মুশফিক বললেন তিন 'স'-এর গল্প

মাটিডালি ক্রীড়া চক্র আয়োজিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ঝোপগাড়ি স্পোর্টিং ক্লাবের দলীয় ম্যানেজারের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। মাটিডালি, বগুড়া সদর, ৪ এপ্রিল। ছবি: সোয়েল রানা
মাটিডালি ক্রীড়া চক্র আয়োজিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ঝোপগাড়ি স্পোর্টিং ক্লাবের দলীয় ম্যানেজারের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। মাটিডালি, বগুড়া সদর, ৪ এপ্রিল। ছবি: সোয়েল রানা

দুই শর গল্প তো তিনি ঢের বলেছেন। বাংলাদেশের শুধু নয়, টেস্ট ইতিহাসের প্রথম উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে দুটি ডাবল সেঞ্চুরি যে আছে মুশফিকুর রহিমের। বগুড়ার ছেলে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে গেছেন! সেই উঠে আসার গল্প তিন ‘স’ দিয়ে শোনালেন মুশফিক। জীবনের তিনটি মূলমন্ত্র হলো: স্বপ্ন, সাধনা ও সাফল্য।

বিকেএসপিতে ভর্তির আগে ২০০০ সাল পর্যন্ত ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের জীবন ছিল বগুড়ার মাটিডালি ক্রীড়া চক্র ঘিরে। ব্যাট-বল হাতে অনুশীলন, ক্লাব পর্যায়ে খেলা আর আড্ডা থেকে শুরু করে সবকিছু। ১৯৯৮ সালে এই ক্লাবের হয়েই শিকারপুর স্কুলমাঠে ক্রিকেটের কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল। মুশফিকুর রহিম ভুলতে পারেন না মাটিডালি ক্রীড়া চক্রের ভূমিকার কথা। প্রিয় ক্লাবের প্রতি ভালোবাসার টানেই বৃহস্পতিবার ক্লাব মাঠে হাজির হয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান।

মাটিডালি ক্রীড়া চক্র আয়োজিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে। দর্শক আসনে বসে পুরোটা ম্যাচ দেখার পাশাপাশি পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মুশফিক। প্রিয় তারকাকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিল দর্শক, খেলোয়াড় ও আয়োজকেরা। টুর্নামেন্টের ফাইনালে মাটিডালি সুপার কিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ঝোপগাড়ি স্পোর্টিং ক্লাব।

শৈশবস্মৃতির প্রিয় ক্লাব মাঠে টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মুশফিক। প্রিয় ক্লাব আর প্রিয় মাঠকে ঘিরে নানা স্মৃতি তুলে ধরেন। শোনান ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম হয়ে ওঠার গল্প। নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের মাঝেই একেকজন মুশফিক লুকিয়ে রয়েছে। জীবনে লক্ষ্য স্থির করো। স্বপ্ন দেখো। কঠোর সাধনা ও পরিশ্রম করো। খেলা আর মাঠে মগ্ন হও। অনুশীলন করো। দেখবে, সাফল্য ছোঁয়া কঠিন হবে না।’

মুশফিক বলেন, ‘বাংলাদেশের মানচিত্রকে বিশ্বজুড়ে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটের এই সাফল্যের পেছনে সরকারের নানা সহযোগিতা রয়েছে। বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। সাফল্যের শিখরে উঠতে হবে। তোমরা লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাও। অনুশীলন করো। ক্রীড়াচর্চা অব্যাহত রাখো।’

মাটিডালি ক্রীড়া চক্রের সভাপতি ও মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ক্লাবের সম্পাদক ফারুকুল হাসান, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেন, পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মুশফিকুর রহিমের চাচা মেজবাহুল হামিদ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরিফুর রহমান।

এমকেসি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাটিডালি সুপার কিংস ১২৪ রান করে। জবাবে ঝোপগাড়ি স্পোর্টিং ক্লাব জেতে ৬ উইকেটে। বিজয়ী দলের মশিউর ম্যান অব দ্য ম্যাচ এবং সুপার কিংসের রকি ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট নির্বাচিত হন।