ব্রাভোদের টাকা দিতে চেয়েছিল ভারতীয় বোর্ড

২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ বয়কট করতে চেয়েছিলেন ব্রাভোরা। ফাইল ছবি
২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ বয়কট করতে চেয়েছিলেন ব্রাভোরা। ফাইল ছবি
>
  • ২০১৪ সালে উইন্ডিজ খেলোয়াড়দের সিরিজ খেলার জন্য অর্থ দিতে চেয়েছিল বিসিসিআই
  • রাত ৩ টায় শ্রীনিবাসন ব্রাভোকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন অন্যদের রাজি করাতে
  • ব্রাভোর দাবি তাদের বোর্ড না বুঝলেও বিসিসিআই খেলোয়াড়দের সমস্যা বুঝতে পেরেছিল

ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে আর ডোয়াইন ব্রাভোকে দেখার সুযোগ নেই। বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলেই আপাতত সময় পার করছেন এই অলরাউন্ডার। অথচ এক সময় তাঁকে ছাড়া সীমিত ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশ ভাবা যেত না। তেমনই এক সময়ের কথা জানিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন ব্রাভো। এই অলরাউন্ডারের দাবি ২০১৪ সালে ভারতে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে অস্বীকৃতি জানানো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটারদের অর্থ দিতে চেয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে দর-কষাকষি ব্যর্থ হওয়ার পর ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে খেলতে চাননি খেলোয়াড়েরা। এমন অবস্থায় রাত তিনটায় বিসিসিআই সভাপতি এন শ্রীনিবাসন তাঁকে খেলার ব্যাপারে রাজি করান। ব্রাভোও সতীর্থদের কাছ থেকে ওয়ানডে সিরিজে খেলার সম্মতি আদায় করেন। কিন্তু চতুর্থ ওয়ানডের মাঝপথে উইন্ডিজ বোর্ড বিসিসিআইকে জানিয়ে দেয়, তারা সিরিজের বাকি অংশ খেলবে না। কারণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছে।

সফরের মাঝপথে এভাবে সিরিজ বাতিল হওয়ায় বড় অঙ্কের ক্ষতির সামনে পড়ে ভারতীয় বোর্ড। তবে ব্রাভো বলছেন এমন অবস্থায়ও বিসিসিআই উইন্ডিজ ক্রিকেটারদের সমস্যা বুঝতে পেরেছিল, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। ওরা সমস্যাটা বুঝতে পেরেছিল। কারণ, ওরা আমাদের সমর্থন করছিল। এমনকি আমরা যে অর্থ হারাচ্ছি (চুক্তি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায়), সেটাও দিতে চেয়েছে তারা।’ ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর রেডিও স্টেশন আই নাইনটি ফাইভ পয়েন্ট ফাইভকে ব্রাভো তাদের বিস্ময়ের কথাও জানিয়েছেন, ‘আমরা অবাক হয়ে বলেছি, “আমরা তোমাদের অর্থ চাই না।” আমরা চাই, আমাদের বোর্ড চুক্তি সংক্রান্ত ঝামেলার সমাধান করুক।’

ভারতীয় বোর্ডের এমন সহানুভূতিই ওই সময়ে ক্রিকেটারদের খেলায় মনোযোগ দিতে সাহায্য করেছিল বলে জানাচ্ছেন ব্রাভো, ‘বিসিসিআই অনেক সহানুভূতিশীল ছিল। এই কারণেই আমাদের অধিকাংশই খেলতে পারছিল, কোনো বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়নি।’

৩৫ বছর বয়স্ক ব্রাভো গত অক্টোবরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিয়েছেন। এ কারণেই হয়তো ২০১৪ সালের সেই সিরিজের বাকি ঘটনাও অকপটে জানাতে পারছেন ব্রাভো, ‘আমার এখনো মনে আছে, প্রথম ম্যাচের আগে বলেছিলাম আমরা খেলতে পারব না। রাতের তিনটায় বিসিসিআইয়ের প্রধান, আগের জনের কথা বলছি শ্রীনিবাসন একটা মেসেজ পাঠালেন, প্লিজ মাঠে নামুন।’

‘আমি তাঁর কথা শুনলাম এবং ভোর ছয়টায় ঘুম থেকে উঠে দলের সবাইকে বললাম, “আমাদের খেলতে হবে।” দলের সবাই খেলার বিপক্ষে ছিল। সবাই ভেবেছিল আমি চাপে ভেঙে পড়েছি এবং হার স্বীকার করে নিয়েছি।’

এর পরের সিদ্ধান্ত পুরো দল মিলেই নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্রাভো, ‘সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি কী করব। সবার কথা আলাদাভাবে শুনেছি। একজন বাদে বাকি সবাই একটি কাগজে সই করেছিলাম, সবার সিদ্ধান্ত ছিল সফর থেকে ফিরে আসার। কিন্তু আমরা সফর ফেলে আসিনি। আমরা বেশ কয়বার ডব্লুআইপিএ সভাপতি (ওয়েভেল হাইন্ডস) এবং ক্রিকেট সভাপতির (ডেভ ক্যামেরন) সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা হুমকি দিয়েছিলাম, প্রথম ম্যাচ খেলব না, কিন্তু খেললাম না। দ্বিতীয় ম্যাচের আগেও না খেলার হুমকি দিয়েছি, কিন্তু সেটাও খেললাম।’

বোর্ডের আচরণে অসন্তুষ্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল নিজস্ব উপায়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল চতুর্থ ম্যাচে, ‘ওই ম্যাচে আমরা সবাই মাঠে গেলাম (ব্রাভোর সঙ্গে টস করার সময় দলের সবাই গিয়েছিলেন), এটা একটা বার্তা ছিল। একটা সংকেত ছিল, তাদের জানাতে চেয়েছি যা হচ্ছে এতে আমরা খুশি নই।’