জার্মান মেশিন সচলই আছে

গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে জার্মানি। ছবি: এএফপি
গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে জার্মানি। ছবি: এএফপি
>উয়েফা নেশনস লিগে নিজেদের প্রথম খেলায় গোলশূন্য ড্র করেছে ফ্রান্স ও জার্মানি। বিশ্বকাপের পরে দুই দলেরই এটি প্রথম খেলা।

রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেই থেমে গিয়েছিল জার্মান মেশিন। আর ফরাসি সৌরভ ছড়িয়ে শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছেন দেশমের শিষ্যরা।

উয়েফা নেশনস লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এই দুই দলের লড়াইটা হওয়ার কথা ছিল টানটান উত্তেজনায় ঠাসা। হয়েছেও তাই। তবে সেটা দ্বিতীয়ার্ধে। প্রথমার্ধে একচেটিয়া জার্মানিই বল দখল নিয়ে খেলেছে। গোল না পেলেও জার্মানরা জানিয়ে দিয়েছে, জার্মান মেশিন সচলই আছে। বায়ার্ন মিউনিখের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বল দখলে এগিয়ে থাকা জার্মানরা বুঝিয়ে দিল—একেবারে বিকল হয়ে যায়নি এখনো।

গোলশূন্য ড্র হলেও ম্যাচের শেষদিকে ভালোই উত্তাপ ছড়িয়েছে দুই দল। তবে সুযোগ বেশি পেয়েছে জার্মানি। ফরাসি দুর্গ রক্ষা করেছেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক আরিওলা। দ্বিতীয়ার্ধের শেষের দিকে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে নিজের অভিষেকে দুর্দান্ত কিছু সেভ করে নিশ্চিত গোলের হাত থেকে বাঁচান আরিওলা। বলতে গেলে আরিওলাই রক্ষা করেন ফ্রান্সকে। পুরো ম্যাচে বার কয়েক জার্মানির রক্ষণে হানা দিলেও এমবাপ্পে-জিরু-পগবাদের সামনে বড় কোনো পরীক্ষা দিতে হয়নি নয়্যারকে।

প্রথমার্ধের ৩০ মিনিট বল দখলে এগিয়ে ছিল জার্মানি। বেশ কয়েকবার ফ্রান্সের রক্ষণে আক্রমণ করলেও বল জালে জড়ানোর মতো শট নিতে পারেননি জার্মানির কেউ। এর আগে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই আক্রমণে ওঠে জার্মানি। কর্নারের বিনিময়ে নিজেদের রক্ষা করে ফ্রান্সের রক্ষণ। ম্যাচের ১১তম মিনিটে আক্রমণে ওঠে ফ্রান্স। জার্মানির সীমানায় এসে বোয়েটাংয়ের ফাউলের শিকার হন লুকাস। সুবিধাজনক জায়গা থেকে গ্রিজমানের শটটাও ভালো ছিল। কিন্তু সেটি সহজে ক্লিয়ার করে জার্মান রক্ষণ। ১৯তম মিনিটে গোলের ভালো সুযোগ পান জার্মান স্ট্রাইকার ওয়ের্নার। তাঁর শট আটকে দেন ফরাসি গোলরক্ষক।

এভাবেই ব্যস্ত ছিলেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক আরিওলা। ছবি: এএফপি
এভাবেই ব্যস্ত ছিলেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক আরিওলা। ছবি: এএফপি

এরপর পুরো সময় বল দখল নিয়ে ফ্রান্সের রক্ষণে আক্রমণ চালাতে থাকে জার্মানি। বেশ কিছু ভালো সুযোগও তৈরি করেছিল তারা। এই যেমন—৩৪তম মিনিটে ক্রুসের দুর্দান্ত ক্রস থেকে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন হামেলস। পরের মিনিটে কর্নার কিক থেকে কেউ মাথা ছোঁয়ালেই গোলের দেখা পেত জার্মানি।

পাল্টা আক্রমণে উঠে আসা ফ্রান্স গোলমুখে প্রথম শট নেয় ৩৬তম মিনিটে। জার্মানির ডি-বক্সে কান্তের ক্রস থেকে দুর্দান্ত ভলি করেন ফরাসি স্ট্রাইকার অলিভার জিরু। নয়্যারের নৈপুণ্যে রক্ষা পায় জার্মানি। ০-০ স্কোরলাইন নিয়ে প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মুহূর্তের জন্য মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন জার্মান খেলোয়াড়েরা। তবে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন অলিভার জিরু। ৪৬তম মিনিটে নয়্যারকে একা পেয়েও গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। এমন সুযোগ হাতছাড়া করায় ভাগ্যদেবীও হয়তো মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ফ্রান্স বলার মতো আর সুযোগই তৈরি করতে পারল না, গোলের দেখা পাওয়া তো মেলা দূর! উল্টো জার্মানির আক্রমণ ঠেকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ফরাসিরা। ৬১ থেকে ৬৫; এই পাঁচ মিনিটে গুনে গুনে তিনবার দলকে গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা করেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক আরিওলা।

৬৮তম মিনিটে মুলার ভালো সুযোগ পেলেও তাঁর কাছ থেকে বল কেড়ে নেন ডেম্বেলে। পাল্টা আক্রমণে উঠে এসে এমবাপ্পে ক্ষণিকের জন্য আশার আলো দেখান অতিথিদের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন তিনিও। ৭৫তম মিনিটে জার্মানির কর্নার কিক থেকে দলকে আরও একবার রক্ষা করেন আরিওলা।