লড়াইয়ের পরও সেই ইনিংস হারই

>
বাংলাদেশের আরেকটি উইকেটের পতন। নিউজিল্যান্ড খেলোয়াড়দের উল্লাস। ছবি: এএফপি
বাংলাদেশের আরেকটি উইকেটের পতন। নিউজিল্যান্ড খেলোয়াড়দের উল্লাস। ছবি: এএফপি

হ্যামিল্টন টেস্টে নিউজিল্যান্ডের কাছে এক ইনিংস ও ৫২ রানে হেরেছে বাংলাদেশ

আরেকবার ইনিংস ব্যবধানে হারের চোখরাঙানি ছিল কালই। অনেকে তো ভেবেছিলেন, আজ প্রথম সেশনেই তা নিশ্চিত হবে। মাহমুদউল্লাহ-সৌম্য মিলে এই ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করেছেন, আবার করেননি। না, হ্যামিল্টন টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ এক ইনিংস ও ৫২ রানের ব্যবধানেই হেরেছে। কিন্তু এই হারের আগে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ সেশনে টানতে পেরেছে বাংলাদেশ। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় বাংলাদেশ এই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই করতে পেরেছে সৌম্য-মাহমুদউল্লাহর ২৩৫ রানের দুর্দান্ত এক জুটির কল্যাণে।

নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে ৭১৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণার পর ৪ উইকেটে ১৭৪ রানে কাল তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংস মিলিয়ে তখনো ৩০৭ রানে পিছিয়ে ছিল সফরকারি দল। কাল অপরাজিত থাকা মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্য আজ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে যতটুকু সম্ভব লড়াইয়ের চেষ্টা করেছেন। একসময় নিউজিল্যান্ডকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সম্ভাবনাও জেগে উঠেছিল। কিন্তু ১৬ রানের মধ্যে শেষ ৩ উইকেট পড়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে ৪২৯ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। তার আগে সৌম্য-মাহমুদউল্লাহর লড়াই অনেক দিন মনে রাখবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।

মাহমুদউল্লাহ-সৌম্যর লড়াই অনেক দিন মনে রাখবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। ছবি: এএফপি
মাহমুদউল্লাহ-সৌম্যর লড়াই অনেক দিন মনে রাখবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। ছবি: এএফপি

ঘুরে দাঁড়ানোর এই লড়াইয়ে প্রথম সেশনে দুর্দান্ত ব্যাট করেছেন সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ। তাঁদের দৃঢ়তায় প্রথম সেশনে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। উল্টো এই সেশনে ওভারপ্রতি গড়ে ৪.৬৯ হারে রান তুলেছেন দুজন। প্রথম সেশন শেষে ১৭১ রানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। এই সেশনে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিও তুলে নেন সৌম্য। এই সেঞ্চুরির আগে টেস্টে সৌম্যর সবশেষ ফিফটি দুই বছর আগে। দলের ভীষণ প্রয়োজনের মুহূর্তে সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে সৌম্য বুঝিয়ে দেন, অনেক দিন রানখরায় ভুগলেও চাপের মুহূর্তে তিনিও বুক চিতিয়ে লড়তে জানেন।

দ্বিতীয় সেশনে ১৩তম ওভারের মাথায় সৌম্য-মাহমুদউল্লাহর জুটি ভাঙেন ট্রেন্ট বোল্ট। ৫ ছক্কা ও ২১ চারে ১৭১ বলে ১৪৯ রান করা সৌম্যকে বোল্ড করেন বাঁহাতি এই পেসার। সৌম্যর নিশ্চয়ই দুঃখ থাকবে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকে তিনি অন্তত দেড় শ রানে রূপ দিতে পারেননি। তার আগে অবশ্য ৯৪ বলে সেঞ্চুরি তুলে ছুঁয়েছেন তামিম ইকবালের গড়া টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। সৌম্য ফেরার কিছুক্ষণ পর সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহও। লোয়ার অর্ডার নিয়ে শেষ দিকে একাই লড়াই করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ২২৯ বলের ইনিংসে ৩ ছক্কা ও ২১ চারে ১৪৬ রান করে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। তার আগে হাতে মাত্র ২ উইকেট রেখে ৪২৪ রান নিয়ে চা-বিরতিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। অর্থাৎ ইনিংস পরাজয় এড়াতে তখন মাত্র ৫৭ রানে পিছিয়ে ছিল দল।

কিন্তু চা-বিরতির পর মাত্র ৪ ওভার টিকেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ১০৩তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ ও ইবাদত হোসেনকে তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন টিম সাউদি। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ উইকেটের সব কটিই নিয়েছেন তিন কিউই পেসার বোল্ট (৫/১২৩), সাউদি (৩/৯৮) ও ওয়াগনার (২/১০৪)।