'৯০ মাইল বেগে বল করলেই গ্রেট হওয়া যায় না'

টন্টনের প্রেসবক্সের কফি শপে সাংবাদিকদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিলেন কার্টলি অ্যামব্রোস। ছবি: রানা আব্বাস
টন্টনের প্রেসবক্সের কফি শপে সাংবাদিকদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিলেন কার্টলি অ্যামব্রোস। ছবি: রানা আব্বাস
বিশ্বকাপে বিবিসির জন্য ধারাভাষ্য দিতে এসেছেন। কিংবদন্তি ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলার কার্টলি অ্যামব্রোস নিজের কাজের ফাঁকে কথা বললেন সাংবাদিকদের সঙ্গে

স্যার কার্টলি অ্যামব্রোস ২০১৯ বিশ্বকাপে এসেছেন বিবিসির জন্য ধারাভাষ্য দিতে। টন্টনে পরিচিত এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে বেশ কয়েকবার এলেন প্রেসবক্সে। ৯৮ টেস্ট ও ১৭৬ ওয়ানডে খেলা অ্যামব্রোস খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন ভীষণ সাংবাদিকবিমুখ। আর এখন আড্ডা মারতে পছন্দ করেন। অবশ্য এখন তাঁর কাজই কথা বলা। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলার ফাঁকেই একটু সময় দিলেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি। প্রেসবক্সের নিচে কফিশপটায় বসে দেওয়া অ্যামব্রোসের সাক্ষাৎকার ছড়িয়ে পড়ল বিশ্বকাপ থেকে ফাস্ট বোলিংয়ে—

* বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ চলছে। একজন ক্যারিবিয়ান হিসেবে কী মনে হয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার যেতে পারবে সেমিফাইনালে?

কার্টলি অ্যামব্রোস: আশা তো করি অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ চারের একটি দল হবে। যতটা ভালো খেলবে আশা করেছিলাম, তাদের খুব একটা ভালো খেলতে দেখছি না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য কঠিনই হবে শেষ চারে যাওয়া। আমাদের এখনো কিছু ম্যাচ আছে। দেখা যাক কী হয়। তবে আশা করি তারা সেমিফাইনালে যাবে।

* বাংলাদেশের খেলা কি নিয়মিত দেখা হয়? তাঁদের পারফরম্যান্স যদি মূল্যায়ন করতে বলি কী বলবেন?

অ্যামব্রোস: ওয়েল, সাধারণত ক্রিকেট ফলো করি। জানি বাংলাদেশ সবশেষ ৯ দেখায় সাতবারই হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এ ম্যাচটা সহজ হবে না ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। বাংলাদেশ ভালো খেলছে, বিশেষ করে ওয়ানডেতে। আজ ভালো ক্রিকেটের আশায় আছি। দুই দলেরই আজ জেতা দরকার। আশা করছি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক ম্যাচই হবে।

* আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশের শেষ চারে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?

অ্যামব্রোস: হ্যাঁ, তাঁদের সম্ভাবনা আছে। তবে অবশ্যই জিততে হবে। এটা সহজ হবে না। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারত আর ইংল্যান্ড এরই মধ্যে শীর্ষে চারে ভালো অবস্থান করে নিয়েছে।

* বাংলাদেশের কোন বোলার আপনাকে বেশি মুগ্ধ করে?

অ্যামব্রোস: আমি এক-দুজন বোলারের ওপর চোখ রাখতে পছন্দ করি না। পুরো দলকেই দেখি। আমার মতে এক-দুজন খেলোয়াড় একটা দলকে জেতাতে পারে না। জিততে হলে দল হয়েই জিততে হয়।

* যাঁর সঙ্গে আপনার বোলিং জুটিটা জমত, কোর্টনি ওয়ালশ এখন বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ। বাংলাদেশের কোচ হিসেবে তাঁর কাছে কী প্রত্যাশা করেন?

অ্যামব্রোস: সে বাংলাদেশ দলে অনেক দিন হলো কাজ করছে। সবাই জানি ওয়ালশ দুর্দান্ত এক ফাস্ট বোলার ছিল, একজন কিংবদন্তি। তার যে জ্ঞান, আশা করি সেটি বাংলাদেশি বোলারদের কাজে দেবে। আমার মনে হয় সে যোগ দেওয়ার পর বোলারদের অনেক উন্নতি হয়েছে। বোলারদের উচিত ওয়ালশের জ্ঞানটা কাজে লাগানো। তার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের বোলারদের উন্নতি করতে অনেক সহায়তা করতে পারে।

* আশির দশকে কিংবা নব্বইয়ের দশকেও যত দুর্দান্ত ফাস্ট বোলার দেখা গেছে, আপনার কি মনে হয় এখন সেই ধারাটা আছে? আপনাদের মতো বিধ্বংসী ফাস্ট বোলারদের এখন কম দেখা যায়, কারণটা কী হতে পারে?

অ্যামব্রোস: না, এখনো ভালো ফাস্ট বোলার আছে। প্রত্যেক দলেই অন্তত দুজন ভালো ফাস্ট বোলার আছে।

* মিচেল স্টার্ক, ডেইল স্টেইন—এমন আর কজনের নাম বলতে পারবেন, যাঁরা যেকোনো সংস্করণে একাই প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে পারেন।

অ্যামব্রোস: আপনাকে বুঝতে হবে সব বোলার ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বোলিং করতে পারবে না। এটা অসম্ভব। আর ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বোলিং করলেই আপনি গ্রেট বোলার হতে পারবেন না। যদি পারেন (ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বোলিং করা) ব্যাটসম্যানরা তাতে আরও সতর্ক হয়ে যায়। আপনার দরকার অ্যাকিউরিসি, ঠিক জায়গায় বোলিং করা। বল নিয়ে কিছু করা আর উইকেট নেওয়া। ঘণ্টায় ৯০ মাইল গতিতে বোলিং করা ভালো, এতে ব্যাটসম্যানরা একটু হয়ত চিন্তায় থাকে। যদি ঠিক জায়গায় বোলিং না করতে পারেন, শুধু শুধু সময় নষ্ট। অ্যাকিউরিসি হচ্ছে বোলারদের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।