আশরাফুলের ফিটনেসে এত উন্নতি!

প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে দূরে থেকেও ফিটনেস ভীষণ উন্নতি করেছেন আশরাফুল। প্রথম আলো ফাইল ছবি
প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে দূরে থেকেও ফিটনেস ভীষণ উন্নতি করেছেন আশরাফুল। প্রথম আলো ফাইল ছবি
>জাতীয় লিগের আগে প্রতিটি দলের খেলোয়াড়ের ফিটনেস পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি। সেটির অংশ হিসেবে আজ সকালে ফিটনেস টেস্ট দিয়েছেন ঢাকা মহানগরের ক্রিকেটাররা। সেখানে ভালো করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল।

কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ বা টুর্নামেন্টের আগে বাংলাদেশ দল যেদিন কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু করে, সেদিনই সাধারণত দৃশ্যটা দেখা যায়। শুধু জাতীয় দলে সীমাবদ্ধ না থেকে বিসিবি চাইছে জাতীয় লিগে খেলা ক্রিকেটারদেরও ফিটনেস পরীক্ষা নিতে। সেটির অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ফিটনেস টেস্ট নেওয়া হয়েছে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা দলের খেলোয়াড়দের। আজ নেওয়া হলো ঢাকা মহানগর ও ঢাকা বিভাগের ক্রিকেটারদের। এই ফিটনেস টেস্টে অসাধারণ করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল।

জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের স্কিল কিংবা ফিটনেস নিয়ে ভালোভাবে কাজ করা একটু কঠিনই। জাতীয় দলের বাইরে থাকলে বিসিবির সুযোগ-সুবিধা সব সময় মেলে না। আশরাফুলের জন্য তো আরও কঠিন। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অপরাধে পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে নিষিদ্ধ থাকায় দীর্ঘদিন তাঁকে স্কিল ও ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে হয়েছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের পর প্রায় পাঁচ মাস প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে দূর আছেন। এরপরও তাঁর ফিটনেস এত ভালো!

আজ সকালে বিসিবির ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদার, ইফতেখারুল ইসলাম ও সিজারের অধীনে বিপ টেস্ট দিয়েছেন ঢাকা মহানগরের ক্রিকেটাররা। মহানগরের সবচেয়ে ভালো করেছেন পেসার রকিবুল, পেয়েছেন ১২.৪। এরপরই আছেন আশরাফুল, বিপ টেস্টে পেয়েছেন ১১.৪। প্রথম দিনে বিপ টেস্টে যেখানে ১০ করলেই যথেষ্ট মনে করা হয়, সেখানে ১১.৪ অবশ্যই ভালো। আশরাফুলই জানালেন, ধারাবাহিক খেলার মধ্যে থাকা তাঁর সতীর্থ সৈকত আলী ও জাবিরের স্কোর তাঁর সমান। শামসুর রহমান (১১.২) ও মার্শাল আইয়ুব (১০.৭) তাঁর পেছনে পড়েছেন।

লম্বা বিরতির পর ফিটনেস টেস্টে এত ভালো স্কোর মোটেও সহজ নয়। আশরাফুলের জন্য কাজটা আরও কঠিন, ভোজনরসিক হিসেবেও যথেষ্ট ‘খ্যাতি’ আছে তাঁর! কীভাবে ফিটনেসে উন্নতি আনলেন সেটিই আজ দুপুরে সংবাদমাধ্যমকে বলছিলেন আশরাফুল, ‘জাতীয় লিগ খেলব বলে গত তিন মাস ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। চেয়েছি আমার ফিটনেস যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মানের হয়। মানসিকভাবে আপনাকে অনেক শক্তিশালী হতে হয়, ফিটনেস নিয়ে অনুশীলনও করতে হয়। গত আড়াই মাসে ভাত খাওয়াটা একেবারে কমিয়ে দিয়েছি। শুধু ডায়েট করলেই হবে, এটা মনে করি না। ফিটনেস যদি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিতে হয় তাহলে সেভাবে অনুশীলন করতে হবে। জিম-রানিংয়ের সঙ্গে সবজি বা অন্যান্য খাবার খাচ্ছি। খেতে পছন্দ করি, কিন্তু এবার অনেক নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

ফিটনেস নিয়ে আশরাফুলের কঠোর পরিশ্রম করার ভাবনাটা এসেছে গত ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের পর থেকেই। লিগের শুরুতে রান পাচ্ছিলেন না। ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। বন্ধু মাশরাফি বিন মুর্তজা তাঁকে পরামর্শ দেন ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে। তাতে সাময়িক ফলও মিলেছিল। লিগের শেষ দিকে এসে পাঁচটা সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। তবে পাঁচ সেঞ্চুরির পর তাঁর ব্যাটিং ধরন নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে সমালোচিত হয়েছেন ৭৪.১৩ স্ট্রাইকরেটের কারণে। আশরাফুল মনে করেন ফিটনেসে উন্নতি আনতে পারলে স্ট্রাইকরেট ৭৪ থেকে অনায়াসে ৯০ নেওয়া সম্ভব। এ ভাবনা থেকে গত তিন মাসে তিনি ওজন কমিয়েছেন ৮ কেজি। আগে তাঁর ওজন ছিল ৭৩ কেজি, এখন সেটি ৬৫। এখানেই থামতে চান না, আশরাফুল চাইছেন ফিটনেসে আরও উন্নতি আনতে, ‘এখন আমরা প্রায় সবাই সচেতন। আজ ১১.৪ এসেছে, বিপ টেস্টে যেটি খুবই ভালো। আশা করি সামনে আরও উন্নতি হবে।’