ক্রিকেট বন্ধের কারণ 'সূর্যের আলো'!

অতিরিক্ত সূর্যের আলোর কারণে নেপিয়ারের মাঠে খেলা বন্ধ। ছবি: টুইটার
অতিরিক্ত সূর্যের আলোর কারণে নেপিয়ারের মাঠে খেলা বন্ধ। ছবি: টুইটার
>কত কারণেই তো ক্রিকেট ম্যাচ বন্ধ থাকে। বৃষ্টি, তুষারপাত, আলোকস্বল্পতা; কিন্তু কখনো শুনেছেন অতিরিক্ত সূর্যের আলোর কারণে ম্যাচ বন্ধ? এমনটাই ঘটেছে নেপিয়ারে ভারত- নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে।

কত কারণেই তো ক্রিকেট খেলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে! বৃষ্টি, তুষারপাত কিংবা আলোর স্বল্পতা! কিন্তু সূর্যের আলোর কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যেতে কখনো শুনেছেন? এমনই এক অবাক করা ঘটনা আজ ঘটেছে নেপিয়ারে ভারত-নিউজিল্যান্ড প্রথম ওয়ানডেতে!
ক্রিকইনফোতে একটা মন্তব্য করেছেন একজন, ‘কোনো কোনো সময় খেলা বন্ধ থাকে সূর্য না থাকার কারণে আবার কোনো সময় খেলা বন্ধ হয় অতিরিক্ত সূর্যের কারণে।’
আসলেই তো, একটি ক্রিকেট ম্যাচ থামিয়ে দেওয়ার জন্য কী অজুহাত থাকতে পারে? ফুটবলের মতো সব কাল-ক্ষণে খেলার খেলা ক্রিকেট কখনোই ছিল না, সামান্য বৃষ্টি কিংবা তুষারপাত হলেই পিচে টানাটানি পড়ে পিচ কাভারের। ঢেকে দেওয়া লাগে পিচ, যাতে পিচটা নষ্ট না হয়। পাঁচ দিনের দীর্ঘ টেস্ট ম্যাচে যদি মেঘ বাবাজির আগমন ঘটে, তবে তাও বন্ধ রাখতে হয়। তবে এমনটি হয়তো আগে কেউই শোনেনি। অতিরিক্ত সূর্যের আলোর কারণে থামিয়ে দিতে হয়েছে ক্রিকেট!

আজ নেপিয়ারে শুরু হওয়া ভারত বনাম নিউজিল্যান্ডের প্রথম একদিনের ম্যাচে এ ঘটনার কারণেই ম্যাচ বন্ধ রাখতে হয় দুবার। ওশেনিয়া অঞ্চলে এখন গ্রীষ্মকাল। সূর্য ডুবতে ডুবতে বেজে যায় সাতটা। নেপিয়ারে তার থেকেও বেশি। সূর্য নামতে নামতে প্রায় সাড়ে আটটা। বেশি সময় থাকার কারণেই মাঠে সূর্যের আলো অনেকটা সময় ধরেই পড়ছে। সূর্যের আলো যেন তির্যকভাবে পিচে পড়ে, সেভাবেই প্রতিটি ক্রিকেট মাঠ তৈরি করা হয়। অর্থাৎ ক্রিকেট পিচ বানানো হয়ে থাকে উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে। কিন্তু নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে তা হয়নি। পরিকল্পনাকারীদের ভুলে পিচ বসানো হয় পূর্ব-পশ্চিম করে। যে কারণে সূর্যাস্তের সময় পিচে সরাসরি আলো পড়ে। এ রকম আলোয় খেলা খেলোয়াড় ও আম্পায়ার দুই পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর!

নিউজিল্যান্ডের অন্যান্য মাঠের তুলনায় এ মাঠ কিছুটা অখ্যাত। আজ এই মাঠে ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচটি হচ্ছে প্রায় চার বছর পর। সবশেষ ২০১৫ বিশ্বকাপে আরব আমিরাত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার একদিনের ম্যাচ গড়িয়েছিল এই মাঠে। এরপর বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ডের একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এ ছাড়া আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি গত চার বছরে। ২০১৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি একদিনের ম্যাচ হওয়ার কথা থাকলেও সংস্কারের কারণে তা হয়নি। ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবারও ফিরল নেপিয়ার। ১৯১১ সালে তৈরি হওয়া এই মাঠ সংস্কারের ভুলের কারণে আরও ভুগতে হবে তাদের।

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে এই ঘটনা। করবেই না বা কেন? এই প্রথম যে এ রকম কিছু শোনা গেল। ক্রিকইনফোতে সন্তোষ নামের একজন লিখেছেন, ‘আরও কিছু কারণে ক্রিকেট ম্যাচ থামানো হোক, যেমন আম্পায়াররা মাঠে আসেননি, ব্যাট-বল এখনো মাঠে এসে পৌঁছায়নি, টসের কয়েন হারিয়ে গিয়েছে, খেলোয়াড়রা ঘুম থেকে উঠতে পারেনি, ইত্যাদি ইত্যাদি।’ টম নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘বলা উচিত ছিল “ভালো আবহাওয়ার কারণে ম্যাচ বন্ধ”। সূর্যের আলো থাকাটা তো কোনো বাজে আবহাওয়া নয়, তাই না!’
খেলা আবার মাঠে গড়ানোর পর ভারত ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ম্যাচটি জিতেছে ৮ উইকেটে। প্রথমে ব্যাটিং করে নিউজিল্যান্ড গুটিয়ে গিয়েছিল ১৫৮ রানেই। জবাবে শিখর ধাওয়ানের ৭৫ আর বিরাট কোহলির ৪৫ রানে ভারত ২ উইকেটে ১৫৬ করেই ম্যাচটা জিতে নেয়।