হাথুরুসিংহেকে প্রথম ধবলধোলাই উপহার দিল ইংল্যান্ড
চা–পান করে সবাই সতেজ হতে চায়। শ্রীলঙ্কার চা তো এমনিতেই বিখ্যাত। সে চা-ই কাল হলো তাদেরই। অবিশ্বাস্য এক প্রতিরোধের গল্প লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সবাই। হেরে যাওয়া এক ম্যাচে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু চা–বিরতির পর মাত্র ৪ বলই লাগল সব সুবাস উড়ে যেতে। হাতছোঁয়া দূরত্বে কলম্বো টেস্ট হেরে গেল শ্রীলঙ্কা। ৪২ রানের এই হারে ধবলধোলাই হলো তারা। হাথুরুসিংহের অধীনে এই প্রথম দেশের মাটিতে ধবলধোলাই হলো শ্রীলঙ্কা।
গতকালই ইংল্যান্ডকে প্রায় বিজয়ী ঘোষণা করা ফেলা হচ্ছিল। ৩২৭ রানের লক্ষ্যে নেমে ৫২ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। ৫৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করা শ্রীলঙ্কা পঞ্চম উইকেট হারিয়েছে ৮২ রানে। কুশল মেন্ডিস ও রোশন সিলভা মিলে ১০২ রান যোগ করার পরই মাথায় ভূত চাপল। ঝুঁকিপূর্ণ রান নিতে গিয়ে রানআউট মেন্ডিস (৮৬)। এরপরই ধ্বংসস্তূপ শ্রীলঙ্কার ইনিংস। ৪২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলল স্বাগতিক দল। ২২৬ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরলেন সিলভা (৬৫)। শ্রীলঙ্কার জয় তখনো ১০১ রান দূরে। তবে টিভি পর্দায় সেটা আর দেখাচ্ছিল না, সেখানে শুধুই লেখা জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ১ উইকেট।
সুরঙ্গা লাকমল আর এগারোতে নামা মালিন্দা পুষ্পকুমারা কতক্ষণ টিকে থাকেন, সে অপেক্ষাই শুধু ছিল। কিন্তু অপেক্ষা যে এত লম্বা হবে, শ্রীলঙ্কাও যে জয়ের আশা দেখতে পারবে, এটা তখন কে জানত! পাল্টা আক্রমণে গেলেন পুষ্পকুমারা। তাঁর চার-ছক্কার তোড়ে একটু আগের স্পিনবান্ধব উইকেটকেই ব্যাটিং স্বর্গ মনে হচ্ছিল। বোলিং আক্রমণে পরিবর্তন এনেও কোনো লাভ হচ্ছিল না। একটি রান হচ্ছিল, আর ধবলধোলাই হওয়া থেকে বাঁচার আশায় জেগে উঠছিল শ্রীলঙ্কা। দশম উইকেট জুটিতে রেকর্ড ৫৮ রান তোলার পর হার মানলেন আম্পায়াররা। ম্যাচে প্রথমবারের মতো ব্যাকফুটে থেকে চা–বিরতিতে গেল ইংল্যান্ড।
কিন্তু মাত্র ১ উইকেটই দরকার ছিল সফরকারীদের। জ্যাক লিচ সেটা এনে দিলেন বিরতি থেকে ফিরেই। চতুর্থ বলটাই লাকমলের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে লাগল প্যাডে। আম্পায়ার রবিও মাথা ঝাঁকিয়ে আউট দিয়ে দিলেন। শ্রীলঙ্কার জ্বলুনি বাড়াতেই কিনা, রিভিউতে দেখা গেল ‘আম্পায়ার্স কল’! অর্থাৎ সুন্দরম রবি সেটা আউট না দিলেই নাটকটা চলত আরও বেশ কিছুক্ষণ। কিন্তু সেটা হয়নি, ফলে মাত্র তৃতীয়বারের মতো দেশের মাটিতে তিন টেস্টের সিরিজে ধবলধোলাই হলো শ্রীলঙ্কা।