মাশরাফি স্মরণ করলেন 'দেশে রেখে আসা সমর্থকদের'ও

বল করেছেন মাত্র ৫ ওভার। নেতৃত্ব দিয়ে আজ দলকে জিতিয়েছেন মাশরাফি। ছবি: এএফপি
বল করেছেন মাত্র ৫ ওভার। নেতৃত্ব দিয়ে আজ দলকে জিতিয়েছেন মাশরাফি। ছবি: এএফপি

খেলা কি ওভালে হচ্ছে, নাকি মিরপুরে? সেই সুদূর বিলেতের গ্যালারিটাই তো এক টুকরো বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল আজ। গ্যালারির সমর্থকদের হতাশ হতে হয়নি। বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে শুরু করেছে বিশ্বকাপ মিশন। মাশরাফি বিন মুর্তজা ম্যাচ শেষে এই সমর্থকদের কথা বললেন। ভুললেন না, দেশের সমর্থকদের কথাও। বিশেষ ধন্যবাদ জানালেন।

আয়ারল্যান্ড থেকে নিয়ে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজের আত্মবিশ্বাস যে খুব কাজে দিয়েছে প্রথম ম্যাচে, জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সে কথা মাশরাফি শুরুতেই বললেন, ‘জয় দিয়ে শুরু করাটা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। আয়ারল্যান্ডে আমরা খুব ভালো একটা সফর কাটিয়ে এসেছি। সেই রেশটা ধরে রাখার দরকার ছিল। ব্যাটসম্যানরা সেই ছন্দটা ধরে রেখেই শুরুটা এনে দিয়েছিল।’

এই ম্যাচে বাংলাদেশ ৩৩০ রান তুলেছিল। ওয়ানডে যেটি তাদের নতুন সর্বোচ্চ স্কোর। ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের মতো আসরে প্রথম ম্যাচেই নিজেদের স্কোরটা নতুন করে লেখানো এ তো দারুণ কিছু। মাশরাফি বললেন, ‘টস হেরে ব্যাটিং পাওয়াটাও দারুণ কাজে লেগেছে। অবশ্য এটা এমন একটা উইকেট, এর আগে এখানে একটা ম্যাচ হয়ে গেছে। তাই টস জিতলেও দ্বিধা কাজ করত। ব্যাটিং নেব নাকি বোলিং। মুশফিক তো সব সময়ই এমন ইনিংস খেলে দেয়, যেখানে ওর স্ট্রাইক রেট খুব উঁচুতে থাকে। সাকিবও কী দারুণ ব্যাটিং করেছে। তবে বিশেষ করে সৌম্যের কথা বলতেই হবে। শুরুতে সৌম্য যে ছন্দটা ঠিক করে দিয়েছিল, সেটাই মাহমুদউল্লাহ-মোসাদ্দেক মিলে শেষ টেনেছে।’

কিন্তু ৩৩০ রান করেও বাংলাদেশ স্বস্তিতে ছিল না। জিততে হলে ক্রিকেট বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড করতে হবে—এই পরিসংখ্যানও খুব একটা ভরসা জোগাচ্ছিল না। ভালো বোলিং না করলেই তো সর্বনাশ! মাশরাফি বোলিংয়ে দারুণ এক ফন্দি এঁটেছিলেন। বোলারদের বারবার ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে ব্যবহার করেছেন। ধারাভাষ্যকারেরা তাঁর এই কৌশলকে বেশ প্রশংসার চোখে দেখেছিল। ম্যাচ শেষেও মাশরাফিকে করা হলো প্রশ্নটা।

মাশরাফি বললেন, ‘এই স্কোর গড়েও নির্ভার থাকার উপায় ছিল না। আমরা জানতাম, আমাদের ভালো জায়গায় বোলিং করতে হবে। কারণ, এটা ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো একটা উইকেট ছিল। তাই একের পর এক বোলারকে আক্রমণে পরিবর্তন করেছি, যেন ঠিক সময়ে উইকেট তুলে নিতে পারি। ভালো দিক হলো, পরিকল্পনাটা কাজে দিয়েছে। ঠিক সময়ে আমরা উইকেট তুলে নিতে পেরেছি। এখানেও স্পিনারদের কৃতিত্ব আছে। ওরাই চাপটা তৈরি করে দিয়েছিল। মোস্তাফিজ আর সাইফ শেষটা টেনে দিয়েছে।’

দুই দিন বিরতি দিয়েই বাংলাদেশ আবার নেমে পড়বে মাঠে। ওভালেই বাংলাদেশ পরের ম্যাচটা খেলবে, ৫ জুন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচেও এমন সমর্থন চায় বাংলাদেশ, ‘দর্শক আজ আমাদের সঙ্গে সব সময় ছিল। বাংলাদেশের সব সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আশা করি, আমাদের বাকি ম্যাচগুলোতেও এভাবে মাঠে এসে সমর্থন দিয়ে যাবে। আর দেশে যাঁরা টিভিতে খেলা দেখছিলেন, তাঁরাও প্রত্যাশা করেছিলেন আমরা জিতব। আশা করি, তাঁদের জন্য আরও একটা জয় এনে দিতে পারব। নিউজিল্যান্ড ম্যাচটাও ভালো হবে।’