'বেঞ্চে'র খেলোয়াড়েই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

নেপালি ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন সিরাত জাহান স্বপ্না। ছবি: বাফুফে
নেপালি ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন সিরাত জাহান স্বপ্না। ছবি: বাফুফে
>

ভুটানে চলমান অনূর্ধ্ব–১৮ মেয়েদের সাফে নেপালকে ২–১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

নেপালি দুই সেন্টার ব্যাক কি জানত না সিরাত জাহান স্বপ্নার গতির কথা! পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলা দেখে থাকলে অজানা থাকার কথা নয়। হয়তো জানেও। কিন্তু স্বপ্না যে চোখের পলকে দ্রতগতিতে দুমড়েমুচড়ে দিতে পারে, তা হয়তো ভাবনাতেই ছিল না নেপালিদের।

প্রতি–আক্রমণে নিজেদের অর্ধে থেকে লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন শামসুন্নাহার। নেপালি দুই সেন্টার ব্যাকের পেছন থেকে দৌড়ে গিয়ে গোল পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে আসা গোলরক্ষকের সামনে থেকে টোকা দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন স্বপ্না। আহ, কী অবিশ্বাস্য গতির সঙ্গে প্রতিপক্ষকে ছিটকে শেষ পর্যন্ত নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখে জালে বল রাখা! ইউটিউবে বারবার সার্চ দিয়ে দেখার মতো এক গোল। ১৬ মিনিটে স্বপ্নার এমন দুর্দান্ত গোলের সন্ধ্যায় নেপালকে ২–১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে অনূর্ধ্ব–১৮ মেয়েদের সাফের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে যে পাকিস্তানকে ১২–০ গোলে হারিয়েছিল নেপাল। সে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় ছিল ১৭–০ গোলে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার শক্তিশালী দুটি দলই। কিন্তু একাদশ নির্বাচনে নিয়মিত বেশকিছু খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রেখে সাহসেরই পরিচয় দিয়েছেন কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন। বলা যায় বেঞ্চের খেলোয়াড়দের খেলিয়েই জিতেছে বাংলাদেশ।

স্কোর বোর্ডে ২–১ স্কোরলাইন দেখে বোঝার উপায় নেই ম্যাচের নাটাইটা পুরোপুরিই ছিল বাংলাদেশের হাতে। শামসুন্নাহার পেনাল্টি মিস না করলে ব্যাবধানটা আরও বড় হতে পারত। নেপালের মেয়েরা শারিরীকভাবে শক্তিশালী হওয়ায় কিছুটা লড়াইয়ের ঝাঁজ ছিল অবশ্যই। কিন্তু বল দখলে রাখা ও পরিকল্পিত আক্রমণে স্বপ্না–কৃষ্ণারা ছিল অনেক এগিয়ে। স্বপ্নার মতো কৃষ্ণার গোলেও ছিল পাক্কা মুনশিয়ানার পরিচয়। ৩২ মিনিটে সেটাও প্রতি–আক্রমণ থেকে মাত্র দুই টাচে। নেপালি খেলোয়াড়ের শট বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমার হাতে গেলে সেখান থেকে লম্বা কিক। অ্যাটাকিং থার্ডে বল পড়লে নেপালের ডিফেন্ডারদের পেছন থেকে বের হয়ে এসে বক্সে ঢুকে টোকা দিয়ে জালে। গোলরক্ষক হতে কৃষ্ণা–গোলের আগ পর্যন্ত টাচ হলো মাত্র দুটি।

২–০ গোলে জয়ের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে ৯২ মিনিটে ব্যাবধান কমিয়েছেন নেপালের রাশ্মি কুমার। শেষ মুহূর্তে যা শুধু হারের ব্যবধানটাই কমিয়েছে মাত্র। আজ হারলেও গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে গেছে নেপালও। ৫ অক্টোবর তাঁদের প্রতিপক্ষ ভারত। একই দিনে স্বাগতিক ভুটানের বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামবে লাল-সবুজরা।