পিএসজিকে আর টাকা দেবে না কাতার?

কাতারের অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে পিএসজির জার্সিতে এ দুজন থাকবেন? ছবি: এএফপি
কাতারের অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে পিএসজির জার্সিতে এ দুজন থাকবেন? ছবি: এএফপি

ইউরোপিয়ান ফুটবলে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই। কাতারের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে অজস্র অর্থ ঢালছে তারা। ফুটবলের দলবদলের বিশ্বরেকর্ডের শীর্ষ দুটি রেকর্ডই এখন তাদের। সেটাও একই দলবদলে করেছে তারা, সেটাও বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের মতো দুই দলের কাছ থেকে খেলোয়াড় কেড়ে নিয়ে। নেইমার-এমবাপ্পেকে কেনার আগ থেকেই দলবদলের বাজারে শক্তিশালী ছিল পিএসজি। তবে ২০১৭ সালের পর থেকে পিএসজি মানেই যেন অন্য দলের জন্য আতঙ্কের নাম। সে অবস্থা বদলে যেতে পারে এবার।

ফ্রেঞ্চ পত্রিকা লে প্যারিসিয়ান জানিয়েছে, এ মৌসুমের ব্যর্থতা কাতারকে পিএসজি নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ষোলো পার হতে না পারা ও ফ্রান্সের দুটি কাপেই শিরোপা জিততে না পারার ব্যর্থতাকে কাতার নিজেদের দুর্নাম হিসেবে দেখছে। ফলে পিএসজির সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি যে চুক্তি সেটা বহাল রাখবে কি না, এ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে তারা।

কাতার বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের অঙ্গসংগঠন কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট। এই প্রতিষ্ঠানটিই ২০১২ সালে পিএসজির স্বত্ব কিনে নিয়েছিল। রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনার মতো সমীহ করার মতো এক দল গঠন করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। শুধু সমীহ করাই নয়, ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতা বা চ্যাম্পিয়নস লিগে সাফল্য অর্জনও তাদের উদ্দেশ্য ছিল, এ লক্ষ্যেই কার্লো আনচেলত্তির মতো কোচ এনেছিল তারা। জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ, ডেভিড বেকহাম, থিয়াগো সিলভা, ডেভিড লুইজ, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার মতো খেলোয়াড়দের ভিড় করিয়েছিল তারা। ২০১৭ সালে তো ফুটবল বিশ্বকে হতবাকই করে দিয়েছিল এমবাপ্পে ও নেইমারকে দলে টেনে। দানি আলভেজ ও জিয়ানলুইগি বুফনের মতো চ্যাম্পিয়নদেরও দলে টেনেছে তারা। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ার্টার ফাইনালই পেরোতে পারেনি দলটি। এ নিয়ে টানা তিনবার তো কোয়ার্টার ফাইনালেই উঠতে পারল না।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাঠে গিয়ে ২ গোলের জয়ের পরও নিজেদের মাঠে হেরেছে পিএসজি। এর আগেই ফ্রেঞ্চ লিগ কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে তারা। লিগ ওয়ান বিশাল ব্যবধানে জিতে নিলেও ফ্রেঞ্চ কাপেও শিরোপা ধরে রাখতে পারেনি দলটি। এ মৌসুমটা তাই কিউআইএর চোখে ব্যর্থই। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা তাই অধৈর্য হয়ে উঠেছেন। তাঁদের চোখে এসব ব্যর্থতা কাতারের জন্য ভালো কোনো ঘটনা নয়। এতে কাতারেরই দুর্নাম হচ্ছে। ফলে পিএসজিকে নিয়ে যে মহাপরিকল্পনা ছিল তাদের, সেখান থেকে পিছু হটতে চাইছে তারা। অন্তত সাময়িকভাবে অর্থায়ন কমিয়ে দেওয়ার চিন্তা তাদের।

এ ছাড়া অনেক অর্থ ঢালার পর এবং পিএসজিকে একটি ব্র্যান্ড বানানোর পরও ফ্রান্সে যেভাবে পিএসজির সমালোচনা করা হয় সেটা পছন্দ হচ্ছে না গ্রুপটির। ইউরোপে পিএসজি কখনো বড় দল হয়ে উঠতে পারবে কি না, এ নিয়েও সন্দেহ জাগছে কাতার বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের। ফলে দলবদলের বাজারে শক্তি কমে আসার সমূহ সম্ভাবনা কাতারের।