'খাল' কেটে স্পিনার ডেকে আনল ভারত!

ও’কিফের স্পিনে শেষ হয়ে গেল ভারতের প্রথম ইনিংস। ছবি: এএফপি।
ও’কিফের স্পিনে শেষ হয়ে গেল ভারতের প্রথম ইনিংস। ছবি: এএফপি।

ভারতীয় ফিল্ডাররা কী হাতে মাখন লাগিয়ে মাঠে নেমেছিলেন? 

এভাবে গড়পড়তা ‘ভারতীয়’ বললে অন্যরা হয়তো রাগ করতে পারেন। একটু নির্দিষ্ট করেই বলা যাক, মুরালি বিজয় ও অভিনব মুকুন্দ—এ দুজনের মাখন গলানো হাতেই সর্বনাশের চূড়ান্ত হলো ভারতের। অবশ্য সর্বনাশের সূচনাটা দিনের দ্বিতীয় সেশনেই হয়ে গেছে স্বাগতিকদের। দ্বিতীয় দিন শেষে ৬ উইকেট হাতে রেখে ২৯৮ রানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া।
৪ উইকেটে ১৪৩ রান করে দিন শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া। ৫৯ রানে অপরাজিত আছেন স্টিভ স্মিথ, ২১ রানে মিচেল মার্শ। অথচ ২৩ রানেই ফিরতে পারতেন স্মিথ। কিন্তু বিজয়ের বদান্যতায় সে যাত্রা বেঁচে যান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। দলের রান তখনো ৪০ পেরোয়নি। ২৯ রানেই আরেকবার জীবন পেলেন স্মিথ, এবার দোষী বদলি ফিল্ডার মুকুন্দ। মিড অনে সে সুযোগটাকে না হয় হাফ চান্স বলা যায়, কিন্তু ৩৭ রানে যখন আবারও জীবন পেলেন স্মিথ, সেটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন ম্যাথু রেনশ। মিডল অর্ডারে নামা এই ওপেনারের ক্যাচটা ফেলেছেন বিজয়। স্লিপে বিশ্বস্ত হাত অজিঙ্কা রাহানের দিকে যাওয়া বলে অযথা হাত বাড়িয়ে ক্যাচ ফেলেছেন, ৪ রান উপহার দিয়েছেন রেনশকে। রেনশ অবশ্য এরপর টিকে থাকেননি বেশিক্ষণ। কিন্তু ভারতকে শাস্তি দিতে এখনো টিকে আছেন স্মিথ। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা, জয়ন্ত যাদবের পর পর দুই ওভারে দুটি রিভিউ নষ্ট করে ফেলেছে ভারত। স্বাগতিকদের উল্টোদিকে সত্যিকারে টেস্ট ম্যাচের মেজাজ দেখিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া। এমন স্পিন-স্বর্গেও কী দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেন স্মিথ, রেনশ, হ্যান্ডসকম্বরা! তাতেই তো লিডটা চলে যাচ্ছে ভারতের ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আর সেই স্পিনকে কাজে লাগিয়েই ভারতকে শেষ করে দিলেন স্টিভ ও’কিফ। দুর্দান্ত বল করে এক উইকেট পেয়েছেন নাথান লায়ন কিন্তু ৩৫ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ভারতকে ১০৫ রানে অলআউট তো করে দিয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনারই। অস্ট্রেলিয়াকে স্পিন ফাঁদে ফেলতে গিয়ে নিজেরাই কাটা পড়ল সে ফাঁদে!
২৯৮ রানের চেয়ে বেশি রান তাড়া করে ভারতে ম্যাচ জেতার ঘটনাই আছে শুধু একটি। ২০০৮ সালে চেন্নাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৮৭ রান করে ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল ভারত। আর ইতিহাস তো উপমহাদেশে এমনিতেই চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা দলের বিপক্ষে সব সময়। পরিসংখ্যান বলছে, প্রথম ইনিংসে দেড় শ রানের বেশি পিছিয়ে থেকে ৮৪ বার ম্যাচ হেরেছে ভারত। আবার এ পরিসংখ্যানই সাহস দিতে পারে তাদের। মাত্র তিনবার প্রতিপক্ষকে এত বড় লিড দিয়েও ইতিবাচক ফল নিয়ে মাঠ ছেড়েছে তারা, দুটি জয় ও একটি টাইয়ের সে ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষ কিন্তু অস্ট্রেলিয়াই ছিল!