বিশ্বকাপে কোহলিদের চাই ট্রেন, স্ত্রী-বান্ধবী আর কলা!

সতীর্থদের হয়ে বোর্ডের কাছে কিছু দাবি পেশ করেছেন বিরাট কোহলি। ছবি; এএফপি
সতীর্থদের হয়ে বোর্ডের কাছে কিছু দাবি পেশ করেছেন বিরাট কোহলি। ছবি; এএফপি
>২০১৯ বিশ্বকাপের পুরো সময় স্ত্রী-বান্ধবীদের সঙ্গ চেয়েছে বিরাট কোহলির দল। এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে যেতে বাসের বদলে তাঁরা ট্রেন চেয়েছেন—যেখানে একটি বগি পুরোপুরি তাঁদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। আর বিশ্বকাপের পুরো সময় দলের শিবিরে কলার মজুত রাখার আবেদনও করেছে ভারতীয় দল

বিদেশে কোনো সফর যদি হয় তিন মাসের, তাহলে পুরো সময়েই স্ত্রী কিংবা বান্ধবীদের সঙ্গ চেয়েছিল বিরাট কোহলির দল। কিছুটা কালক্ষেপণের পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) তাঁদের এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। তবে শর্ত রয়েছে। সিরিজ শুরুর ১০দিন পর খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগ দিতে পারবেন তাঁদের স্ত্রী-বান্ধবীরা। আবদার মেটানোর দ্বার খোলা থাকায় কোহলিরা সুযোগটির সদ্ব্যবহারে পিছপা হননি। বোর্ডের কাছে আরও কিছু চাহিদা জানিয়েছেন তারা।

ইংল্যান্ডে আগামী বছরের ৩০ মে থেকে শুরু হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানিয়েছে, কোহলিরা বিশ্বকাপের পুরো সময় স্ত্রী-বান্ধবীদের সঙ্গ পাওয়ার আবেদন করেছেন বোর্ডের কাছে। অধিনায়ক কোহলির নেতৃত্বেই বিসিসিআইয়ের কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস (সিওএ) রিভিউ মিটিংয়ে এই আবেদন জানিয়েছে খেলোয়াড়েরা। শুধু তাই নয়, টুর্নামেন্টে চলাকালীন এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে যেতে বাসের বদলে ট্রেনের ব্যবস্থা করার আবেদনও করা হয়েছে। আর রয়েছে কলা!

কলা? হ্যাঁ, কোহলিদের আবেদন, ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ চলাকালীন ভারতীয় শিবিরে যেন প্রচুর কলা মজুত থাকে। অদ্ভুত এক আবেদন। কিন্তু কেন? এ প্রসঙ্গে বোর্ডের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম, ‘ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় দলের পছন্দের ফল সরবরাহ করতে পারেনি ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস এমন আবেদনে বিস্মিত হয়ে বলেছে, বিসিসিআইয়ের খরচে টিম ম্যানেজারকে কলা কিনে দেওয়ার কথা বলা উচিত ছিল খেলোয়াড়দের। এ ছাড়াও ভালো জিম আছে এমন হোটেল বুকিং করা আর স্ত্রী-বান্ধবীদের সঙ্গে খেলোয়াড়েরা কতটুকু সময় কীভাবে কাটাবে—এসব নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরব্যাপী ইংল্যান্ড সফরে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজ হেরেছে ভারত। হায়দরাবাদে এই সফরের মূল্যায়ন-বৈঠকে বসেছিল বিসিসিআইয়ের কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস। তাঁদের কাছে এসব দাবি মেটানোর আবেদন করেছেন খেলোয়াড়েরা। নিরাপত্তার দিকটা ভেবে খেলোয়াড়দের ট্রেনের আবেদনে কিছুটা অবাক হয়েছে বিসিসিআই। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া বোর্ডের এই সিওএ কমিটি প্রাথমিকভাবে ভেবেছিল, খেলোয়াড়দের স্ত্রী ও বান্ধবীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু খেলোয়াড়দের দাবি, ট্রেনের ব্যবস্থা করলেই তো ঝামেলা চুকে যায়!

সিওএ কমিটি তাঁদের যুক্তি দেখিয়েছে, অতীতে স্ত্রী-বান্ধবীদের সঙ্গে আলাদা কোনো গাড়িতে মাঠে গিয়েছেন খেলোয়াড়েরা। বোর্ড এই চর্চা বন্ধ করতে চায় কারণ তাতে দলীয় সংহতি নষ্ট হয় বলে মনে করছে বিসিসিআই। আর তাই শুরুতে খেলোয়াড়দের এসব দাবিতে কান দেয়নি সিওএ। কিন্তু বিসিসিআই সংশ্লিষ্ট সেই সূত্র জানিয়েছেন, ‘ইংল্যান্ড দল ট্রেনে ভ্রমণ করে—এই কথাটা বোর্ডকে জানিয়েছেন কোহলি। ট্রেনের গোটা একটি বগি নিজেদের জন্য সংরক্ষিত চায় খেলোয়াড়েরা। সিওএ কিছুটা দুশ্চিন্তা নিয়েই প্রথমে ভেবেছিল, ট্রেনে ভ্রমণ করলে ভারতীয় ভক্তদের পাল্লায় পড়তে হবে। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁরা রাজি হয়েছে এই শর্তে—অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটলে সিওএ কিংবা বিসিসিআই দায়ী থাকবে না।’

আগে বিদেশে কোনো সিরিজে মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য স্ত্রী-বান্ধবীদের সঙ্গ পেতেন খেলোয়াড়েরা। সিওএ রিভিউ কমিটির কাছে নিয়মটি শিথিল করার আবেদন জানিয়েছেন কোহলি। কমিটি বলেছে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দলের খেলোয়াড়দের আলাদা করে লিখিত আবেদন করতে হবে।