রিয়ালের ম্যাচ আজ বার্সার 'একাডেমি'র সঙ্গে!

আয়াক্স থেকে পরে বার্সেলোনায় খেলা খেলোয়াড় নিয়ে ম্যাচ স্কোয়াড বানিয়ে ফেলা সম্ভব। ছবি: মার্কা
আয়াক্স থেকে পরে বার্সেলোনায় খেলা খেলোয়াড় নিয়ে ম্যাচ স্কোয়াড বানিয়ে ফেলা সম্ভব। ছবি: মার্কা

শিরোনাম পড়ে ভ্রু কোচকালে দোষ দেওয়া যাবে না। রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থক না হলেও ইউরোপিয়ান ফুটবলের অনুসারী হলেই জানা থাকার কথা আজ চ্যাম্পিয়নস লিগে কাদের ম্যাচ। ডাচ ক্লাব আয়াক্সের মাঠে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগ খেলবে রিয়াল। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে রিয়াল না হয় সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই বলে আয়াক্স একেবারে ফেলনা নয়। চার চারটিবার ইউরোপের সেরার সনদ ট্রফি ক্যাবিনেতে রাখা আছে তাদের। সেই আয়াক্সকে বার্সেলোনার একাডেমি বলে বসা!

এ সাহস দেখিয়েছে স্প্যানিশ পত্রিকা মার্কা। তাদের প্রতিবেদনের যুক্তিও আছে। আজ যে এই টিকিটাকার বার্সেলোনা, পাসিং ফুটবলের পতাকা যারা ওড়াচ্ছে বহুদিন ধরে, তাদের এ পথচলা শিখিয়েছেন ইয়োহান ক্রুইফ। এই কিংবদন্তি কিন্তু তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে এসেছেন এই আয়াক্সের জার্সিতেই। নেদারল্যান্ডস ও আয়াক্স ক্রুইফের মতো প্রতিভাকে পেয়েই সাহস পেয়েছিল টোটাল ফুটবলের মতো যুগান্তকারী অমন কিছুর চিন্তা করার। তাঁর ছোঁয়াতেই বদলে গিয়েছিল বার্সেলোনা। সেই ইয়োহান ক্রুইফ অ্যারেনাতেই আজ রিয়াল মুখোমুখি হবে আয়াক্সের। আর রিয়ালের আরেকটি কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা ভেস্তে দেওয়ার পরিকল্পনার মূল কারিগর হয়ে থাকবেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং ও ম্যাথিস ডি লিট।

প্রথম জনকে তো চিনে ফেলার কথা। খুব বেশি দিন হয়নি, আগামী মৌসুমেই বার্সেলোনার জার্সি পরে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন এই মিডফিল্ডার। এখন পর্যন্ত যে সম্ভাবনা ২১ বছর বয়সী মিডফিল্ডারের অনুসারী হওয়ার কথা ডি লিটের। অমিত সম্ভাবনার এই ডিফেন্ডারের বয়স এখনো ২০ হয়নি, তবু তাঁর হাতেই অধিনায়কের আর্মব্যান্ড তুলে দিয়েছে আয়াক্স। এত বড় সম্মান পেয়েও অবশ্য আয়াক্স ছেড়ে বার্সেলোনায় যাওয়ার স্বপ্ন ভুলছেন না ডি লিট।

এ অবশ্য নতুন কিছু নয়। ১৯৭৩ সালে ক্রুইফ ও নিসকেন প্রথম আয়াক্স থেকে বার্সেলোনায় এসে ডাচ ছোঁয়া দিয়েছিলেন। ১৯৭৩/৭৪ সালে ক্রুইফের সুবাদে লিগও জেতে বার্সেলোনা। ক্রুইফের দেখানো পথে রোনাল্ড কোম্যান হাজির হন ন্যু ক্যাম্পে। বার্সেলোনার প্রথম ইউরোপ জেতার সঙ্গে জড়িয়ে আছে কোম্যানের নাম। কোম্যানের মতোই আয়াক্স থেকে হাজির হয়েছিলেন রিচার্ড ভিজে ও জর্দি ক্রুইফ।

বার্সেলোনার পরবর্তী আয়াক্স যুগ অবশ্য কোনো খেলোয়াড় নয় কোচের সুবাদে এসেছে, লুইস ফন গাল। তাঁর হাত ধরে বার্সেলোনায় এসেছেন উইনস্টন বোগার্ড, মিখাইল রেইজিগার, ডি বোর ভ্রাতৃদ্বয়, প্যাট্রিক ক্লাইভার্ট ও মার্ক ওভারমার্স।

ফন গালের পর বার্সা পেয়েছে ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ডকে। তাঁর ছোঁয়াতেই আরেকবার ইউরোপ জেতার সুযোগ হয়েছে বার্সেলোনার। এর পর আয়াক্স থেকে বার্সেলোনায় আসার তালিকায় নাম লিখেছেন জ্যাসপার চিলেসেন। এই গোলরক্ষকের পর নাম লিখিয়েছেন ডি ইয়ং। তবে চিলেসেনে এ মৌসুমেই বার্সা ছাড়া কথা ভাবছেন। ফলে ইয়ং ও চিলেসেনের এক সঙ্গে বার্সেলোনায় খেলার সম্ভাবনা কম। বরং ডি লিট-ইয়ং জুটিকেই বার্সেলোনায় দেখার সম্ভাবনা বেশি।

সরাসরি না হলেও আয়াক্সে খেলে পরে বার্সেলোনায় আসা খেলোয়াড়ের সংখ্যাও কম নয়। লুইস সুয়ারেজই যেমন লিভারপুলে এসেছেন আয়াক্সে নাম কামিয়ে। জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ ইতালিতে আলো কাড়ার আগে খেলেছেন আয়াক্সে। ম্যাক্সওয়েল ও এডগার ডাভিডসও আয়াক্স থেকে নানা পথ ঘুরে পা ফেলেছেন বার্সেলোনায়।

আয়াক্সকে ‘বার্সেলোনার একাডেমি’ বললে আসলেই হয়তো ভুল হবে না!