রোনালদোকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা ‘অবিচারের শামিল’, মনে করেন তাঁর বোন

ভাইকে শুরুর একাদশে না দেখে চটেছেন রোনালদোর বোন এলমা আভেইরোফাইল ছবি

বছরের হিসেবে ১৮, দিনের হিসেবে ৬৭৪৭—ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে যে লম্বা সময়ের ব্যবধানে আবারও এই অভিজ্ঞতার স্বাদ নিতে হবে, সেটা আঁচ করা যাচ্ছিল ম্যাচের দুই দিন আগে থেকেই।

কী সেই অভিজ্ঞতা? নকআউট পর্বের ম্যাচে বেঞ্চে বসে দাঁত দিয়ে নখ কামড়ানো আর দলের খেলা দেখা। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে গত রাতে শুরুর একাদশে নামানো হয়নি রোনালদোকে। ২০০৪ ইউরোতে শেষবার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর।

পর্তুগিজ ফুটবলের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেও ছন্দহীনতার কারণেই ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন রোনালদো। বয়সটা যে তাঁর ক্যারিয়ারে জোরেশোরেই থাবা বসাতে শুরু করেছে, সেটা আর বুঝতে বাকি নেই।

রোনালদোর পারফরম্যান্সের গ্রাফ ক্রমেই নিম্নমুখী। মাঠে তাঁকে খুব একটা সক্রিয় মনে হয় না। আগের মতো গতি নেই, নাগালের বল ছাড়া তেমন নড়াচড়াও নেই—সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের মতো বৃহৎ মঞ্চে তিনি পড়ে গেছেন আড়ালে।

বদলি নামার আগে বেঞ্চে বসে দলের খেলা দেখেছেন রোনালদো
ছবি: এএফপি

খোদ পর্তুগালের মানুষও রোনালদোর ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ৭০ শতাংশ মানুষ চান না রোনালদো শুরুর একাদশে থাক। বারবার সুযোগ দিয়েও প্রত্যাশা মেটাতে না পারায় পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোসও অবশেষ কঠিনতম সিদ্ধান্তটাই নিয়েছেন। কাল রোনালদোকে বসিয়ে খেলিয়েছেন তরুণ ফরোয়ার্ড গনসালো রামোসকে। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে অবশ্য জোয়াও ফেলিক্সের বদলি হিসেবে নামিয়েছেন নিয়মিত অধিনায়ককে।

তবে রোনালদোর বোন এলমা আভেইরো মনে করেন, তাঁর ভাইয়ের মতো মহাতারকাকে বসিয়ে রেখে কোচ সান্তোস ‘অবিচার’ করেছেন। ইনস্টাগ্রামে আভেইরো লিখেছেন, ‘যে মানুষটা পর্তুগিজ ফুটবলকে বছরের পর বছর এত কিছু দিয়ে গেল, তাকে এভাবে অপদস্থ হতে দেখে লজ্জিত।’

সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ ব্যবধানে গুঁড়িয়ে পর্তুগাল কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠায় দলকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন আভেইরো। এরপর আবার লিখেছেন, ‘হ্যাঁ, রোনালদো অমর নয়। রোনালদো সারা জীবন খেলবে না। সে বুড়িয়ে গেছে। দুর্ভাগ্যবশত এই মুহূর্তে গোল পাচ্ছে না। পর্তুগালের এখন আর তাকে দরকার নেই। সান্তোস ওর সব অবদান ভুলে গেছে। ওর প্রতি অবিচার করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন

রোনালদোকে রাখা না–রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সান্তোস জানিয়েছিলেন, এটার সমাধান করে ফেলেছেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে আভেইরো লিখেছেন, ‘কাউকে বাদ দেওয়ার আগে যেন সে খেলোয়াড়ের ইতিহাস জেনে নেয়। রোনালদো এখনো বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।’

মাঠের বাইরে থেকে বল কুড়িয়ে এনে রোনালদোকে দিচ্ছেন এক তরুণী ভক্ত
টুইটার

তবে রোনালদোর বোন যা-ই লিখুন, সান্তোস হয়তো তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না। রোনালদোর জায়গায় সুযোগ পাওয়া রামোস যে হ্যাটট্রিক করে নিজের জাত চিনিয়েছেন! এমন একজনকে কোচ বসিয়ে রাখবেন কী করে? তাঁর কাছে নিশ্চয় ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ!