ক্রিকেটই সারিয়ে তুলছে মনের ক্ষত

নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরেই সৌম্য-সাদমান ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে। ছবি: প্রথম আলো
নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরেই সৌম্য-সাদমান ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে। ছবি: প্রথম আলো
>ক্রাইস্টচার্চের ঘটনা পেছনে ফেলে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা সামনে তাকাচ্ছেন। মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে অনেকে ক্রিকেটকেই বেছে নিয়েছেন। ‘ট্রমা’ কাটিয়ে উঠছেন দ্রুতই

ক্রাইস্টচার্চের ঘটনা দ্রুত ‘অতীত’ হওয়া মোটেও সহজ নয়। যখন একাকী সময় কাটে বাসায়, হয়তো চোখের সামনে ভেসে ওঠে ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা। যে হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন তাঁরা। মানসিক এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ দলের অনেক ক্রিকেটার ক্রিকেটকেই বেছে নিয়েছেন। বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ থাকার পরও তাঁরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে। এতে উপকারও পাচ্ছেন।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে খেলতে নেমেই মুমিনুল হক কাল ৫৫ রান করেছেন। মোহামেডানের বিপক্ষে তাঁর ব্যাটিং দেখে কাল মনেই হয়নি এত বড় একটা ‘ট্রমা’ কাটিয়ে ফিরেছেন। কীভাবে পারছেন দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত হতে, সেটিই বললেন বাঁহাতি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান, ‘শুরুতে অনেক ভয় লেগেছিল। ওখানে খুব আতঙ্কিত ছিলাম। যখন বাংলাদেশে এলাম, অনেকটাই ঠিক হয়ে গেছে। বাসায় এসে মা-বাবাকে পেয়েছি। ওনারা কক্সবাজার থেকে ঢাকার বাসায় এসেছেন। পরিবারের কাছে ফিরে সবকিছু স্বাভাবিক মনে হয়েছে। মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা গেছে অনেকটাই। তবে পুরোপুরি পেরেছি সেটা বলা বোধ হয় ঠিক হবে না।’

যখন একা থাকেন, কোনো কাজ থাকে না, তখনই মুমিনুলের স্মৃতিতে ফিরে ফিরে আসে ভয়াল স্মৃতি, ‘খেলার সময় কিছুই মনে পড়ে না। যখন একা থাকি, তখন মনে পড়ে। নিউজিল্যান্ড থেকে ফিরে খেলা শুরু করেছি এ কারণেই। কিছুতে জড়িয়ে ফেললে খুব একটা মনে পড়ে না।’

সৌম্য সরকারও বললেন একই কথা। বাসায় যখন একা সময় কাটে বা ব্যস্ততা থাকে না, তখন বেশি মনে পড়ে ক্রাইস্টচার্চের নৃশংস ঘটনা। মুমিনুলের মতো প্রিমিয়ার লিগে তিনি ব্যস্ত হয়েছেন এ কারণেই, ‘বিশ্রাম নিয়ে কী হবে? খেলাই তো আমার কাজ। খেললেই সবকিছু স্বাভাবিক মনে হবে, এ চিন্তা করেই খেলছি। এ মুহূর্তে মাঠে থাকলেই ভালো লাগে। বাসায় একা থাকলে বরং ওই ঘটনা বেশি মনে পড়ে। অনুশীলন, ম্যাচ, পারফরম্যান্স—এসবের মধ্যে জড়িয়ে থাকলে ভাবনায় অন্য কিছু আর আসে না।’

তরুণ বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলামের কাছে অবশ্য ক্রাইস্টচার্চের ঘটনা এখন দূর অতীত। তাঁর পুরোপুরি মনোযোগ প্রিমিয়ার লিগে। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে সাদমান বললেন, দেশে ফেরার পরই সব স্বাভাবিক হয়ে গেছে তাঁর কাছে, ‘এখন খেলা নিয়েই চিন্তা করছি। বাকি সব ভুলে গেছি! খেলা আর পরিবারের সঙ্গে থাকলে এসব এমনি ভুলে থাকা যায়। সত্যি, ওই ঘটনা খুব একটা মনেও পড়ে না। খেলায় মনোযোগ দিতেও সমস্যা হচ্ছে না। আমি ফিরেই তো অনুশীলনে যোগ দিয়েছি। এক দিনও বিশ্রাম নিইনি। বাসাতেই তো থাকি না। খেলা-অনুশীলন না থাকলে ঘোরাঘুরি করে সময় কাটে।’