ব্যাট হাতে নামার আগেই ঘাবড়ে গিয়েছিলেন সৌম্য

ডাবল সেঞ্চুরির পর সৌম্য। ছবি: প্রথম আলো
ডাবল সেঞ্চুরির পর সৌম্য। ছবি: প্রথম আলো
>সৌম্য দুর্দান্ত খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে। আজ তো লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি। অথচ অসাধারণ এ ইনিংস খেলার আগে ঘাবড়েই গিয়েছিলেন তিনি

যাঁর ব্যাট আজ এতটা দ্যুতি ছড়াল, যাঁর ব্যাটে দেখা গেল এমন দুর্দান্ত ইনিংস—তিনিই কি না ঘাবড়ে গিয়েছিলেন ব্যাটিংয়ে নামার আগে! সৌম্য ঘাবড়ে গিয়েছিলেন আসলে শেখ জামাল ধানমন্ডির স্কোরটা দেখে।

আবাহনীর শিরোপা নিশ্চিত করার ম্যাচে ৩১৮ রানের বড় লক্ষ্যই দিয়েছিল শেখ জামাল। এত রান তাড়া করতে হবে ভেবে একটু ঘাবড়েই গিয়েছিলেন সৌম্য। সেটি সামলে কীভাবে অপরাজিত ২০৮ রানের ইনিংস খেললেন, ম্যাচশেষে বলছিলেন বাঁহাতি ওপেনার, ‘৩০০ রানের বেশি লক্ষ্য, একটু নার্ভাসই ছিলাম । ৩০০ রানের বেশি তাড়া করা সব সময়ই কঠিন। ব্যাটিংয়ে যাওয়ার আগে ভাবছিলাম আগের ম্যাচে আমরা যখন ৩০০ রানের বেশি করছিলাম, ব্যাটিংয়ে নেমে রূপগঞ্জ একটু তাড়াহুড়ো করেছিল। পাওয়ার প্লেতে উইকেট খুইয়ে সেভাবে ওরা এগোতে পারেনি। এই উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো। আমরা পরিকল্পনা করছিলাম খুব স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলব। প্রথম ১০ ওভারে যদি ৪০ রানও হয়, কোনো সমস্যা হয়। এই উইকেটে যখন-তখন চালানো যায়। আমাদের সব ব্যাটসম্যানের এই সামর্থ্য আছে। বল খুব ভালো ব্যাটে এসেছে। চেষ্টা করেছি বড় জুটি করতে যেন প্রথম ২০ ওভারের মধ্যে এমন কিছু করি যাতে পরে ৩০ ওভার সহজ হয়।’

দুর্দান্ত ইনিংস খেলে মাশরাফির অভিনন্দন পেলেন সৌম্য। ছবি: প্রথম আলো
দুর্দান্ত ইনিংস খেলে মাশরাফির অভিনন্দন পেলেন সৌম্য। ছবি: প্রথম আলো

সৌম্য স্নায়ুচাপে ভুগেছেন ডাবল সেঞ্চুরির আগেও। সেঞ্চুরির আগে স্নায়ুচাপে ভুগলে ‘নড়বড়ে নব্বই’ বলা হয়। কিন্তু ডাবল সেঞ্চুরির আগে নার্ভাস হলে, সেটিকে কী বলা যায়? যেটিই বলা হোক, এই পর্বটাও সৌম্য সরকার পেরিয়ে গেছেন সাফল্যের সঙ্গে। কঠিন ধাপ পেরিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বলছিলেন বাঁহাতি ওপেনার, ‘১৯০ রান পর্যন্ত কোনো স্নায়ুচাপ অনুভব হয়নি। এরপরে একটু ছিল। তখন মনে হচ্ছিল, না, সুযোগটা ছাড়া যাবে না। যেকোনো উপায়ে করতেই হবে। একটু নার্ভাসনেস কাজ করছিল, কোনো কারণে যদি বাই রান হয়ে যায় অমি (জহুরুল ইসলাম) ভাইয়ের (সেঞ্চুরি) হবে না, আমারও হবে না (ডাবল সেঞ্চুরি)। তখন দুজনই এক-এক করে এগোচ্ছিলাম। একই সঙ্গে এগোচ্ছিলাম।’

প্রিমিয়ার লিগে টানা ব্যর্থ হচ্ছিলেন। ১১ ম্যাচে করেছিলেন ১৯৭ রান। টানা দুই ইনিংসে ১০৭ ও অপরাজিত ২০৮ রানের ইনিংস খেলে চলে এসেছেন সেরা দশে। শেষের দিকে জ্বলে ওঠার রহস্য উন্মোচন করলেন সৌম্য, ‘ব্যাটিংয়ে কোনো পার্থক্য নেই। আমার ব্যাটিং আমার কাছেই আছে। আগের ম্যাচগুলোয় রান করিনি। শেষে করেছি। প্রথমে আক্ষেপ হচ্ছিল, ৩০-৪০ করে আউট হচ্ছিলাম। মাঝে কিছু ম্যাচ ১, ২ ,০ রানে আউট হয়েছি। পরে মনে হলো ১, ২, ০ শূন্যর চেয়ে ৩০-৪০ ভালো, ওটাতে আগে ফিরতে হবে। যখন ৩০-৪০ রান করেছি, তখন মনে হয়েছে এই রান করে আউট হওয়া যাবে না। আজ ৫০ করতেই হবে। মাঠেই পরিকল্পনা করেছি। আগ থেকেই পরিকল্পনা করে হচ্ছিল না।’