কোহলি-শাস্ত্রীদের নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন গাভাস্কার?

বিরাট কোহলি ও রবি শাস্ত্রী। ছবি: এএফপি
বিরাট কোহলি ও রবি শাস্ত্রী। ছবি: এএফপি
>

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলতি টেস্ট সিরিজ জিততে না পারলে দলে কোহলি ও শাস্ত্রীর ভূমিকা পুর্নমূল্যায়নের দাবি করেছেন সুনীল গাভাস্কার

এ কেমন করমর্দন!

পার্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের পর দুই দলের অধিনায়কের হাত মেলানোর দৃশ্যটা নিশ্চয়ই চোখে পড়েছে। হেরে যাওয়া বিরাট কোহলির চোখে শ্যেন দৃষ্টি, শীতল চাহনিও বলা যায়। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক টিম পেইনের চোখে রোদচশমা থাকলেও সৌজন্যসূচক হাসিটুকু পর্যন্ত ছিল না। এক কথায় বলা চলে, শীতল করমর্দন এবং বাজে সর্ম্পকের বরফ গলেনি।

অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের চেয়ে কোহলির আচরণ বেশি কষ্ট দিয়েছে ভারতীয় সমর্থকদের। অবশ্য ভিন্নমতও রয়েছে। কারও কারও পাল্টা যুক্তি, হারের পর কি কোহলি তাহলে পেইনের চোখে চোখ রেখে হাসবেন? সেটি যেমন প্রত্যাশিত নয়, তেমনি কোহলির সেই শীতল চাহনিও না। আচরণটা অন্তত খেলোয়াড়সুলভ ছিল না—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোহলিকে নিয়ে এমন কথাই বেশি চর্চা হচ্ছে। আর এই সিরিজে স্লেজিং নিয়ে যে উত্তাপ বাড়ছে, তা বলাই বাহুল্য।

আর এই উত্তাপের মাঝে একটি ব্যাপার চাপা পড়েছে। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা কোহলির দলের নিরঙ্কুশ জয় দেখেছেন। ভিভিএস লক্ষ্মণ তো বলেই দিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার এই দলটা তাঁর দেখা ‘দুর্বলতম’। ফারুক ইঞ্জিনিয়ারের ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, ভারত ৪–০ ব্যবধানে সিরিজ জিতবে। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ডিন জোন্সও বলেছিলেন, ভারত এবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জিততে না পারলে আর কখনোই পারবে না।

সবাই ভারতকে ‘ফেবারিট’ দেখেছেন একটি যুক্তিতে, অস্ট্রেলিয়ার এই দলে নেই দুই ‘প্রাণভোমরা’—স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। কেপটাউন টেস্টে বল–বিকৃতি কেলেঙ্কারিতে জড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা পান দুজন। তাঁদের অনুপস্থিতিতে অ্যাডিলেডে হারলেও পার্থে জিতে সিরিজে ১–১ ব্যবধানে সমতায় ফিরেছে পেইনের অস্ট্রেলিয়া। বাকি আছে আর দুটি ম্যাচ। ভারতকে সিরিজ জিততে যা করার এর মধ্যেই করতে হবে। তা না হলে দলে ‘বিরাট কোহলি ও রবি শাস্ত্রীর ভূমিকা পুর্নমূল্যায়ন করা উচিত’—বলেছেন সুনীল গাভাস্কার।

স্লেজিং বিতর্কের ডামাডোলে কোহলির দলের আসল লক্ষ্যই চাপা পড়ে যাচ্ছে—গাভাস্কার বুঝি তা টের পাচ্ছেন? ভারতীয় ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান স্লেজিং নিয়ে আলাদা করে কিছু বলেননি। তবে মনে করিয়ে দিয়েছেন কোহলিদের আসল লক্ষ্যটার কী হওয়া উচিত। পার্থ টেস্টে হারের জন্য ভারতীয় অধিনায়কের একাদশ নির্বাচনের সমালোচনা করেছেন গাভাস্কার। কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার না রেখে চার পেসার খেলানোর ট্যাকটিকসের নিন্দা করেছেন তিনি। ম্যাচ শেষে কোহলি নিজেও একাদশ নির্বাচনে নিজের ভুল স্বীকার করেছেন।

গাভাস্কার একটি টিভি চ্যানেলকে এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘দলের সমন্বয়ের দিকে নজর দিতে হবে এবং সমস্যার সমাধানে সঠিক লোক (ক্রিকেটার) নিয়োগ জরুরি। সেটি করতে পারলে তাঁরা অবশ্যই বাকি দুটি ম্যাচ জিতবে। কিন্তু তা না করলে এবং সেটি যদি হয় অস্ট্রেলিয়ার এই দলটির বিপক্ষে যেখানে স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার নেই, তাহলে নির্বাচকদের উচিত এই অধিনায়ক ও কোচিং স্টাফ রেখে কোনো লাভ হচ্ছে কি না, তা ভেবে দেখা।’

ভারত এই সিরিজ জিততে না পারলে গাভাস্কার কি তাহলে অধিনায়ক পদ থেকে কোহলি আর কোচ পদ থেকে শাস্ত্রীকে অপসারণের দাবি করলেন?