বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হবে, আশা আইসিসির

আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন। ছবি: এএফপি
আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন। ছবি: এএফপি
>কাশ্মীরের পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার ঘটনায় বিশ্বকাপে ভারতকে পাকিস্তানের মুখোমুখি না হওয়ার দাবি তুলেছেন সাবেক স্পিনার হরভজন সিং। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগে ১০০ দিন বাকি থাকতেই দেখা যাচ্ছে, এই ম্যাচ নিয়েই দর্শকদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। আইসিসি এবং বিশ্বকাপের আয়োজক কমিটিও মনেপ্রাণে চায়, এ ম্যাচ নিয়ে যেন অনিশ্চয়তা তৈরি না হয়

হরভজন সিংয়ের সোজা কথা, তিন পয়েন্ট গেলে যাক, বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনোভাবেই খেলা উচিত নয়। দলের যা শক্তি, তাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট না পেলেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। কাশ্মীরের পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে দাবিটা তুলেছেন ভারতের সাবেক এই স্পিনার। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর ১০০ দিন বাকি থাকতেই বোঝা যাচ্ছে, হরভজনের দাবির সঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশার কোনো মিলই নেই। আইসিসি ও বিশ্বকাপের আয়োজক কমিটিরও চাওয়া, বিশ্বকাপে মুখোমুখি হোক দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী।

ইংল্যান্ডে ৩০ মে শুরু হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯। ওল্ড ট্রাফোর্ডে গ্রুপ পর্বে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ গড়াবে ১৬ জুন। এই ম্যাচের টিকিটের জন্য আইসিসি আবেদনের দ্বার খোলামাত্রই হামলে পড়েছেন ক্রিকেটপিপাসুরা। ২৫ হাজার টিকিটের জন্য প্রায় ৫ লাখ আবেদন জমা পড়েছিল। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটীয় দ্বৈরথের অতীত ইতিহাস বাদ দিন, শুধু ম্যাচের জন্য টিকিটের আবেদনসংখ্যা বিচারেই এটি এরই মধ্যে বিশ্বকাপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ, যা ছাপিয়ে গেছে বিশ্বকাপ ফাইনালের ম্যাচকেও। ১৪ জুন লর্ডসের ফাইনালে দেখতে টিকিটের জন্য আবেদন করেছেন প্রায় আড়াই লাখ ক্রিকেটপ্রেমী।

কাশ্মীরের পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার ঘটনা রাজনীতি-কূটনীতির সীমানা ছাড়িয়ে প্রভাব ফেলছে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটীয় সম্পর্কেও। পরশু ক্রিকেট ক্লাব অব ইন্ডিয়ার (সিসিআই) সচিব আসন্ন বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বয়কটের দাবি তোলার পর একই দাবি তোলেন হরভজনও। মুম্বাই ও পাঞ্জাবের স্টেডিয়ামে পাকিস্তানি কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের ছবি সরানো থেকে শুরু করে পিএসএলের সম্প্রচার বন্ধ করা—সম্ভাব্য সব ভাবেই প্রতিবাদ করছে ভারত। আইসিসি ও বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটিও চলমান পরিস্থিতি গভীর গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত মাঠে গড়ানো নিয়ে আইসিসি এবং আয়োজক কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।

বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট পরিচালক স্টিভ এলওয়ার্দি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই ম্যাচটি সম্ভবত বিশ্বের অন্যতম বড় ক্রীড়াযজ্ঞ। ম্যাচটি নিয়ে সবার আগ্রহ, সমর্থন এবং টিকিটের জন্য আবেদনসংখ্যা একবার ভেবে দেখুন। চার লাখের ওপরে আবেদন জমা পড়েছে। সংখ্যাটা অবিশ্বাস্য। ম্যাচটি নিয়ে সবার আগ্রহ কেমন, তা এতেই পরিষ্কার। কে জানে, হয়তো ফাইনালেও মুখোমুখি হতে পারে।’

বিশ্বকাপে মুখোমুখি না হওয়া নিয়ে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। মাঝে এখনো তিন মাস সময় বাকি। এত আগেই ম্যাচের ভাগ্য নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি নয় কোনো দেশেরই ক্রিকেট বোর্ড, এমন খবরই জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। দুবাইয়ে আগামী সপ্তাহে আইসিসির বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপনের সুযোগ পাবেন দুই প্রতিবেশী দেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধিরা।

আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন জানিয়েছেন, বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে আপত্তি নিয়ে কোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ডই এ পর্যন্ত ‘কোনো রকম ইঙ্গিত দেয়নি’। লন্ডনে ক্রিকইনফোকে তিনি বলেন, ‘বিসিসিআই ও পিসিবির প্রতিনিধিদের নিয়েই আমরা পরিস্থিতি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। বিশ্বকাপের সূচি অনুযায়ী ভারত-পাকিস্তানের নির্ধারিত ম্যাচ না হওয়া নিয়ে এখনো আমরা কারও তরফ থেকে কোনো ইঙ্গিত পাইনি। তবে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা চালিয়ে যাব।’