বিপদের ত্রাতাকেই দাম দেয় না বার্সা!

অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে বদলি নেমেই পয়েন্ট বাঁচিয়েছেন ডেম্বেলে। ছবি: এএফপি
অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে বদলি নেমেই পয়েন্ট বাঁচিয়েছেন ডেম্বেলে। ছবি: এএফপি
>অ্যাটলেটিকোকে নিয়ে লিগে চারটি ম্যাচে বার্সাকে জয় বা ড্র এনে দেওয়া গোল করেছেন ফ্রেঞ্চ উসমান ডেম্বেলে। তাঁর ৪ গোল বার্সেলোনাকে এনে দিয়েছে ৭ পয়েন্ট। বার্সেলোনা স্প্যানিশ সুপার কাপও জিতেছে ডেম্বেলের গোলে

‘চার মিনিট।’—ম্যাচে তাঁর দলের কমতিটা কী ছিল জানাতে ডিয়েগো সিমিওনের উত্তর। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ কোচের ঠোঁটে তখন চাপা হাসি, মনে নিশ্চিত আফসোস।

আফসোস, আট বছর পর লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে প্রথম জয়টা আসি আসি করেও এল না। কারণটা ৯৩ মিনিট স্থায়ী ম্যাচটি শেষ হওয়ার ৪ মিনিট আগে অ্যাটলেটিকোর জালে জড়ানো গোল। উসমান ডেম্বেলের ওই গোলেই অ্যাটলেটিকোর মাঠ থেকে পরশু ১-১ গোলে ড্র নিয়ে ফিরেছে বার্সেলোনা। সেই ডেম্বেলে, কদিন ধরে যিনি যত উল্টো কারণে শিরোনামে। কিছু না জানিয়ে অনুশীলনে অনুপস্থিত ছিলেন, যে কারণে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে লিগে আগের ম্যাচে তাঁকে দলে রাখেননি বার্সেলোনা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে। মাঠের বাইরে তাঁর জীবনযাপনের ধরনে বিরক্ত বার্সা তাঁকে বেচে দিতে পারে, এমন গুঞ্জনের পালেও হাওয়া লেগেছিল। এর মধ্যেই ডেম্বেলে বার্সাকে মনে করিয়ে দিলেন তাঁর প্রতিভার কথা।

বলতে গেলে এই মৌসুমে লিগে অধারাবাহিক বার্সার ত্রাতাই তো ফরাসি ফরোয়ার্ড। লিওনেল মেসি কিংবা লুইস সুয়ারেজের চেয়েও তাঁর গোলের প্রভাবক বেশি। ভায়াদোলিদ (১-০), সোসিয়েদাদ (২-১), ভায়েকানোর (৩-২) বিপক্ষে তাঁর গোলই ছিল বার্সার জয়সূচক, পরশু ডেম্বেলে এনে দিয়েছেন ড্র। সব মিলিয়ে লিগে তাঁর ৫ গোলের ৪টিই বার্সেলোনাকে এনে দিয়েছে ৭ পয়েন্ট, একক অবদানের হিসেবে যা লিগে অন্য যেকোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি। গুঞ্জন যা-ই হোক, মাঠে বার্সেলোনার জার্সিতে সময়টা ভালোই কাটছে ফরাসি তরুণের। এর আগে স্প্যানিশ সুপার কাপে সেভিয়ার বিপক্ষেও বদলি নেমে দলকে শিরোপা এনে দেওয়া গোল করেন ডেম্বেলে।

কদিন ধরে ডেম্বেলের ওপর বিরক্ত বার্সেলোনা কোচ ভালভার্দেকেও প্রশংসা পঞ্চমুখ হতে বাধ্য করলেন এই ফরাসি, ‘ওর মধ্যে এমন কিছু আছে, যা অন্য খেলোয়াড়দের নেই—আত্মবিশ্বাস, দুই পায়েই জোরে শট নেওয়ার ক্ষমতা, ব্যক্তিত্ব, প্রতিভা...। প্রতিভাটা পুরো বিকশিত করতে ওকে আমাদের সাহায্য করা উচিত।’ পরশু বার্সেলোনার ইতিহাসের সপ্তম খেলোয়াড় হিসেবে ৫০০তম ম্যাচটি খেলা মিডফিল্ডার সার্জিও বুসকেটসও বলছিলেন, ‘ব্যক্তিগত জীবন ও ফুটবল...দুটিই ওকে গুছিয়ে নিতে হবে। ও এখনো অনেক তরুণ, আমাদের দলের জন্য বড় একটা পাওয়া। আমরা সবাই ওকে সাহায্য করবে। আজ ওর এই গোলটা (লিগের লড়াইয়ে) অনেক কাজে আসবে।’

নেইমার বার্সেলোনা ছাড়ার পর একজন বড় তারকাকে সই করানোর ব্যাপারে চাপ তৈরি হয়েছিল বার্সেলোনার নীতি নির্ধারকদের ওপর। সে সময় বার্সেলোনা কর্তাদের কিছুটা হলেও পিঠ বাঁচিয়েছিলেন ডেম্বেলে। কিন্তু ১০৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে যে খেলোয়াড়কে কিনেছিল বার্সা, তাঁকে শুরু থেকে ঠিকমতো কাজেই লাগাতে পারেনি। বারবার বিপদে বার্সার ত্রাণকর্তা হয়েও কোচের পূর্ণ আস্থা পাননি। শেষ পর্যন্ত ক্লাব কর্তাদের নাকি বলেছেন, সম্ভব হলে এই জানুয়ারিতেই যেন বার্সেলোনা বেচে দেয় তাঁকে!