এবার সাকিবের 'নিজেরও বাড়ি'তে খেলা

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ড নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ড নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
>

স্ত্রী উম্মে আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, মেয়ে আলায়না নাগরিক জন্মসূত্রে। ভবিষ্যৎ প্রশ্নে যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে, সাকিব আবেদন করেছেন ‘গ্রিনকার্ডে’র জন্য। কদিন আগে সেটি পেয়েও গেছেন।

‘এবার তো আপনার শ্বশুরবাড়িতে খেলা।’ প্রশ্নটা শুনে সাকিব আল হাসান থামেন। ‘শুধু শ্বশুরবাড়ি না, নিজেরও বাড়ি’—বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের উত্তর।

‘নিজেরও বাড়ি’ কেন, সাকিবের কাছ থেকে সেই গল্প অবশ্য শোনা হয়েছে ম্যাচের দুদিন আগে, হোটেল লবিতে বসে। শুধু শ্বশুরবাড়ি বলেই নয়, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল) খেলতেও যুক্তরাষ্ট্রে অনেকবার যাওয়া হয় বাঁহাতি অলরাউন্ডারের। বছরে বেশ কবার যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখতে হয়, অথচ তাঁকেই কিনা মাঝেমধ্যে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ‘ভোগান্তি’ বলতে, যুক্তরাষ্ট্রে যেতে গেলে কোনো কারণ ছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বিমানবন্দরে। বাংলাদেশের এত বড় তারকা, মার্কিনদের সেটি বুঝতে বয়েই গেছে!

স্ত্রী উম্মে আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, মেয়ে আলায়না নাগরিক জন্মসূত্রে। ভবিষ্যৎ প্রশ্নে যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়ে, সাকিব আবেদন করেছেন ‘গ্রিনকার্ডে’র জন্য। কদিন আগে সেটি পেয়েও গেছেন। ‘ভবিষ্যতে ও দেশে থাকব কি না বলতে পারি না। যেহেতু নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়, ভোগান্তি এড়াতে নিয়ে রাখলাম’—বলছিলেন সাকিব।

বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে ভালো চেনা সাকিবেরই। এমনকি ৪ ও ৫ আগস্ট ফ্লোরিডায় যে মাঠে সিরিজের শেষ দুটি টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ, সেই লডারহিলের সেন্ট্রাল ব্রোয়ার্ড রিজিওনাল পার্কও বেশ চেনা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের, ‘সিপিএলে আমি অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছি ওখানে। অভিজ্ঞতা বলে, মন্থর উইকেট হতে পারে, যেটি আমাদের অনুকূলে কাজ করতে পারে। ১৫০-১৬০ রানের বেশি হয় না সাধারণত। তবে অনেক দিন পর খেলা, নতুন উইকেট থাকবে। ১৮০-১৯০ রানও হতে পারে। যেমন ভারতের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছে (২০১৬ সালের আগস্টে ভারতের ২৪৪ টপকে গিয়েছিল)। এমনিতে খুব একটা উইকেট হাই স্কোরিং ম্যাচ হয় না। আশা করব, সিপিএলের উইকেটের মতো যেন থাকে।’

ফ্লোরিডার দুটি টি-টোয়েন্টি নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কী যে আগ্রহ, সেন্ট কিটসে বসেই সেটি বেশ টের পাওয়া যাচ্ছিল। খেলোয়াড়, টিম ম্যানেজমেন্ট, এমনকি সাংবাদিকদের কাছে বারবার ফোন আসছে টিকিটের জন্য। কারও কারও অনুরোধ, দলকে একবেলা খাওয়াতে চান।

সাকিব মনে করেন, সেন্ট কিটসে হেরে যাওয়ার পর মানসিকভাবে যে ধাক্কা খেয়েছেন, ফ্লোরিডায় বাংলাদেশের দর্শকদের সমর্থনে নতুন করে উজ্জীবিত হওয়ার শক্তি খুঁজে পাবেন তাঁরা, ‘সেখানে আমাদের অনেক দর্শক থাকবে। তাদের দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। যদিও একটা সফরের শেষ পর্যায়ে এসে নিজেদের উদ্ধুদ্ধ করা কঠিন হয়ে যায়। পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এটা অবশ্য ঠিক না। এখনো আমাদের সিরিজ জেতা সম্ভব। যদি জিততে পারি, সেটা হবে বিরাট অর্জন।’

টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে দলের যাঁকেই জিজ্ঞেস করা হয়েছে, একটা কথা বলেছেন, ‘সেন্ট কিটস থেকেই আমাদের জিতে যেতে হবে। প্রথম টি-টোয়েন্টি জিততে পারলে মনস্তাত্ত্বিকভাবে এগিয়ে থেকে ফ্লোরিডায় পা রাখা যাবে।’

সেটি হয়নি। তবু ফ্লোরিডায় বিজয়ের গল্প লিখতে আশাবাদী সাকিব, ‘সত্যি বলতে, আমার বিশ্বাস অনেক বেশি। এখন আরও বেশি ভালো করা সম্ভব। (টি-টোয়েন্টি সিরিজের) প্রথম ম্যাচের আগ পর্যন্ত দ্বিধায় থাকলেও আমার এখন মনে হচ্ছে, আমাদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী থাকা উচিত। আমি বিশ্বাস করি যে ওদের সঙ্গে ভালোভাবে জেতা সম্ভব। সেটা আমরা মাথা খাটিয়ে জিততে পারি।’

যদি জিততে পারেন, অসাধারণ এক দৃশ্যের অবতারণা হবে নিশ্চিত। মার্কিন মুলুকে দেখা যাবে লাল-সবুজের উচ্ছ্বাস!