সুয়ারেজ‍-কাভানি মিলে এক রোনালদো

উরুগুয়ের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন রোনালদো। ছবি: এএফপি
উরুগুয়ের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন রোনালদো। ছবি: এএফপি
>বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় আজ উরুগুয়ের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। সোচিতে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় মাঠে গড়াবে এই লড়াই। এই ম্যাচে রোনালদোকে আটকানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ নিতে হবে উরুগুয়েকে

পর্তুগাল দলের মেরুদণ্ড? তা মাঠেই দৃশ্যমান। আক্রমণভাগে সবচেয়ে তীক্ষ্ণ ফলা? সে তো বটেই। নেতা? তা আর বলতে! প্রেরণার আধার? দলের বাকিরা তা একবাক্যে স্বীকার করেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তাই পর্তুগাল দলে যে ‘একের মধ্যে সবকিছু’ তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। কিন্তু মাঠে দলের জন্য তাঁর এই ‘সবকিছু’ হয়ে ওঠার কতটুকু আমরা দেখছি?

পর্তুগিজ আক্রমণভাগের পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই ব্যাপারটি দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার ফুটে ওঠে। ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৩২ গোল করেছে পর্তুগাল। দলের প্রায় অর্ধেক গোল রোনালদোর একার! বাছাইপর্বে ১৫ গোল করেছেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। বাছাইপর্বে গোলসংখ্যায় রোনালদোর পরই রিকার্ডো কারেসমা। রোনালদোর গোলসংখ্যা জানার পর কারেসমার গোলসংখ্যা শুনলে হাসি পাবেই, ৪ গোল।

বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় আজ উরুগুয়ের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। সোচিতে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় মাঠে গড়াবে এ লড়াই। লাতিন দলটিতে আছেন লুইজ সুয়ারেজ ও এডিনসন কাভানির মতো জাত ফরোয়ার্ড। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এই দুই ফরোয়ার্ড মিলে করেছেন ২৪ গোল। নেইমার-কুতিনহো (২৮) জুটির পর বাছাইপর্বে সুয়ারেজ-কাভানি জুটিই সেরা। কিন্তু রোনালদোকে দেখুন, পর্তুগাল দলে তাঁর পাশে মানানসই তেমন কেউ নেই। তাতে অবশ্য খুব বেশি ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নি। রোনালদো তো একাই এক শ! এই দুই জুটির গোলসংখ্যার পাশে রোনালদোর গোলসংখ্যা রাখলেই তা বোঝা যায়।

বিশ্বকাপের এই চূড়ান্ত পর্বেও তুলনাটা হতে পারে। সুয়ারেজের গোলসংখ্যা ২ আর কাভানির ১। ওদিকে রোনালদো একাই করেছেন ৪ গোল। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে সুয়ারেজ-কাভানি মিলে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে আটটি শট নিতে পেরেছেন। অন্যদিকে রোনালদো পর্তুগালের তিন ম্যাচে ১৫টি শট নিয়েছেন, এর মধ্যে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে ছিল সাতটি।

প্রতিপক্ষ দলের ডিফেন্ডারদের ট্যাকলও তুলনামূলক বেশি সামলাতে হয়েছে রোনালদোকে। যেহেতু পর্তুগাল দলের একমাত্র বড় তারকা, তাই ডিফেন্ডারদের শ্যেনদৃষ্টি থাকে তাঁর ওপর। সেদিক বিচারে নেইমারদের দলে আছেন কুতিনহো কিংবা মেসির পাশে আছেন আগুয়েরো-ডি মারিয়ারা। অর্থাৎ ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনা নিয়ে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে একজন নয়, দু-তিনজন খেলোয়াড় নিয়ে ভাবতে হয়। কিন্তু পর্তুগালের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ দলগুলোর সুবিধা বেশি। অনেকেরই ভাবনা, রোনালদোকে আটকালেই তো পর্তুগালও আটক!

গ্রুপ পর্বে পর্তুগাল ও রোনালদোর স্কোরলাইন দেখলে কথাটা সত্যি বলেই মনে হবে। তবে কেউ কি খেয়াল করেছেন, এই তিন ম্যাচে রোনালদো কতবার ফাউলের শিকার হয়েছেন? আগে সুয়ারেজ-কাভানির পরিসংখ্যানটা দেওয়া যাক। সুয়ারেজ ৬ বার এবং কাভানি ৩ বার করে ফাউলের শিকার হয়েছেন। আর রোনালদো একাই ১৩ বার শিকার হয়েছেন ফাউলের।

তাহলে সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার কে? ঠিকই ধরেছেন, নেইমার, ১৭টি।