গড়াগড়িতে নেইমারের চেয়ে কম কিসে সালাহ!

এই ফাউল নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ছবি: এএফপি
এই ফাউল নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ছবি: এএফপি
>লিগে টানা দুই ম্যাচে দুই জয় নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে সমানে টক্কর দিচ্ছে লিভারপুল। তবে কাল ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে তাদের ২-০ গোলের জয় নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক

‘এটা অভিনয় করে পড়ে যাওয়া, অনেক খেলোয়াড়কেই এটা করতে দেখি।’ স্কাই স্পোর্টসের ফুটবল-পণ্ডিত গ্যারি নেভিলের কথাটা বিতর্কে ঘি-ই ঢেলেছে। কাল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের ২-০ গোলের জয় ছাপিয়ে আলোচনায় মোহামেদ সালাহর ডাইভ দিয়ে বিতর্কিত পেনাল্টি আদায়। ক্রিস্টাল প্যালেস নিজেদের মাঠে হেরেছে। তবে তারা মনে করছে, ম্যাচের এই ফল অন্যায়।

একে তো লিভারপুল এগিয়ে গিয়েছিল ৪৫ মিনিটে জেমস মিলনারের পেনাল্টি গোলে, যে পেনাল্টি আদায় করে নিয়েছেন সালাহ। প্যালেসের একটা শট ক্রসবারে লেগে ফিরেও এসেছে। ৭৫ মিনিটে তারা পরিণত হয়েছে ১০ জনের দলে। আর দ্বিতীয় গোলটা হজম করেছে ৯৩ মিনিটে। গোলদাতা সাদিও মানে। তবে সব ছাপিয়ে সালাহ-নাটক।

যে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছেন লিভারপুল থেকেই প্যালেসে নাম লেখানো মামাদু সাখো—প্যালেসের বক্সের মধ্যে ফিরমিনোর বাড়িয়ে দেওয়া বল সালাহ পায়ে নিতে না নিতে সাখো জার্সি ধরে হালকা টান মারেন। এই টানে সালাহর মতো শক্তপোক্ত খেলোয়াড়ের কিছুই যায়-আসে না। কিন্তু লিভারপুল তখন গোল পেতে মরিয়া। তাদের দারুণ সব আক্রমণ বিফলে যাচ্ছে বাজে ফিনিশিংয়ের কারণে। যার বড় দায় সালাহর নিজেরও। গত মৌসুমের জাদু ফিরিয়ে আনতে যে সময় লাগবে, অন্তত ছন্দে যে এখনো ফেরেননি, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল গোলে নেওয়া শটগুলো হাওয়া ছোটা বেলুনের মতো এদিক-ওদিক ছুটছিল দেখে।

ফলে সাখোর ছোট ভুলের সর্বোচ্চটাই তুলে নিলেন সালাহ। রেফারি মাইকেল ওলিভার বাঁশি বাজিয়ে হাত তুলে দিলেন স্পট কিকের দিকে। যেটি পছন্দ হয়নি প্যালেস-সমর্থকদের। শুরু হয়ে যায় ‘চিট’ ‘চিট’ দুয়ো।

টুইটারে ঝড় উঠেছে, সালাহর অতীত ডাইভের ভিডিওগুলোও তুলে আনা হচ্ছে। তাঁকে ডলফিনের সঙ্গে তুলনা করাসহ আরও অসংখ্য মিম-ট্রল বানানো হয়েছে। কেউ বলছেন, সালাহ নেইমারের চেয়ে বড় ডাইভার। আরও বেশি দক্ষ। কারণ সালাহ জানেন, ঠিক কখন ডাইভটা দিতে হবে। নেইমার অনেক সময় তাঁকে সামলাতে আসা খেলোয়াড়টির সঙ্গে কোনো সংযোগ ঘটার আগেই পড়ে যান বলে চোখে লাগে বেশি। কিন্তু এদিক দিয়ে সালাহ বুদ্ধিমানের মতো। তিনি অপেক্ষা করেন সুযোগের।

কালকেরটি নিয়েও যেমন লিভারপুল-সমর্থকেরা দাবি করতে পারেন, এটা ডাইভ নয়, ফাউলই। প্যালেস সমর্থকদের ক্ষোভটা আরও বেড়ে যায় সালাহর কারণেই ৭৫ মিনিটে অ্যারন ওয়ান-বিসাকা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন বলে। আর এগিয়ে থাকার পুরো সুবিধা তুলে নিয়ে লিগে দুই ম্যাচ ৬ পয়েন্টে দারুণ শুরু করেছে লিভারপুল।

ম্যাচ শেষে প্যালেস কোচ রয় হজসন বলেছে, ‘আমার হতাশার কারণ হলো, এটা পেনাল্টি ছিল না। এ কারণেই আমার মধ্যে রাগ ও হতাশা জন্মাচ্ছে। ফুটবলে আছি অনেক দিন হয়ে গেল। এটা যদি পেনাল্টি হয়, বলতে হবে, আমি যে ফুটবলকে চিনি, সেটা অনেক বদলে গেছে। সাখো ডিফেন্ডার, ও ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেছে মাত্র। একবারও মনে হয়নি ও ফাউল করতে চেয়েছে। লিভারপুলের ওই গোলে এগিয়ে যাওয়াটা ন্যায্য ছিল না।’

ইয়ুর্গেন ক্লপ অবশ্য এই ডাইভ-বিতর্ক পাশ কাটিয়ে গেলেন। দাবি করলেন, ‘আমি মো-কে এটা নিয়ে পরে কিছু জিজ্ঞেস করিনি। আমি ওটা ভালোভাবে দেখেনি। অবশ্য পেনাল্টিই মনে হয়েছে। যদিও আমার পরিষ্কার ধারণা নেই।’