রোনালদোকে মুছেও ফেলছে রিয়াল!

এই জার্সিটার জন্য কী করেননি রোনালদো! ফাইল ছবি
এই জার্সিটার জন্য কী করেননি রোনালদো! ফাইল ছবি
>রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে কোথায় থাকবেন রোনালদো? অনেকে বলবেন, সবার ওপরে। রেকর্ড, পরিসংখ্যান, সাফল্য সবই তো তাঁর পক্ষেই বলবে। কিন্তু রিয়াল যেন পণ করেছে রোনালদো স্মৃতি থেকেই মুছে ফেলার!

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো জুভেন্টাসে চলে যাওয়ায় কোন কোন দিকে ভুগছে রিয়াল মাদ্রিদ, সেই তালিকা অনেক লম্বাই হবে। ১৯ ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে স্প্যানিশ লিগের পয়েন্ট তালিকায় চতুর্থ রিয়াল। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের ৯ বছরে মৌসুমের এই পর্যায়ে লিগে রিয়ালের গোল ছিল গড়ে ৪৮টি, অথচ এই মৌসুমে গোল ২৮টি। জুভেন্টাসের জার্সিতে এরই মধ্যে ইতালিয়ান লিগে রোনালদোর গোল সর্বোচ্চ ১৪টি, অথচ রিয়ালের সর্বোচ্চ গোলদাতা বেনজেমার (৭টি) চেয়ে স্পেনেই বেশি গোল আছে ১০ জনের!

রোনালদো যাওয়ায় রিয়ালের ‘ক্ষতি’টা যেখানে দিন দিন আরও বড় মনে হচ্ছে, সেই রোনালদোকেই নিজেদের ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ধীরে ধীরে যেন মুছে দিচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ।
রিয়াল মাদ্রিদের ওয়েবসাইটের হোমপেজেই সেটির আঁচ আছে। কদিন আগে উয়েফার ঘোষিত ২০১৮ সালের বর্ষসেরা দলে রিয়ালের বর্তমান দলের চারজন খেলোয়াড় আছেন—রাফায়েল ভারান, সার্জিও রামোস, লুকা মদরিচ ও মার্সেলো। সেই চারজনকে নিয়ে উচ্ছ্বাস থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু দলে যে রোনালদোও আছেন, সেটি সামনেই আনছে না রিয়াল। এখন ‘পর’ হয়ে যাওয়া রোনালদোকে নিয়ে উচ্ছ্বাস না-ই থাকতে পারে, তাই বলে তাঁর নামটাও বর্ষসেরা দলের অন্য ক্লাবের খেলোয়াড়দের মতো সাদামাটাভাবে দিতে হবে! টের স্টেগেন, ফন ডাইক, কান্তে, হ্যাজার্ড, মেসি, এমবাপ্পে—সবার নামের পাশে ব্র্যাকেটে ক্লাবের নাম লেখা, সেভাবেই রোনালদোর পাশেও লেখা (জুভেন্টাস ও রিয়াল মাদ্রিদ।) আলাদা কদর সেখানে রোনালদো পাননি।

রোনালদো জুভেন্টাসে যাওয়ার পরপরই ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে রোনালদোকে ‘আনফলো’ করে দেয় রিয়াল। রোনালদোও পরে ‘শোধ’ নিয়েছেন। অথচ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ‘প্রেম’ রোনালদোর এখনো ঠিকই আছে। রিয়ালের ওয়েবসাইটে ক্লাবের লেজেন্ড ও ক্লাবের ইতিহাস নামে দুটি ভাগে আলফ্রেডো ডি স্টেফানো ও জিনেদিন জিদান থাকলেও রোনালদো নেই। সর্বশেষ কয়েক বছরে রিয়ালের জেতা ট্রফিগুলোর ছবির বেশির ভাগেও রোনালদো সামনের সারিতে নেই, কয়েকটিতে একেবারেই নেই!

রোনালদোকে সম্ভব সব জায়গা থেকে মুছে ফেলতে রিয়ালের এই চেষ্টা যে খুব ভেবেচিন্তেই করা হচ্ছে, সেটি ইংলিশ দৈনিক ডেইলি মেইলকে বলেছে রোনালদোর এক ঘনিষ্ঠ সূত্র। অবশ্য রিয়ালে এমনটা এবারই প্রথম নয়। আরেক রিয়াল কিংবদন্তি রাউল ২০১০ সালে রিয়াল ছেড়ে জার্মানির শালকেতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁকে প্রাপ্য সম্মানটা রিয়াল দিয়েছে তিন বছর পর। একটা ‘প্রদর্শনী ম্যাচ’ও আয়োজন করেছিল। তত দিনে রাউল শালকে থেকে কাতারের আল-সাদে চলে গেছেন।
রিয়ালের ভালোবাসা আবার পেতে রোনালদোকেও হয়তো জুভেন্টাসের পাশাপাশি ইউরোপ ছাড়ার অপেক্ষা করতে হবে!