মিরপুরকে দুবাই বানাতে চায় জিম্বাবুয়ে

>
১২০ ওভার ব্যাটিং করার মিশনে জিম্বাবুয়ে। ছবি: প্রথম আলো
১২০ ওভার ব্যাটিং করার মিশনে জিম্বাবুয়ে। ছবি: প্রথম আলো

এই ম্যাচ বাঁচাতে হলে জিম্বাবুয়েকে ব্যাট করতে হবে ১২০ ওভার। ৩০ ওভার এরই মধ্যে পাড়ি দিয়েছে তারা। বাকি আছে আরও ৯০। জিম্বাবুয়ে পারবে?

উসমান খাজা কে হবেন? ব্রেন্ডন টেলর, নাকি শন উইলিয়ামস! জিম্বাবুয়ে এখন যে স্বপ্ন দেখছে, তাতে যে একজন খাজা ভীষণ দরকার তাদের। এই টেস্টটা ড্র করাতে পারলে ১৭ বছর পর বিদেশের মাটিতে সিরিজ জিতবে জিম্বাবুয়ে। নিজেদের মাটিতেও টেস্ট সিরিজ জয়ের স্মৃতিতে ৭ বছরের ধুলো। কাল যে জিম্বাবুয়ে কচ্ছপ-কামড় দিয়ে দিনটা পার করে দিতে চাইবে, বলাই বাহুল্য। জিম্বাবুয়ে আশাবাদী, তারা পারবে মিরপুরকে দুবাই বানিয়ে দিতে, প্রশ্ন একটাই, খাজা হবেন কে!

সামনে পড়ে আছে ৯০ ওভার। এশিয়ায় পঞ্চম দিনের উইকেটে কাজটা কঠিন। কিন্তু জিম্বাবুয়ের সামনে প্রেরণা হয়ে আসছে এক মাস আগের দুবাই টেস্ট। অস্ট্রেলিয়াকে ৪৬২ রানের অসম্ভব এক লক্ষ্য দিয়ে চতুর্থ দিনের লাঞ্চ বিরতির কিছু পরেই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় পাকিস্তান। ৮৭ রানে ৩ ব্যাটসম্যানকে হারানোর পরও শেষ পর্যন্ত ১ বল কম ১৪০ ওভার পাড়ি দিয়ে টেস্টটা ড্র করে অস্ট্রেলিয়া। ৫২২ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৪১ রানের প্রতিরোধ গড়া এক ইনিংস খেলেন উসমান খাজা।

আজ বাংলাদেশ ইনিংস ঘোষণার আগেই ঘুরে ফিরে এল দুবাই টেস্টের প্রসঙ্গ। স্মৃতিটা টাটকা বলেই হয়তো। টিভি পর্দায় বেশ কয়বার ভেসে উঠল সেই ম্যাচের স্কোরকার্ড। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনেও আসা কোচ লালচাঁদ রাজপুতের মুখে সেই ম্যাচের কথা, ‘ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। কী হবে কেউ জানে না। একটা বা দুটো জুটি হয়ে গেলেই কিন্তু আমরা ম্যাচ বাঁচাতে পারব। অসম্ভব কিছু না। এই তো কদিন আগেও পাকিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ বাঁচিয়ে দিয়েছিল। খাজা সারা দিন ধরে ব্যাটিং করেছে। আমরাও আশা করি এমন কেউ একজন দাঁড়িয়ে যাবে পুরো এক সেশন ব্যাট করবে। মাত্রই তো তিনটা সেশনের ব্যাপার।’

এ জন্য দলের ওপর বাড়তি কোনো চাপও দিচ্ছেন না। রাজপুত যে জানেন, চাপ নিলেই সর্বনাশ। কিন্তু বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয়ের এমন বিরল সুযোগের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে জিম্বাবুয়ে কি পারবে নিজেদের স্নায়ু ধরে রাখতে? রাজপুত বলছেন, ‘আমাদের ইতিবাচক থাকতে হবে, এটাকে স্রেফ আরেকটি ম্যাচ হিসেবে নিতে হবে। ম্যাচ ড্র করলে সিরিজ জিতব এই ভাবনা মাথায় আনা যাবে না। তাহলে বাড়তি চাপ তৈরি হবে। ঠান্ডা মাথায় মাঠে নেমে নিজের দক্ষতা দেখিয়ে দিনটা পার করে দিতে হবে। ছোট ছোট সেশনে ভাগ করে নিতে হবে। প্রথম ঘণ্টা পার করে দিলে এরপর আর এক ঘণ্টায় লাঞ্চ। তখন আবার এক ঘণ্টার জন্য মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। এভাবে ঘণ্টা ধরে ধরে খেললে ভালো কিছুই হবে।’

ভালো কিছু মানে মিরপুরকে দুবাই বানিয়ে ফেলা। জিম্বাবুয়েকে যে ব্যাট করতে হবে ১২০ ওভার। ৩০ ওভার পাড়ি দিয়েছে তারা, বাকি আরও ৯০। জিম্বাবুয়ে চতুর্থ ইনিংসে অন্তত ১০০ ওভার ব্যাট করেছে দুইবার। ১০০ ও ১০৮ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করার প্রথম ঘটনাটি ১৯৯৬ সালে, পরেরটা ২০১১তে। চতুর্থ ইনিংসে ৯০ কিংবা এর বেশি ব্যাট করার নজির তাদের আছে আর তিনবার।