মাঠে গড়াগড়ি দেওয়া বন্ধ করো নেইমার, বললেন পেলে

নেইমারের ‘ডাইভ’ দেওয়া নিয়ে বিরক্ত পেলে। ছবি: টুইটার
নেইমারের ‘ডাইভ’ দেওয়া নিয়ে বিরক্ত পেলে। ছবি: টুইটার
>নেইমারের প্রতিভা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। তবে ফুটবলের পাশাপাশি নেইমার মাঠে আরও যা যা করে থাকেন, সেগুলোর জন্য তাঁর নিজেরই ক্ষতি হচ্ছে, এমনটাই মনে করেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলে

মেসি-রোনালদোর বাইরে বিশ্বের সবচেয়ে ভালো ফুটবলার কে? এই প্রশ্নের জবাবে অধিকাংশেরই উত্তর হবে নেইমার। কয়েক বছর ধরে নেইমার নিজেও সেভাবেই পারফর্ম করে যাচ্ছেন। কিন্তু মাঠে যতটা না ভালো খেলেন, এর থেকে বেশি আলোচনায় থাকেন ‘ডাইভ’ দেওয়ার প্রবণতার জন্য। গায়ে একটু টোকা লাগলেই মাঠে পড়ে গিয়ে গড়াগড়ি দিয়ে রেফারির পক্ষপাত আদায়ের দিকেই তাঁর নজর থাকে বেশি। আর নেইমারের এই প্রবণতার সর্বোচ্চ প্রদর্শনী দেখা গেছে গত বিশ্বকাপে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় তারকাকে প্রায়ই দেখা গেছে দৃষ্টিকটুভাবে মাঠে পড়ে যেতে। আর এতেই বিরক্ত ব্রাজিলের হয়ে তিনবার বিশ্বকাপজয়ী পেলে।

মাঠে নেইমারের এই অযাচিত ‘ডাইভ’ দেওয়ার কারণে তাঁকে সমর্থন দেওয়া কঠিন—এমনটাই মনে করেন পেলে, ‘নেইমারের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। ফুটবল খেলার পাশাপাশি ও মাঠে যা কিছু করে, সবকিছু নিয়েই। আমি তাকে মনে করিয়ে দিয়েছি সে কত বড় একটা প্রতিভা। নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার না করে, নিজের প্রতিভার সর্বোচ্চ ব্যবহার না করে তার মনোযোগ যদি ডাইভ দেওয়ার দিকেই থাকে, তাহলে তাকে সমালোচনা থেকে রক্ষা করাটা বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।’

২০১৮ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে নেইমারের ব্রাজিলকে। বিশ্বকাপের পর নেইমারের এসব কাণ্ডকীর্তি যেন আরও বেশি করে চোখে পড়েছে, আরও বেশি সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি। এই ব্যাপারটাও লক্ষ করেছেন পেলে, ‘নেইমারের দুর্ভাগ্য যে সে ব্রাজিলকে নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের বেশি যেতে পারেনি। যে কারণে সবাই আলাদা করে শুধু তাকেই দুষেছে। ইউরোপে আমি তার সঙ্গে দুবার দেখা করেছি, কথা বলেছি। আমি তাকে বলেছি, ঈশ্বর তোমাকে অনন্যসাধারণ ফুটবলীয় প্রতিভা দিয়েছেন। তাই মাঠে এমন কিছু কোরো না, যাতে সেই প্রতিভার অসম্মান করা হয়।’ ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ফোলহা দে সাও পাওলোকে কথাগুলো বলেছেন পেলে।

অনেকেই পেলের সঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের তুলনা করে থাকেন। দুজনই ১৯ বছর বয়সের মধ্যে একবার করে বিশ্বকাপ জিতেছেন, বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরেছেন, এমবাপ্পে ভবিষ্যতে পেলের কাছাকাছি যেতে পারবেন কি না, সেটা বলা যাচ্ছে না, তবে তাঁদের ক্যারিয়ারের শুরুটা অন্তত একইভাবে হয়েছে—প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে। এমবাপ্পেকে নিয়ে কী ভাবছেন পেলে? এই প্রশ্নের জবাবে পেলে এগিয়ে রাখলেন তাঁর দেশের তারকাকেই, ‘আমার মনে হয় এমবাপ্পের থেকে নেইমার বেশি ভালো ফুটবলার। কিন্তু আপনি ইউরোপে এলে দেখবেন, নেইমারের চেয়ে এমবাপ্পেকে নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে। আমার কাছে নেইমারকে এমবাপ্পের চেয়ে সম্পূর্ণ ফুটবলার বলে মনে হয়।’

ক্যারিয়ারের সিংহভাগ সময় ব্রাজিলের সান্তোসে কাটিয়েছেন পেলে, সান্তোসে আলো ছড়িয়েই বিশ্বমঞ্চে নিজের আবির্ভাব ঘোষণা করেছেন নেইমার। পেলের মতো নেইমারও এখন ব্রাজিলে সময়ের সবচেয়ে বড় তারকা, নেইমারের ভালো-মন্দ নিয়ে পেলে উদ্বিগ্ন থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক।