লাঞ্চের ঢেকুর ওঠার আগেই ম্যাচ শেষ করল পাকিস্তান

দুর্দান্ত আব্বাসের সামনে গুঁড়িয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ছবি: এএফপি
দুর্দান্ত আব্বাসের সামনে গুঁড়িয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। ছবি: এএফপি
>আবুধাবি টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৭৩ রানের ব্যবধানে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। অজিদের বিপক্ষে পাকিস্তানের এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়

জিততে হলে গড়তে হবে বিশ্ব রেকর্ড। ব্যাটিং করতে হবে আরও দুই দিন। মানে ন্যূনতম ১৮০ ওভার। প্রথম টেস্টে প্রায় ১৪০ ওভার ব্যাটিংয়ের আত্মবিশ্বাস ছিল অস্ট্রেলিয়ার। আবার এই আবুধাবি টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১৪৫ রানে গুটিয়ে যাওয়ার মতো চোখরাঙানিও ছিল। শেষ পর্যন্ত এই চোখরাঙানিই সত্য হলো। ৫৩৮ রান তাড়া করতে নেমে ১৬৪ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়া। সেটিও আবার আজ চতুর্থ দিনে লাঞ্চের ঢেকুর ওঠার আগেই।

চতুর্থ ইনিংসে ৪৯.৪ ওভার ব্যাটিং করেছে অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে তৃতীয় দিনেই তাঁরা ব্যাটিং করেছে ১২ ওভার। স্কোর বোর্ডে উঠেছিল ১ উইকেটে ৪৭। আজ চতুর্থ দিনে বাকি ৯ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া তুলতে পেরেছে ১১৭। ৩৭৩ রানের এই হারকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ বলাই যায়। টেস্টে পাকিস্তানের কাছে এটাই অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার। চার বছর আগে এই আবুধাবিতেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৫৬ রানে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। রানসংখ্যায় টেস্টে পাকিস্তানের এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়।

অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসেও মোহাম্মদ আব্বাসের দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয়টা বেশ দ্রুতই তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। লাঞ্চে যাওয়ার আগেই জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছিল তারা। অস্ট্রেলিয়ার স্কোর তখন ৭ উইকেটে ১৫৫। হার ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার; মধ্যাহ্ন ভোজনের খাবারটা পেটে ঠিকমতো হজম হওয়ার আগেই তা দেখতে পেল অস্ট্রেলিয়া। লাঞ্চের পর তাঁদের ইনিংস টিকেছে মাত্র ৪.৪ ওভার। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এ নিয়ে ১-০ ব্যবধানে জিতল পাকিস্তান। দুবাইয়ে প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছিল।

অ্যারন ফিঞ্চ ও ট্রাভিস হেড মিলে কাল দিনের শেষ ঘণ্টায় লড়াই করে তবু একটু আশার ঝলকানি দেখিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ঝলকানি আজ নেমেছে বজ্র হয়ে! তা নামিয়েছেন মোহাম্মদ আব্বাস। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া এই পেসার দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচ ও সিরিজ–সেরা আব্বাস আরব আমিরাতের মাটিতে প্রথম বোলার হিসেবে এক টেস্টে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন।

সকালের সেশনের শুরুতেই নিজের পরপর দুই ওভারে হেড (৩৬) ও মিচেল মার্শকে (৫) ফিরিয়ে জয়ের পথটা সুগম করেছিলেন আব্বাস। নিজের পরের ওভারে তিনি ফিরিয়েছেন ফিঞ্চকেও (৩১)। টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার ভাঙার পর পাকিস্তানের অপেক্ষা ছিল লেজটুকু মুড়িয়ে দেওয়ার। মিচেল স্টার্ক, পিটার সিডল আর জন হল্যান্ডকে ফিরিয়ে সেই দায়িত্ব সেরেছেন ইয়াসির শাহ। অস্ট্রেলিয়া কতটা ভঙ্গুর ব্যাটিং করেছে তা সামান্য একটি কথায়ই বুঝিয়ে দেওয়া যায়—দুই দিন ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জ নেওয়া দলটির এই ইনিংসে কোনো ফিফটি নেই! সর্বোচ্চ ৪৩ রান মারনাস ল্যাবুশেইনের।