্চলে নিয়ে যান বিক্রি করতে। এই কাজ করে দিনে ৬.৫৯ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭০৩ টাকা) আয় করেন এল-শারকাউয়ি। কাজটি করতে শারকাউয়ির যে খুব ভালো লাগে তা নয়। রয়টার্সকে বলেছেন, ‘যদি এর চেয়ে ভালো কোনো কাজ পেতাম!’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

এল-শারকাউয়ির এ নিয়ে দুঃখও আছে। বডিবিল্ডার হতে রাষ্ট্রের কোনো সাহায্য তিনি পাননি। ক্রীড়াক্ষেত্রে মিসর সরকারের বরাদ্দকৃত তহবিলের সিংহভাগ দলগত খেলাধুলায় বিনিয়োগ করা হয় বলেও জানিয়েছেন এল-শারকাউয়ি। আর্থিক সমস্যা তো আছেই, অনুশীলনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও পাননি এল-শারকাউয়ি। কিন্তু ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়! এল-শারকাউয়ি এসব অসুবিধার মধ্যেই বডিবিল্ডার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। ২০২০ ও ২০২১ সালে ‘মিস্টার অলিম্পিয়া’ খেতাবজয়ী মিসরের খ্যাতিমান বডিবিল্ডার ‘বিগ রামি’খ্যাত মামদো এলসবিয়া তাঁর প্রেরণা।

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলার স্বপ্ন দেখেন এই বডিবিল্ডার
ছবি: রয়টার্স

এল-শারকাউয়ির কোচ মোস্তফা এল-তামিমি জানিয়েছেন, অনুশীলন শুরুর পর ধীরে ধীরে সাফল্য পেতে শুরু করেন তাঁর ছাত্র, ‘সে এখন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায়। কিন্তু বডিবিল্ডিং ক্যারিয়ার গড়তে প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য তহবিলের দরকার হয়।’