কিছু ক্রিকেটারকে নিয়ে দুশ্চিন্তা গোপন করছেন না নির্বাচকেরা

প্রিমিয়ার লিগে সৌম্যর পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তায় নির্বাচকেরা। ছবি: প্রথম আলো
প্রিমিয়ার লিগে সৌম্যর পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তায় নির্বাচকেরা। ছবি: প্রথম আলো
>ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের লিগ পর্ব শেষ হলো আজ। জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা কেমন খেললেন এই পর্বে? তারকাদের পারফরম্যান্স বলার মতো নয় বলেই কপালের চিন্তার ভাঁজ নিয়ে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও বিশ্বকাপের দল গড়তে হচ্ছে নির্বাচকদের

বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনাপ্রধান আকরাম খান কাল বলেছেন, ‘কিছু খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা চিন্তিত।’ কিছু খেলোয়াড় বলতে জাতীয় দলের কিছু খেলোয়াড়, যাঁদের পারফরম্যান্স ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোটেও ভালো নয় বলেই আকরামের এই দুশ্চিন্তা।

এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগকে ধরা হচ্ছিল জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের প্রস্তুতির দারুণ এক মঞ্চ। দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় নিজেকে সেই মঞ্চে ঝালিয়ে নিতে পারেননি ভালোভাবে। ধারাবাহিকভাবে অধারাবাহিক ছিলেন সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ মিঠুনের মতো বাংলাদেশ দলের টপ ও মিডল অর্ডার সামলানো ব্যাটসম্যানরা। ৮ ম্যাচে ২২.২৫ গড়ে সৌম্য করেছেন ১৭৮ রান। সেঞ্চুরি দূরে থাক, একটা ফিফটিও নেই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের। সাব্বিরের অবস্থা সৌম্যর মতোই, ১০ ম্যাচে ২৭.৭১ গড়ে করেছেন ১৯৪ রান। ফিফটি ১টি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ভালো করা মিঠুনের রান ৫ ম্যাচে ১২৮, গড় ২৫.৬০। সর্বোচ্চ করেছেন ৪০।

প্রিমিয়ার লিগে জাতীয় দলের বোলারদের পারফরম্যান্স যে খুব ভালো, সেটিও বলার উপায় নেই। চোটে পড়ার আগে রুবেল নিয়েছেন ৬ ম্যাচে ৭ উইকেট। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা এক ম্যাচে ৬ উইকেটে পেয়েছেন, তবে ৯ ম্যাচের ৬টিতেই থেকেছেন উইকেটশূন্য। চোট নিয়ে খেলতে থাকা সাইফউদ্দীনই যা একটু সফল, ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১২ উইকেট। যাঁদের কথা হলো, প্রত্যেকেই এবার প্রিমিয়ার লিগ খেলছেন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হয়ে। জাতীয় দলের মোড়কে খেলেও আবাহনী যে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকা লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের চেয়ে ৪ পয়েন্টে পিছিয়ে, সেটির প্রধান কারণ তারকা ক্রিকেটারদের নিষ্প্রভ থাকা।

চোটে পড়ার আগে রুবেল ভালো বোলিং করতে পারেননি। ছবি: প্রথম আলো
চোটে পড়ার আগে রুবেল ভালো বোলিং করতে পারেননি। ছবি: প্রথম আলো

আবাহনীর শিরোপা ধরে রাখতে পারবে কি না—চিন্তা সেটি নিয়ে নয়। এই ক্লাবের হয়ে খেলা বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের ভালো করা দরকার ছিল বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ঠিকভাবে নিয়ে রাখতেই। ম্যাচ খেলার চেয়ে বড় অনুশীলন তো আর কিছু হতে পারে না। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ সামনে রেখে নির্বাচকেরা দল গড়তে গত কিছুদিনে দফায় দফায় বসছেন। কিন্তু কিছু নামের পাশে জোরের সঙ্গে ‘টিক’ দিতে পারছেন না। বিশেষ করে কজন তরুণ খেলোয়াড়কে নিয়ে বেশ চিন্তায় নির্বাচকেরা। এক-দুই ক্রিকেটার ছন্দ হারিয়ে ফেললেও কথা।

একসঙ্গে পাঁচ-ছয়জন খেলোয়াড়ের ব্যাটে রান নেই, ধারাবাহিক ভালো বোলিং করতে পারছেন না। কাল বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন তাই বললেন, ‘একজন খেলোয়াড় যেখানেই খেলতে যাক না কেন, বিশেষ করে বিশ্বকাপে, তাকে কিন্তু আত্মবিশ্বাসী থাকতে হবে। ব্যাটসম্যান কিংবা বোলার, সঙ্গে যদি রান বা উইকেট থাকে, তাহলে ওই খেলোয়াড় একটা ভালো অবস্থায় থাকে।’

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ ও বিশ্বকাপের আগে কজন খেলোয়াড় ‘ভালো অবস্থায়’ আছেন, সেটি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আরেকটু আশ্বস্ত হতে সুপার লিগের এক-দুইটি ম্যাচ দেখতে চাচ্ছেন নির্বাচকেরা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পড়তে হবে কেন তাঁদের? উত্তরটা সহজ—হাতে যে বিকল্প খেলোয়াড় খুব কম। ঘরোয়া ক্রিকেট ভালো না খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঠিকই খেলে দেবেন—অতীতে অনেকবার এ আশা নিয়ে দল গড়েছেন নির্বাচকেরা। হয়তো এবারও তা-ই করবেন।