লিটন রান করতেই চান

ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে কাজ করছেন লিটন। ছবি: বিসিবি
ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে কাজ করছেন লিটন। ছবি: বিসিবি
>প্রায় তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। এখনো দলে থিতু হতে পারেননি লিটন দাস। প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান, কিন্তু সম্ভাবনার ডালপালা ছড়ায়নি প্রত্যাশা অনুযায়ী। দলে নিয়মিত হওয়াটা এখনো বড় চ্যালেঞ্জ লিটনের জন্য।

পরশু নিল ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে আলাদাভাবে সময় কাটাতে দেখা গেল লিটন দাসকে। ব্যাটিং কোচের কাছ থেকে কী শিখছেন বাংলাদেশ ওপেনার? লিটন শুধু জানালেন, ব্যাটিংয়ের কিছু টেকনিক নিয়ে ম্যাকেঞ্জির সঙ্গে কথা হয়েছে।

দক্ষতায় উন্নতির উদ্দেশ্য একটাই, ২২ গজের দুর্দান্ত কিছু করা, ইনিংস লম্বা করা। লিটনের সমস্যাটা এখানেই, কখনো অসাধারণ শুরু করেন, কিন্তু সেটি লম্বা করতে পারেন না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলা ৩৭ ইনিংসটির ১২টিই লিটন আউট হয়েছেন ২০ থেকে ৪০ রানের মধ্যে। এখনো পর্যন্ত ফিফটি পেয়েছেন মাত্র ৪টি। ভালো শুরুর পর লিটনের ইনিংস ‘বড়’ হয় না কেন? ‘যারা বড় বড় ক্রিকেটার তাঁরা ভালো শুরু করতে পারলে ইনিংস লম্বা করে। এখনো বড়দের কাতারে যেতে পারিনি তো, তাই বড় ইনিংস খেলা হচ্ছে না। চেষ্টা করছি ভালো কিছু করার, যেন বড় কিছু করতে পারি।’

ইনিংস বড় করার উপায়ও অজানা নয় লিটনের, ‘আউট হতে একটি বলই যথেষ্ট। কাজ করছি যে কোন শটগুলো নিখুঁত করা যায়। আপনাকে শুধু উইকেটে থাকলে তো হবে না, রানও করতে হবে। আর রান করতে হলে উইকেটে টিকে থাকলেই হবে না, ব্যাটও চালাতে হবে। এ বিষয়গুলোই এখন বিবেচনা করছি যে কোন শটটি খেললে রান পাওয়া যাবে।’

এবার এশিয়া কাপের দলে দুই ওপেনার সৌম্য সরকার নেই, এনামুল হক নেই। বোঝা যাচ্ছে, তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করবেন লিটন। এটিকে বড় সুযোগ হিসেবে নিচ্ছেন তরুণ ওপেনার, ‘এটি একটি ভালো সুযোগ। অনেক দিন ওয়ানডে দলের বাইরে আছি। যদি সুযোগ পাই অবশ্যই ভালো করার চেষ্টা করব।’ সেই ভালোটি কেমন—লিটনের ব্যাখ্যাটা যথারীতি তির্যক, ‘এখন পারফর্ম করার চেয়ে তো ভালো কিছু নেই। আপনারা রান চান, আমিও রান চাই।’

প্রায় তিন বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। এখনো দলে থিতু হতে পারেননি লিটন। প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান, কিন্তু সম্ভাবনার ডালপালা ছড়ায়নি প্রত্যাশা অনুযায়ী। দলে নিয়মিত হওয়ার চ্যালেঞ্জটা উতরে যাওয়ার লক্ষ্য লিটনের, ‘একটি বড় টুর্নামেন্টে যাচ্ছি। আর যদি ওপেনিংয়ে খেলি এখানে ভালো করাটা অবশ্যই অনেক বড় চ্যালেঞ্জিং। চেষ্টা করব নিজের শতভাগ দেওয়ার। সে অনুযায়ী অনুশীলন করছি। ব্যাটিংয়ের কাজও চলছে। দেখা যাক কী করা যায়।’

পাকিস্তান কাল দল দিয়েছে ছয় পেসারকে নিয়ে। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট পাকিস্তানের পেস আক্রমণ তো আছেই, প্রতিটি দলেই ভালো মানের পেসার আছে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা প্রতিপক্ষের পেস আক্রমণ সামলাতে প্রস্তুত সেটিই বললেন লিটন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো এতটা কুইক বোলার নেই (এশিয়া কাপে)। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে যেমন দ্রুত গতির বল খেলে এসেছি সেটির তুলনায় এই টুর্নামেন্টের পেস বোলাররা তেমন কিছুই না। হয়তো ভালো খেলতে পারিনি দক্ষিণ আফ্রিকায়, তবে খেলার অভিজ্ঞতা তো হয়েছে।’

শুধু পেস আক্রমণ কেন, বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রতিপক্ষ দলগুলোয় ভালো মানের স্পিনাররাও আছে। স্পিনারদের কথা বললে সবার আগে আসবে রশিদ খান। আফগান লেগ স্পিনার কতটা মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠেছিলেন, সেটি গত জুনে দেরাদুনে দেখা গেছে। এবার অবশ্য ভিন্ন প্রেক্ষাপট। টুর্নামেন্টটা ৫০ ওভারে হবে বলেই, রশিদকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করেন না লিটন, ‘সে (রশিদ) অনেক ভালো বোলিং করে, বিশ্বে এখন সে দাপট দেখাচ্ছে। তবে আপনাকে এটাও বুঝতে হবে যে এখানে সংস্করণ ভিন্ন। টি টোয়েন্টিতে দ্রুত রান করার তাগিদ থাকে। ওয়ানডে ক্রিকেটে সময় পাওয়া যাবে তাঁকে খেলতে।’