দলে জায়গা না পেয়ে আত্মহত্যার হুমকি!

>
সকিনা খাতুনের এ হাসি মিলিয়ে গেছে। ভারতের কমনওয়েলথ গেমস দলে জায়গা পাননি। ছবি: টুইটার
সকিনা খাতুনের এ হাসি মিলিয়ে গেছে। ভারতের কমনওয়েলথ গেমস দলে জায়গা পাননি। ছবি: টুইটার

• ভারতের কমনওয়েলথ গেমস দলে জায়গা না পেয়ে 
• প্যারা-ভারোত্তোলক সকিনা খাতুনের আত্মহত্যার হুমকি
• সর্বশেষ কমনওয়েলথ গেমসে পদক জিতেছিলেন সকিনা খাতুন।

শারীরিক অসংগতি নিয়েই ভারতের হয়ে ইতিহাস তিনি আগেই গড়েছেন। চার বছর আগে গ্লাসগোয় কমনওয়েলথ গেমসে ভারোত্তোলনের লাইটওয়েট ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন সকিনা খাতুন। ২৮ বছর বয়সী এ ভারোত্তোলক কমনওয়েলথ গেমসে পদকজয়ী ভারতের একমাত্র প্যারা-অ্যাথলেট। কিন্তু এমন কীর্তি গড়েও এবারের কমনওয়েলথ গেমসের জন্য ভারতের বহরে তাঁর জায়গা হয়নি! সকিনা খাতুন এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে দলে জায়গা না পেলে আত্মহত্যাও করতে পারেন!

অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টে ৪ এপ্রিল থেকে বসবে কমনওয়েলথ গেমসের ২১তম আসর। গ্লাসগোয় ইতিহাস গড়ার পর এবারের আসরটি সামনে রেখে চার বছর ধরে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন সকিনা। কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নিতে প্যারা-অ্যাথলেটদের নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতার পরীক্ষা দিতে হয়। গেমস কর্তৃপক্ষের (সিজিএফ) বেঁধে দেওয়া সেই যোগ্যতার পরীক্ষায় টিকলেও দেশ তাঁকে বিবেচনা করেনি। সকিনাকে বাইরে রেখেই কমনওয়েলথ গেমসের দল গঠন করেছে ভারত। এই বঞ্চনা সকিনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।

উপায় না পেয়ে এই প্যারা-অ্যাথলেট হুমকি দিয়েছেন, কমনওয়েলথ গেমসে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ না পেলে ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (আইওএ) সামনে আত্মহত্যা করবেন। এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালকে (এএনআই) সকিনা বলেছেন, ‘দলে জায়গা পেতে এখনো অপেক্ষায় আছি। আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করব এবং তারপরও জায়গা না পেলে আদালতে যাব। ওরা আমার জীবন নষ্ট করেছে। আইওএর সামনে আত্মহত্যাও করতে পারি।’

কমনওয়েলথ গেমস এবং এশিয়ান র‍্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় এই প্যারা-ভারোত্তোলক ভারতের প্যারা-অলিম্পিক কমিটির (পিসিআই) কাছে চিঠিও লিখেছেন। অনুরোধ করছেন, তাঁকে যেন দলে বিবেচনা করা হয়। এরপর পিসিআই কর্তৃপক্ষ ভারতের অলিম্পিক কমিটির কাছে লেখা চিঠিতে অনুরোধ করেছে কমনওয়েলথ গেমসের আয়োজক কমিটি তাঁকে যেন আসরটিতে বিবেচনা করে। কিন্তু দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কিংবা অলিম্পিক কমিটির কাছ থেকে সকিনা এ ব্যাপারে আর কোনো জবাব পাননি।

হতাশা তাই সকিনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর দাবি, ‘কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে এ পর্যায়ে উন্নীত করেছি। কিন্তু এখন জানি না ঠিক কী করা উচিত। খুব গরিব ঘর থেকে উঠে এসেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) বলে থাকেন “বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও” (মেয়েদের রক্ষা করো, মেয়েদের শিক্ষিত করো), তাহলে তাঁর মেয়ে আজ এ অবস্থার মধ্যে কেন? ভেতরে-ভেতরে ভেঙে পড়লেও নিয়মিতই অনুশীলন করছি। কমনওয়েলথ গেমসে যেতে না পারলে আমি আইওএর সামনে আত্মহত্যা করব।’