ওপেনার মাশরাফিও যেদিন ব্যর্থ

চমক জাগিয়ে নেমেছিলেন ওপেনিংয়ে, কিন্তু শূন্য হাতে ফিরেছেন মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো।
চমক জাগিয়ে নেমেছিলেন ওপেনিংয়ে, কিন্তু শূন্য হাতে ফিরেছেন মাশরাফি। ছবি: প্রথম আলো।
>তিনে নেমেছেন বিপিএলেই। কিন্তু ওপেনিংয়ে? মাশরাফি ওপেন করতে নেমে আজ চমকেই দিলেন। কিন্তু ভালো করতে পারেননি। আউট হয়েছেন কোনো রান না করেই। রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে তাঁর দলও হেরেছে।

অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা মাঝেমধ্যে দারুণ ফাটকা খেলেন। সেগুলো অনেক সময় কাজে লাগে, অনেক সময় কাজে লাগে না। আজ ক্রিস গেইলের সঙ্গে ওপেনিংয়ে মাশরাফির নামাটা কি তেমনই এক ফাটকা?

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি দাবি করলেন, তাঁর ওপেনিংয়ে নামাটা হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নয়। আগ থেকেই পরিকল্পনা ছিল, ‘আমরা আগ থেকেই ঠিক করে রেখেছি যে ওরা ৬০ রান করলেও আমি ওপেনিংয়ে যাব।’ কিন্তু কী ভেবে মাশরাফির ওপেনিংয়ে নামা?

গত বিপিএলে চট্টগ্রামে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে তিনে নেমে চমকে দিয়েছিলেন মাশরাফি। সেই ম্যাচে ৪২ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে দলকে জয়ের ভিতও গড়ে দিয়েছিলেন। ওই ম্যাচের পর তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, আগে কি কখনো তিন নম্বরে ব্যাটিং করেছেন? বলেছিলেন, ‘মনে পড়ছে না!’ মাশরাফির মনে করা কঠিনই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে একবারই তিনে ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম টেস্টে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তাও ‘নাইট ওয়াচ ম্যান’ হিসেবে।

ঘরোয়া-আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার মিলিয়ে মাশরাফির সেরা ইনিংসগুলোর কোনোটিই তিনে নেমে নয়, ওপেনিংয়ে নেমে তো নয়ই। ২০১৫ বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৩২ বলে অপরাজিত যে ৫৬ রানের ইনিংসটা খেলে দল জিতিয়েছিলেন মাশরাফি, সেটিও পাঁচে নেমে। গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের বিপক্ষে ৬৭ রান করেছিলেন আটে নেমে। এতদিন ‘নাম্বার থ্রি’ ছিল ব্যাটিংয়ে মাশরাফির সর্বোচ্চ প্রমোশন। সেই তিনি আজ কেন ওপেনিংয়ে নামার সিদ্ধান্ত নিলেন?

‘আমরা আজ কোনো ওপেনার নিইনি। হয় ফরহাদ রেজা না হয় আমাকে নামতে হতো। যেহেতু ওদের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ছিল তাই আমরা নাহিদকে নিয়েছি অফ স্পিনার হিসেবে। একজনকে নামতে হতো। তাই আমি গিয়েছি (ওপেনিংয়ে)’—মাশরাফির যুক্তি।

প্রথমবারের মতো বড় কোনো মঞ্চে ওপেনিং করতে নেমেছেন, কিন্তু মনে রাখার মতো কিছু করতে পারেননি। ফিরেছেন শূন্য রানে। দলও হেরেছে। ওপেনিংয়ে নামার সিদ্ধান্ত একেবারেই কাজে আসেনি। বরং ম্যাচের পরিস্থিতি দাবি করছিল, মাশরাফি সাত-আটে নামলেই রংপুরের উপকার হতো। ক্রিস গেইলের মতো ব্যাটসম্যান থাকার পরও ১৩৬ করতে পারবেন না, এটা অবশ্য ভাবতে পারেননি রংপুর অধিনায়ক, ‘১৩৬ রান করতে আমাদের যথেষ্ট ব্যাটসম্যান ছিল। কিন্তু কেউ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। মাঝে আমরা কোনো জুটি করতে পারিনি। ১৩৬ করতে উইকেটে এমন কোনো অস্বাভাবিক আচরণ করেনি যে ওটা করা যায় না। আবার কাউকে দায়ী করারও উপায় নেই। এখান থেকে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’

ঢাকায় আপাতত রংপুরের ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় নেই। পরশু থেকে শুরু সিলেট পর্ব। সেখানে দলে যোগ হচ্ছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। প্রোটিয়া বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান যোগ হওয়ার পর রংপুর যদি চাঙা হয়!