দক্ষিণ আফ্রিকার 'শম্বুক' ২৪১

রানের গতি বাড়াতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। ছবি: এএফপি
রানের গতি বাড়াতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। ছবি: এএফপি
>নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৪১ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা

ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাঁচা-মরার ম্যাচে কেমন ব্যাটিং করল দক্ষিণ আফ্রিকা? প্রশ্নটা উঠতেই পারে। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের মতো দল। তাঁদের ব্যাটিং অর্ডার যথেষ্ট শক্তিশালী। এমন দলের বিপক্ষে কি লড়াই করার মতো পুঁজি গড়তে পারলেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা? ম্যাচের শেষ বলটি না হওয়া পর্যন্ত যেমন এ প্রশ্নের জবাব দেওয়া যাচ্ছে না, তেমনি দলটা দক্ষিণ আফ্রিকা বলেই বলতে হচ্ছে, প্রত্যাশার খুব কমই পূরণ করতে পারলেন ব্যাটসম্যানরা।

বৃষ্টিতে ভেজা মাঠের কারণে নির্ধারিত সময়ের অনেক পর খেলা শুরু হওয়ায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য নামিয়ে আনা হয় ৪৯ ওভারে। দক্ষিণ আফ্রিকা পুরো সময়টুকু ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৪১ রান তুলেছে। গোটা ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোনো সময়ই ওভারপ্রতি গড়ে ৬ রান করে তুলতে পারেননি দলটির ব্যাটসম্যানরা। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইকরেট ৭০-এর নিচে! রেসি ফন ডার ডুসেন আর ডেভিড মিলার মিলে রানের গতি বাড়ানোর যা একটু চেষ্টা করেছিলেন। ৩৭ বলে ৩৬ করে আউট হন মিলার। ৬৪ বলে ৬৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন ডার ডুসেন।

সোজা কথায় প্রোটিয়ার টপ–অর্ডার অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েই ব্যাট করেছে। ৮৩ বলে ৫৫ রান করা হাশিম আমলার স্ট্রাইকরেট ৬৬.২৬। ইনিংসের শুরু থেকেই শম্ভুক গতিতে ব্যাট করেছেন ব্যাটসম্যানরা। ৪০তম ওভার শেষেও প্রোটিয়াদের স্কোর ৪ উইকেটে ১৬৯। এখান থেকে শেষ ৬০ বলে মাত্র ৭২ রান তুলতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সত্যি বলতে দলটির ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে, জেতার তাগিদ দিয়ে মাঠে নেমেছে তো! ২০১৫ সালের পর থেকে ইংল্যান্ডের মাটিতে শেষ হওয়া ইনিংসে এটি চতুর্থ সর্বনিম্ন স্কোর। যদিও খেলা হয়েছে ৪৯ ওভার।

১০ ওভার শেষে মনে হচ্ছিল, বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়ায় কিউই পেসারদের একটু দেখেশুনে সামলানোর জন্যই ধীরেসুস্থে খেলছে ফাফ ডু প্লেসির দল। কিন্তু ম্যাচের পুরো সময় অতিরিক্ত সাবধানী ব্যাটিংই করার খেসারত গুণে সংগ্রহ বাড়াতে পারেনি প্রোটিয়ারা। তাদের ব্যাটিংয়ে একমাত্র অর্জন বলা যেতে পারে দ্বিতীয় দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে হাশিম আমলার ৮ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া। বিরাট কোহলির চেয়ে মাত্র এক ইনিংস বেশি খেলে (১৭৬) এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন আমলা। আমলার আগে মাত্র তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান ওয়ানডেতে ৮ হাজার রান পেরোতে পেরেছেন। মজার বিষয় হলো, আমলা যে মাঠে ৮ হাজার রান করলেন, এই বার্মিংহামেই ৮ হাজার রান ছুঁয়েছিলেন কোহলি।

রেকর্ড গড়া আমলা অবশ্য ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৮৩ বলে ৫৫ করে মিচেল স্যান্টনারের বল বুঝতে না পেরে সরাসরি বোল্ড হয়েছেন। ভরসা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি এইডেন মার্করামও। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের বলে ফেরার আগে করেছেন ৫৫ বলে ৩৮। কৃতিত্ব প্রাপ্য নিউজিল্যান্ডের বোলারদেরও। ৫৯ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন কিউই পেসার লকি ফার্গুসন। ১টি করে উইকেট কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, ট্রেন্ট বোল্ট ও মিচেল স্যান্টনার।