মায়ের মৃত্যুর পরেও মাঠে থেকে জয়

>
মায়ের মৃত্যুর খবর জেনেও খেললেন জোসেফ। ছবি: টুইটার
মায়ের মৃত্যুর খবর জেনেও খেললেন জোসেফ। ছবি: টুইটার

অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিনেই ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

কাল সকালেই খবর এসেছে তাঁর মা শ্যারন আর নেই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিনে মায়ের মৃত্যুশোক নিয়েও মাঠ ছাড়েননি ক্যারিবীয় পেসার আলজারি জোসেফ। শোককে শক্তিতে পরিণত করেই বরং যেন বল হাতে ঝড় তুলছিলেন। এই টেস্টে নিজের প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন, ইংল্যান্ডের দুই ইনিংসেই নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। কাল তৃতীয় দিনে সফরকারীদের ১০ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জোসেফ এবং তাঁর শোকার্ত পরিবারের প্রতি এই জয় উৎসর্গ করেছেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার।

প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ২৭২ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কাল ৩০৬ রানে অলআউট হয় তাঁরা। ইংল্যান্ড এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দাঁড়াতেই পারেনি। কেমার রোচ (৪/৫২) ও হোল্ডারের (৪/৫৩) তোপে ১৩২ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারী দল। এতে জয়ের জন্য মাত্র ১৪ রানের লক্ষ্য পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ক্যারিবীয় ওপেনার মিলে তা তুলে নেন ১৩ বলের মধ্যে। গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে গোটা দল মিলে খেলেছে মাত্র ২৫৩ বল। যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্যারেন ব্রাভো ফিফটি তুলে নিতে একাই খেলেছেন ২১৬ বল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য এই সিরিজ জয় কতটা তাৎপর্যপূর্ণ তা বুঝিয়ে দেবে পরিসংখ্যান—২০১২ সাল থেকে জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনো দলের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি তাঁরা। ৭ বছর আগে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর আগে ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর এই সিরিজের দুই টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট যেভাবে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে তা যেন আশির দশকে দলটির সোনালি সময় মনে করিয়ে দেয়। প্রথম টেস্টে ৩৮১ রানে জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টে ১০ উইকেটের জয়—১৯৮৮ সালের পর এই প্রথম কোনো সিরিজে ইংল্যান্ডকে এত বড় ব্যবধানে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

হোল্ডারের দলে তাই এখন যেমন উৎসব তেমনি শোকের আবহও। মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়েও ঘরে না ফিরে মাঠে থেকে দলকে সহায়তা করেছেন জোসেফ। এই জয় তাঁর পরিবারকে উৎসর্গ করে ক্যারিবীয় অধিনায়ক হোল্ডার বলেন, ‘আলজারি আলাদা ধাঁচের মানুষ। আজ এমন দিনে মাঠে থাকতে অনেক সাহস লাগে। অনেক মানুষই তা করতে পারে না। তাঁকে প্রশংসা করতেই হয়। সকালে তাঁকে কাঁদতে দেখে খুব খারাপ লেগেছে। আমরা সবাই মিলে আলজারি এবং তাঁর পরিবারের জন্য জয় তুলে নিতে চেয়েছি। এই জয় তাঁর পরিবারকে উৎসর্গ করছি।’ জোসেফের মায়ের মৃত্যুতে কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নেমেছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা।