কম্বোডিয়ার মাটিতে কম্বোডিয়াকে হারাল বাংলাদেশ

জয়ের পর বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত
জয়ের পর বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত
>নমপেনে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিক কম্বোডিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচজুড়েই দাপুটে ফুটবল খেলেছেন জামাল-মাসুকরা

প্রতিপক্ষ স্বাগতিক কম্বোডিয়া। সঙ্গে প্রতিপক্ষ ছিল তপ্ত আবহাওয়া, কৃত্রিম ঘাসের মাঠও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো সমস্যাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। কম্বোডিয়াকে তাদেরই মাঠে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৮৩ মিনিটে ম্যাচের মীমাংসা করে দিয়েছেন বদলি মিডফিল্ডার রবিউল হাসান। এই জয়ে প্রায় পাঁচ মাস পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের ফেরাটা হলো দুর্দান্ত।

কম্বোডিয়ার বিপক্ষে আগের তিন ম্যাচে দুই জয়ের বিপরীতে এক ড্র ছিল বাংলাদেশের। জয়ের পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকায় খেলোয়াড়দের গলায় আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গেছে সব সময়ই। এর বিপরীতে শঙ্কা, উদ্বেগের চোরাস্রোতও যে ছিল না, তা বলা যাবে না! শক্তিতে এগিয়ে থাকা কম্বোডিয়াকে তাদের মাঠে হারানো যাবে তো? নমপেনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে জামাল ভুইয়াদের দাপট দেখে মনে হতে পারে, খামোখাই দুশ্চিন্তা হয়েছিল বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। ম্যাচে একবারও বাংলাদেশের রক্ষণভাগ কাঁপাতে পারেনি স্বাগতিকেরা। নিজেদের অর্ধে ছোট ছোট পাস খেলে দর্শকদের দৃষ্টি কুড়াতে পারে। তা দেখতে সুন্দর হলেও বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেনি।

বিশ্ব ফুটবল র‌্যাঙ্কিংয়ে কম্বোডিয়ার অবস্থান ১৭২ আর বাংলাদেশ ১৯২। ২০ ধাপ এগিয়ে থাকা কম্বোডিয়া মাঠে বাংলাদেশের চেয়ে কোনো বিভাগেই এগিয়ে ছিল না। প্রথমার্ধে দুই দল সমান দাপটেই খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে লাল-সবুজেরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় নিজেদের মুঠোয়। এশিয়ান গেমসে দেখা গিয়েছিল ম্যাচের শেষ দিকে বাংলাদেশের ফুটবলাররা আরও টগবগে হয়ে ওঠে। আজ নমপেনেও দেখা গেল তা-ই।

দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় না। যদি স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন প্রথমার্ধে দুইটি গোলের সুযোগ নষ্ট না করতেন। ১৫ মিনিটে মাসুক মিয়া জনির সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান খেলে বক্সে ঢুকে শট নিয়েছিলেন জীবন। কিন্তু তাঁর শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার। বিরতিতে যাওয়ার আগে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটিও নষ্ট করেছেন জীবন। এবারের বলের জোগানদাতা সেই জনি।

আগেই বলা হয়েছে, দ্বিতীয়ার্ধে ছিল বাংলাদেশের পূর্ণ দাপট। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে গোলমাল পাকিয়ে ফেলায় পরিকল্পিত আক্রমণগুলো ফুল হয়ে ফুটতে পারেনি। ফলে দাপটের সঙ্গে গোল ব্যবধানটা মানানসই হচ্ছে না। মতিন মিয়া বারবার ডান প্রান্ত দিয়ে তেড়েফুঁড়ে ঢুকেছেন। কিন্তু ভালো জায়গায় ক্রসগুলো ফেলতে পারেননি। প্রথমে বদলি হিসেবে নামেন রবিউল। উদীয়মান এই মিডফিল্ডার মাঠে যাওয়ার পরে বাংলাদেশের খেলার গতি যায় বেড়ে। এর পরই বদলি হিসেবে পাঠানো হয় মাহবুবুর সুফিলকে। দুই বদলির কল্যাণেই এসেছে জয়সূচক গোলটি। সুফিল বাম প্রান্ত দিয়ে ঝড়ের বেগে বক্সে ঢুকে আলতো করে কাট ব্যাক করেছিলেন, জটলা থেকে রবিউলের প্লেসিংয়ে গোল।

কম্বোডিয়ার সঙ্গে আগের তিন সাক্ষাতে দুবারই জিতেছে বাংলাদেশ। তবে এবারই প্রথম তাদের ঘরের মাঠে হারানো। ২০০৬ সালে ঢাকায় এএফসি চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশের জয় ছিল ২-১ গোলে। পরের বছর দিল্লিতে নেহরু কাপে ১-১ গোলে ড্র। আর ২০০৯ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে বাংলাদেশের জয় ছিল ১-০ গোলে।