খেলতে না পারলে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি কাটা!

বিশ্বকাপে আরও একবার ভারতের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে পাকিস্তান। ছবি: এএফপি
বিশ্বকাপে আরও একবার ভারতের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে পাকিস্তান। ছবি: এএফপি
>ভারতের কাছে বিশ্বকাপে টানা সপ্তম ম্যাচ হারার পর নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটারেরা।

২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে টানা সপ্তমবারের মতো ভারতের কাছে হারায় সরফরাজদের ওপর রীতিমতো খেপেছেন সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটারেরা। একেকজন নিজেদের মতো করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তবে সিকান্দার বখত বাতলে দিয়েছেন অভিনব এক উপায়। প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে না পারলে ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি কেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন!

পাকিস্তানের হয়ে ২৬টি টেস্ট ও ২৭টি ওয়ানডে খেলেছেন ডানহাতি পেসার সিকান্দার। সরফরাজদের খেলা দেখে ভীষণ হতাশ এই সাবেক ক্রিকেটার। ওই হতাশা থেকেই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) পরামর্শ দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পারফর্ম করতে না পারলে খেলোয়াড়দের কেন্দ্রীয় চুক্তি ও ম্যাচ ফি থেকে টাকা কেটে নিতে।

খেলোয়াড়দের জাগিয়ে তুলতে টাকা কাটার বিকল্প নেই, এমনটাই মনে করছেন সিকান্দার, ‘এই খেলোয়াড়দের দায়িত্বশীল করে তোলার একটাই উপায় দেখতে পাচ্ছি আমি। সেটি হলো পারফরম্যান্সভিত্তিক টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা। তাদের এটা বুঝিয়ে দিতে হবে যে, চাপের মুখে পারফর্ম করতে না পারলে ম্যাচ ফি ও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে টাকা কেটে নিতে হবে।’

শুধু সিকান্দার নন, সরফরাজের দলকে ধুয়ে দিয়েছেন আরও বেশ কিছু সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার। সাবেক টেস্ট ব্যাটসম্যান বাসিত আলী যেমন মনে করছেন, বিরাট কোহলির পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন সরফরাজ। টসে জিতেও ব্যাটিং না নেওয়ায় আগেই পাকিস্তান অধিনায়কের সমালোচনা করেছিলেন শোয়েব আখতার। বাসিত আলী বলেছেন, ‘বিরাট কোহলি মূলত আমাদের সঙ্গে মাইন্ড গেম খেলেছে। টসে জিতলে সেও বোলিং নিত, তার এই বক্তব্যটা আসলে একটা ফাঁদ ছিল। আমরা সেই পাতা ফাঁদে পা দিয়েছি।’ সরফরাজের চেয়ে ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন কোহলি, এটাও বলেছেন পাকিস্তানের হয়ে ১৯ টেস্ট ও ৫০ ওয়ানডে খেলা বাসিত।

কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামও চুপ থাকতে পারেননি এমন হারের পর। সরফরাজদের গা ছাড়া মনোভাব নিয়েই যত খেদ ওয়াসিমের, ‘হার-জিত খেলারই অংশ। কিন্তু আমরা যেভাবে লড়াই না করেই ম্যাচটা ছেড়ে দিয়েছি, সেটাই আমাকে কষ্ট দিয়েছে।’ পাকিস্তান কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়াই বিশ্বকাপে এসেছে, এমনটাও মনে করছেন সাবেক অধিনায়ক ওয়াসিম, ‘দল নির্বাচনটাও আমার কাছে সঠিক মনে হয়নি। এ বিশ্বকাপের জন্য পাকিস্তানের কোনো পরিকল্পনা দেখতে পাচ্ছি না আমি।’

আরেক সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেছেন, অধিনায়কসহ কোনো পাকিস্তানি ক্রিকেটারের শরীরী ভাষা ইতিবাচক ছিল না, ‘আমরা কখনোই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ হারতে চাই না। কিন্তু আমাদের অধিনায়ক ও খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষা যথেষ্ট ইতিবাচক ছিল না।’

পাকিস্তানের সাবেক কোচ ও প্রধান কোচ মহসিন খান বলেছেন, পাকিস্তান এই ম্যাচ জিততে পারে, এই বিশ্বাসটা খোদ পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যেই ছিল না, ‘ভারতীয় দল যত শক্তিশালীই হোক না কেন, আমরাও যে ম্যাচটা জিততে পারি, সেই আত্মবিশ্বাস বা অনুপ্রেরণা কোনোটাই ছিল না পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের মধ্যে। আগে যখন আমাদের ক্রিকেটে এত সুযোগ-সুবিধা ছিল না, তখন কেবল আত্মবিশ্বাসের জোরেই ভারতকে হারিয়েছি আমরা। এখন বরং ভারতীয়দের মধ্যেই জয়ের ক্ষুধাটা বেশি দেখতে পাই আমি।’