ভারতকে কাঁপিয়ে দিল আফগানিস্তান

ভারতকে শেষ পর্যন্ত শঙ্কায় রেখেছেন নবী। ছবি: এএফপি
ভারতকে শেষ পর্যন্ত শঙ্কায় রেখেছেন নবী। ছবি: এএফপি
২২৫ রানের লক্ষ্যে একটুর জন্য হেরে গেছে আফগানিস্তান। শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক করে আফগানিস্তানকে অলআউট করে দিয়েছেন মোহাম্মদ শামি।


বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১৯ জমে গেছে গতকালই। শ্রীলঙ্কা যখন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সবাইকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল হেডিংলিতে। আজ সাউদাম্পটনে তার চেয়ে বড় অঘটনের জন্ম নিতে যাচ্ছিল। আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে না পারায় বড় বাঁচা বেঁচে গেছে ভারত। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১১ রানে হারিয়ে তিনে চলে এসেছে ভারত। আর প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত হলো আফগানিস্তানের।

গতকাল ধীরগতির উইকেটের পূর্ণ সুযোগ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এ ধরনের উইকেটে ব্যাটিং করতে অনভ্যস্ত ইংল্যান্ড রান তাড়ার পরিকল্পনাই সাজাতে পারেনি। আজ ধীরগতির উইকেট কাজে লাগিয়ে ভারতের রানবন্যা আটকে দিয়েছে আফগানিস্তান। কিন্তু ২২৫ রানের লক্ষ্যে নেমে বোলিংয়ে দেখানো বুদ্ধির প্রয়োগ দেখাতে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। একমাত্র মোহাম্মদ নবী শেষ পর্যন্ত ভারতকে আতঙ্কে রেখেছিলেন। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণে প্রথম বলে চারও মেরেছিলেন। কিন্তু তৃতীয় বলে লং অনের লম্বা বাউন্ডারি দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে ফিরেছেন নবী (৫২)। আফগানিস্তানেরও আর অঘটনের জন্ম দেওয়া হয়নি।

ইনিংসের শুরুতে হজরতউল্লাহ জাজাই ফিরে গেলেও পথ হারায়নি আফগানিস্তান। গুলবদিন নাইব ও রহমত শাহ দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন। দলীয় ৬৪ রানে ধৈর্য হারালেন নাইব। পান্ডিয়াকে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন সবাইকে বিস্মিত করে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামা নাইব (২৭)।

আফগানিস্তান তাদের ইনিংসের অন্যতম সেরা সময় কাটিয়েছে এরপর। এ দলের সবচেয়ে ঠান্ডা মাথার দুজন রহমত ও হাশমতউল্লাহ শহীদি দারুণভাবে সামাল দিয়েছেন ভারতের দুই রিস্ট স্পিনারকে। কিন্তু ম্যাচটা এক ওভারেই ভারতের দিকে ঝুঁকিয়ে দিয়েছেন যশপ্রীত বুমরা। ৪২ রানের জুটির দুই অংশীদারকেই তিন বলের মধ্যে ফেরত পাঠিয়েছেন বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে। শেষ ওভারে হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট পেয়েও তাই ম্যাচ সেরার পুরস্কারটি বুমরার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারেননি মোহাম্মদ শামি।

শামি আজ প্রথম স্পেলে দুর্দান্ত বল করেছেন। জাজাইকে আউট করে আফগানিস্তানকে প্রথম ধাক্কা দিয়েছেন। শেষ ওভারে চাপের মুখে মাথা ঠান্ডা রেখে নবীকে আউট করে পরের দুই বলে হ্যাটট্রিক বুঝে নিয়েছেন, ১ বল হাতে রেখে অলআউট করে দিয়েছেন আফগানিস্তানকে। অথচ এই শামিই দলে ঢুকেছেন ভুবনেশ্বর কুমার চোটে পড়েছেন বলেই। ভারতের বোলিং বিভাগের গভীরতা এতটাই!

আজ এ গভীরতাই ভারতকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। বিরাট কোহলি ছাড়া অন্য ব্যাটসম্যানরা সবাই স্পিনের সামনে নতজানু হয়ে পড়লেন। অথচ এ উইকেটে যে চাইলেই স্পিনারদের খেলা যায়, সেটা বোঝা গেছে চাহাল ও কুলদীপ যাদবের মাত্র ২ উইকেট পাওয়ায়। রহমত ও শহীদির পর নবী ছাড়া আর কেউ বুদ্ধি খাটিয়ে ব্যাট করতে পারেননি। আর ভারতের বৈচিত্র্যময় বোলিং লাইনআপের বিপক্ষেও আফগানিস্তানের স্বভাবজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটিং কাজে আসেনি। নজিবউল্লাহ জাদরান ও রশিদ খান একটু সময় কাটিয়েছেন বটে কিন্তু বুমরা, পান্ডিয়া ও শামিদের সঙ্গে পেরে ওঠেননি তাঁরা।