এশিয়া কাপের এল ক্লাসিকোর শুরু ঢাকা থেকেই

ঢাকার সেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দৃশ্য। রানআউট হয়ে গেলেন আবদুল কাদির। ছবি: দ্য হিন্দুর সৌজন্যে
ঢাকার সেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের দৃশ্য। রানআউট হয়ে গেলেন আবদুল কাদির। ছবি: দ্য হিন্দুর সৌজন্যে
>

এশিয়া কাপ ইতিহাসের প্রথম ভারত-পাকিস্তান লড়াই হয়েছিল এই ঢাকাতেই। ১৯৮৮ সালের ৩১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সেই লড়াই বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম ভারত-পাকিস্তান লড়াইও।

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে বাংলাদেশ। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই প্রতিযোগিতায় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর প্রথম লড়াইটি যে হয়েছিল বাংলাদেশের মাটিতেই। সে সময়ের ঢাকা স্টেডিয়ামে (আজকের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) ভারত ও পাকিস্তানের সেই ‘ক্রিকেট যুদ্ধ’ হয়েছিল আজ থেকে ৩০ বছর আগে, ১৯৮৮ সালের ৩১ অক্টোবর।

এশিয়া কাপ ক্রিকেটের প্রথম ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে জয় পেয়েছিল ভারত। ২৬ বল বাকি থাকতে দিলীপ ভেংসরকারের দলের জিতেছিল ৪ উইকেটে। তবে সে ম্যাচটি একেবারেই মন ভরাতে পারেনি ঢাকার দর্শকদের। প্রথমে ব্যাটিং করে পাকিস্তান গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৪২ রানে। কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, নভজোৎ সিং সিধু, মহিন্দর অমরনাথ ও কপিল দেবদের নিয়ে গড়া শক্তিশালী ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপকে খুব বেশি পরীক্ষার মুখে সেদিন দাঁড় করাতে পারেনি ওয়াসিম আকরাম, আবদুল কাদিরদের পাকিস্তানি বোলিং। সে ম্যাচ পাকিস্তানিদের প্রায় একাই ‘শেষ’ করে দিয়েছিলেন আরশাদ আইয়ুব নামের এক ভারতীয় অফ স্পিনার। ২১ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। এশিয়া কাপে সেটিই কোনো ভারতীয় বোলারের এখন পর্যন্ত একমাত্র ৫ উইকেট-কীর্তি!

টসে হেরে ব্যাটিং করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু শুরুটা তাদের মন্দ হয়নি। রমিজ রাজা ও মঈনুল আতিকের ওপেনিং জুটি ৬২ রান তুলে শঙ্কা জাগিয়েছিল ভারতীয় শিবিরে। কিন্তু ৬২ রানে আরশাদের বলে রমিজ আর ৯১ রানের মাথায় বাঁহাতি স্পিনার মনিন্দর সিং আতিককে বোল্ড করার পর ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। এরপর আরশাদ অফব্রেকে একে একে তুলে নেন আমির মালিক, শোয়েব মোহাম্মদ, নাভিদ আনজুম ও ওয়াসিম আকরামকে। ইজাজ আহমেদ ও হাফিজ সাঈদকে ফেরান কপিল দেব। আবদুল কাদির হন রানআউট। পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রান আসে মঈনুল আতিকের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া রমিজ রাজা ৩৩, সেলিম মালিক ১৯ আর ইজাজ করেন ১৪।

জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ভারত হারিয়েছিল সিধুকে। কিন্তু মহিন্দর অমরনাথের ১২২ বলে ৭৪, কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তের ২৩ আর মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের ১৫ রানে ভারত জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ৪০.৪ ওভারেই।

ভারত-পাকিস্তানের সেই ম্যাচ দেখতে সেদিন ঢল নেমেছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। ভোর থেকেই ঢাকার জনস্রোত সেদিন ছিল স্টেডিয়ামমুখী। হাজার ৫০ দর্শক স্টেডিয়ামের ভেতর প্রবেশ করতে পারলেও বাইরে অপেক্ষায় ছিল হাজারো মানুষ। কিন্তু এশিয়া কাপের ইতিহাসের প্রথম ভারত-পাকিস্তান লড়াই এক আরশাদ আইয়ুবের ৫ উইকেট-কীর্তি ছাড়া মনে রাখার মতো কিছুই উপহার দিতে পারেনি ঢাকার দর্শকদের।