ম্যাচ জেতানো বোলিংয়ে সেরা দেশিরা

বিপিএলের সেরা পারফরম্যান্স এ তিনজনের।
বিপিএলের সেরা পারফরম্যান্স এ তিনজনের।

বিপিএলে প্রতিবারই বিদেশিদের প্রাধান্য দেখা যায়। ঝোড়ো কোনো ফিফটি বা সেঞ্চুরি হলেই সেটা কোনো না কোনো বিদেশির। ছক্কা বা চার মারায়ও তারাই এগিয়ে। স্লগ ওভারে ঝড় তোলায় এগিয়ে বিদেশি কোটায় সুযোগ পাওয়া খেলোয়াড়েরাই। ম্যাচ সেরাদের তালিকাতেও তাই প্রাধান্য বিদেশিদের। দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের চেষ্টায় সৃষ্ট একটি টুর্নামেন্টের এমন বিদেশি নির্ভরতা ভালো লাগার কথা নয় কারও। কিন্তু এর মাঝেও একটি ইতিবাচক দিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। বিপিএলে এবার ম্যাচ জেতানো অধিকাংশ স্পেলই করেছেন দেশি বোলাররা।

বিপিএলে এখনো দুই ম্যাচ বাকি আছে। এখন পর্যন্ত যে ৪৩টি ম্যাচ হয়েছে তার মাঝে এখন পর্যন্ত সেরা বোলিং কামরুল ইসলামের। জাতীয় দলে খেলা এই পেসার গত ২১ জানুয়ারি ৪ উইকেট নিতে মাত্র ১০ রান খরচ করেছিলেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে কামরুলের এ স্পেলকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৩.২ ওভার বল করে ১ উইকেট পেলেও মাত্র ৮ রান দিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। বিদেশি বোলারদের অযাচিত রান দেওয়ার পরও রাজশাহী কিংস সেদিন কুমিল্লাকে ১৩৮ রানে অলআউট করে পেয়েছিল ৩৮ রানের জয়।

কামরুলের চেয়ে এক রান বেশি দেওয়ায় সেরা বোলিং ফিগারটা মাশরাফির হয়নি। তবে মাশরাফি বিন মুর্তজার পক্ষে যুক্তি হলো, কামরুলের চেয়ে এক ওভার বেশি বল করেছেন তিনি। মজার ব্যাপার মাশরাফির ম্যাচ জেতানো স্পেলটিও এসেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষেই, বিপিএলের একদম শুরুর দিকে।

সেরা বোলিংয়ের তিনে থাকা রবি ফ্রাইলিঙ্ক আবার নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন মাশরাফির দলকেই। বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচেই রংপুরের মুখোমুখি হয়েছিল চিটাগং ভাইকিংস। সে ম্যাচে ফ্রাইলিঙ্কের ১৪ রানের ৪ উইকেটের পারফরম্যান্সের সামনে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল রংপুর।

গতকালই নিজের ভুলে বসা বোলিং সত্তাকে ফিরে পেয়েছেন সুনীল নারাইন। এই স্পিনারের কারণেই ভালো অবস্থানে থাকা ভাইকিংস মাঝপথে দিক হারিয়েছে ইনিংসের। ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই বোলার। এলিমিনেটরের এই ম্যাচে তাঁকে অন্যপ্রান্ত থেকে সহযোগিতা করেছেন সাকিব। ৪ ওভারের স্পেলে কোনো উইকেট পাননি কিন্তু সাকিবের মাত্র ১১ রান দেওয়া স্পেলই অন্যপ্রান্তে ঝুঁকি নিতে বাধ্য করেছে চিটাগংকে।

সাকিবের দুর্ভাগ্য, তাঁর সেরা বোলিংয়ের দিনে এভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি কেউ। চিটাগংয়ের বিপক্ষেই ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু গ্রুপ পর্বের সে ম্যাচে অন্য বোলারদের দরাজ হাত সাকিবকে পরাজিত দলে থাকতে বাধ্য করেছে। এ কারণেই ইবাদত হোসেনই ম্যাচ জেতানো সেরা বোলিংয়ের পাঁচে জায়গা পেয়ে গেছেন। বিপিএলের শুরুতে সুযোগ না পাওয়া এই পেসার ওই ভাইকিংসের বিপক্ষে মাত্র ১৭ রানে পেয়েছেন ৪ উইকেট। বিপিএলে নিজের শেষ ম্যাচে তাই ম্যাচ সেরা হয়ে মাঠ ছেড়েছেন নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট দলে ডাক পাওয়া এই পেসার।

সেরা বোলিংয়ে শীর্ষ দশের বাদবাকিরাও সবাই বাংলাদেশের বোলার।

বিপিএলের সেরা বোলিং

বোলার

ফিগার

ম্যাচ

কামরুল ইসলাম

৩-০-১০-৪

কিংস-ভিক্টোরিয়ানস

মাশরাফি বিন মুর্তজা

৪-১-১১-৪

রাইডার্স-ভিক্টোরিয়ানস

রবি ফ্রাইলিংক

৪-০-১৪-৪

ভাইকিংস-রাইডার্স

সুনীল নারাইন

৪-০-১৫-৪

ডায়নামাইটস-ভাইকিংস

সাকিব আল হাসান

৪-১-১৬-৪

ডায়নামাইটস-ভাইকিংস

ইবাদত হোসেন

৪-০-১৭-৪

সিক্সার্স-ভাইকিংস