ঋতুপর্ণা চাকমা

সাফ ফুটবলে পাঁচ ম্যাচেই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। আরও ছয়জন খেলেছেন বদলি হিসেবে। ছয়জন মাঠে নামার সুযোগ পাননি। তারপরও সবাই এই বিজয়ের অংশীদার। সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের ২৩ খেলোয়াড়ের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি লিখেছেন বদিউজ্জামান

ঋতুপর্ণা চাকমা, মিডফিল্ডার

বাংলা সিনেমা দেখতে খুব পছন্দ করতেন ঋতুপর্ণা চাকমার জেঠিমা নিলোবানু চাকমা। পশ্চিমবঙ্গের নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের ভক্ত নিলোবানু তাই তো ভাইয়ের ফুটফুটে মেয়ের নাম রাখেন ঋতুপর্ণা। কিন্তু সিনেমা–নাটকের চেয়ে ফুটবল মাঠই বেশি টানে ঋতুপর্ণাকে।

চার বোনের মধ্যে চতুর্থ ঋতুপর্ণা। টানা চতুর্থবারের মতো কন্যাসন্তান হওয়ায় বাবা-মা একটু মন খারাপই করেছিলেন। কিন্তু কে জানত, সেই মেয়েই তাঁদের মুখ উজ্জ্বল করবেন ফুটবল খেলে!

লেফটব্যাক ও লেফট উইং—দুই পজিশনেই খেলতে পারেন ঋতুপর্ণা। তবে জাতীয় দলের কোচ গোলাম রব্বানী উইঙ্গার হিসেবেই খেলিয়ে থাকেন তাঁকে। রাঙামাটির মেয়ে ঋতুপর্ণা ২০১২ সালে স্থানীয় মগাছড়ি স্কুলের হয়ে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রথম অংশ নেন। খেলেন পরের বছরও। বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে প্রথম সুযোগ পান ২০১৭ সালে, অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় দলে।

লেফটব্যাক ও লেফট উইং—দুই পজিশনেই খেলতে পারেন ঋতুপর্ণা। তবে জাতীয় দলে খেলেন মূলত উইঙ্গার হিসেবে।

গত বছর ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেছিলেন ২ গোল। এবারের সাফেও বদলি হিসেবে নেমে পাকিস্তান ও ভুটানের বিপক্ষে করেছেন ১টি করে গোল।

বাবা ব্রজবাসী চাকমা চাইতেন মেয়ে বড় ফুটবলার হবেন। অভাবের সংসারেও মেয়ের অনুশীলনের জন্য যাতায়াতের খরচ দিতেন। ২০১৫ সালে ক্যানসারে ভুগে মারা যান বাবা। বিকেএসপির উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রী ঋতুপর্ণার একমাত্র ভাই পার্বণ চাকমাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন গত জুন মাসে। এখন ফুটবল দিয়েই যেন সব দুঃখ ভুলতে চান ঋতুপর্ণা।