৩৭ বছর পর ইরানের মেয়েরা ফুটবল মাঠে

৩৭ বছর পর এমন কিছু দেখা গেল ইরানের কোনো স্টেডিয়ামে। ছবি:এএফসি
৩৭ বছর পর এমন কিছু দেখা গেল ইরানের কোনো স্টেডিয়ামে। ছবি:এএফসি

ইরানের স্টেডিয়ামগুলো ভুলেই গিয়েছিল এমন দৃশ্যের কথা। গ্যালারির এক প্রান্ত থেকে নারী দর্শকের কণ্ঠ ভেসে আসা, দলের গোলে আনন্দে চিৎকার করা, পতাকা নাড়িয়ে উল্লাস করা। ফুটবল মাঠে যে এমন কিছু হতে পারে, সেটা হয়তো জানা নেই ইরানের নতুন অনেক স্টেডিয়ামেরই। কীভাবে জানবে, ১৯৮১ সাল থেকেই যে ফুটবল স্টেডিয়ামে নিষিদ্ধ ছিলেন নারীরা। গত মঙ্গলবার বলিভিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ইরান জাতীয় দল। নারী দর্শকের উপস্থিতিকে জয় দিয়ে উদ্‌যাপন করেছে ফুটবল দল।

গতকাল বলিভিয়ার বিপক্ষে তেহরান স্টেডিয়ামে খেলতে নেমেছিল ইরান। আলিরেজা জাহানবখশ ও মেহদি তোরাবির গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছে স্বাগতিকেরা। তবে এ জয়ের চেয়েও গুরুত্ব পেয়েছে গ্যালারিতে থাকা ১০০ নারীর উপস্থিতি। সত্তরের দশকের শেষ দিকে ইসলামিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই স্টেডিয়ামে নারীদের উপস্থিতি নিষিদ্ধ হতে থাকে। ১৯৮১ সালের পর থেকে তো কোনো নারী স্টেডিয়ামেও ঢুকতে পারেননি। এরপর যে নারীরা মাঠে গিয়ে খেলার স্বাদ নিয়েছেন, তারা সবাই পুরুষ সেজে সেখানে গিয়েছেন, শাস্তির ঝুঁকি মাথায় নিয়েই। অথচ দেশের বাইরে দলের খেলাতে উপস্থিত থাকেন অনেক নারী দর্শক। রাশিয়া বিশ্বকাপেও গ্যালারিতে উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল ইরানি মেয়েদের।

রাষ্ট্রীয় সংস্থা আইএলএনএ জানিয়েছে, খেলোয়াড়দের পরিবারের লোকজনই মাঠে ঢোকার এ দুর্লভ সৌভাগ্যের স্বাদ পেয়েছে এবার। অনেকের ধারণা, এ ম্যাচ দিয়েই ধীরে ধীরে নারীর সম অধিকারের পথে হাটতে শুরু করবে দেশটি। কিছুদিন আগে স্থানীয় ভলিবল ও বাস্কেটবল ম্যাচেও নারী দর্শকেরা প্রবেশের অনুমতি পেয়েছেন। কিন্তু সবাই এতে সন্তুষ্ঠ নন। ব্রাসেলসে অবস্থান নেওয়া নারী অধিকারকর্মী দারিয়া সাফানি দাবি করেছেন ‘এসব ধোঁকাবাজি’, মানুষের সঙ্গে প্রহসন করছে ইরানি কর্তৃপক্ষ, ‘যত দিন মেয়েরা টিকিট কিনতে পারবে না, স্টেডিয়ামের নিষেধাজ্ঞা আসলে তত দিনই থাকবে। ভলিবলেও তারা এটা করেছে। অধিকারকর্মীদের চাপে পড়ে তারা কিছু নারী বেছে নেয় খেলা দেখার জন্য। এটা একটা চাল মাত্র।’