দেশের হয়ে ম্যাচসেরার রেকর্ডও সাকিবের

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে সাকিব। ছবি: প্রথম আলো
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে সাকিব। ছবি: প্রথম আলো
>

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনবার ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন সাকিব আল হাসান। সেটি এবার টুর্নামেন্টের এক সংস্করণেই এবং এ তিন ম্যাচেই জিতেছে বাংলাদেশ

ক্রিকেট বিশ্বকাপে তাঁকে দেখে গ্রিক পুরানের সেই রাজার কথা মনে পড়তে পারে। গোলাপের দেশ ফ্রিজিয়ার রাজা মাইডাস এবং তাঁর সোনালি স্পর্শ—কোনো কিছু ছুঁলেই তা সোনায় পরিণত হতো! সাকিব আল হাসানও যেন এবার বিশ্বকাপে পুরানের সেই রাজা মাইডাস, মাঠে নামলেই উঠে আসছে সোনালি পারফরম্যান্স। এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যে তিন ম্যাচ জিতেছে, তার নায়ক তো সাকিব।

তবে সাকিবের নিজেরই এ কথায় আপত্তি আছে। একাই জিতিয়েছেন এমনটি তিনি ভাবেন না। সে কথা আরেকবার বলেছেন কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচসেরা হওয়ার পর। দলের সবারই কিছু না কিছু অবদান রয়েছে বলে মনে করেন ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানীয় এ অলরাউন্ডার। তা হয়তো আছে। কিন্তু সাকিব তাঁর পারফরম্যান্স দিয়েই ছাপিয়ে গেছেন সবাইকে। কাল যেমন টপকে গেলেন ইমরুল কায়েস আর মোহাম্মদ আশরাফুলকে। এর আগে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ দুবার ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ইমরুল ও আশরাফুল। সাকিব বিশ্বকাপের এক টুর্নামেন্টেই পেছনে ফেললেন তাঁদের।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু। সে ম্যাচে ৭৫ রানের পাশাপাশি ৫০ রানে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন সাকিব। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মহাকাব্যিক সেই রান তাড়া করে জয়ের ‘নিউক্লিয়াস’ ছিলেন সাকিব। সেঞ্চুরির পাশাপাশি ২ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচসেরাও। আর কাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফিফটির পর ঘূর্ণিফাঁস পরিয়েছেন প্রতিপক্ষকে। ২৯ রানে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ম্যাচসেরা কে—তা না বললেও চলে। সাকিব ছাড়া আর কে! অর্থাৎ এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তিনজয়েই ম্যাচসেরা সাকিব। বিশ্বকাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের এত দাপুটে খেলা এর আগে দেখা যায়নি। বাংলাদেশের জয়ে সাকিবের মতো টানা পারফর্ম করে যাওয়ার নজিরও নেই।

আর এই টানা পারফর্ম দিয়েই ইমরুল ও আশরাফুলের গড়া নজিরকে পেছনে ফেলেছেন সাকিব। ২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও হল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ইমরুল। তার আগের সংস্করণ ২০০৭ বিশ্বকাপে বারমুডা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচসেরা হন মোহাম্মদ আশরাফুল। সাকিব কাল তৃতীয়বারের মতো ম্যাচসেরা হওয়ার আগে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে ইমরুল ও আশরাফুলই সর্বোচ্চ দুবার ম্যাচসেরা হয়েছিলেন। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের আরও দুটি ম্যাচ আছে। সাকিবের যে ফর্ম, তাতে বাকি দুই ম্যাচেও সেরা খেলোয়াড় হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। সাকিবের হাতে যে এখন মাইডাস টাচ!