উইকেট পাওয়া নয়, দল জিতলেই খুশি মিরাজ

বার্মিংহামে সংবাদমাধ্যমের সামনে মিরাজ। ছবি: প্রথম আলো
বার্মিংহামে সংবাদমাধ্যমের সামনে মিরাজ। ছবি: প্রথম আলো
>বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে রান আটকানোর দায়িত্বটা ভালোই পালন করছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তেমন উইকেট না পেলেও দল জিতলেই সন্তুষ্ট এ স্পিনার

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০১৬ সালে মেহেদী হাসান মিরাজের আবির্ভাব ধূমকেতুর মতো। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অবিশ্বাস্য বল করেছিলেন। পরের বছর অভিষেক ঘটল সংক্ষিপ্ত সংস্করণে। রূপান্তরটা ঘটছে তার পর থেকেই। টেস্টে যে স্পিনার উইকেটশিকারি, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টিতে সেই বোলারই রান আটকানোর দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্বকাপের মিরাজকেই দেখুন, বাংলাদেশের সর্বশেষ তিন ম্যাচেই উইকেটশূন্য। এর মধ্যে বেশ কিপটে বোলিং করছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। মিরাজ উইকেট না পাওয়ায় দলের আর যা–ই হোক স্বস্তিতে থাকার কথা না!

তবে মিরাজের কাছে কিন্তু ব্যাপারটা এমন নয়। টিম হোটেলের সামনে বিষয়টি তিনি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘যখন বোলিংয়ে আসছি, বলা হচ্ছে বা চিন্তা করছি রান সেভ করলে অন্য প্রান্তে উইকেট বের করার সুযোগ আসে। দেখবেন বোলিংয়ে এলে চেষ্টা করি টাইট বোলিং করে চাপ দিতে। এতে করে অন্য প্রান্তে ঠিকই উইকেট চলে আসে। এটাই চেষ্টা করছি। হয়তো আমি উইকেট পাচ্ছি না, তবে দল জিতছে। এটাই আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া।’

ওয়ানডেতে কোনো ম্যাচে মিরাজ সবশেষ ৪ উইকেট পেয়েছেন গত বছর ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তবে আঁটসাঁট বোলিং বিচার করলে ২০১৯ বিশ্বকাপে মিরাজই বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে কিপটে বোলার। এ পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ইকোনমি রেট ৫.৪৫। মঙ্গলবার বার্মিংহামে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার আশা জিইয়ে রাখতে ম্যাচটা জেতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। মিরাজ মনে করেন, ভারতের বিপক্ষে মাঝের ওভারগুলোয় স্পিনারদের কৃপণ বল করে ভূমিকা রাখতে হবে, ‘স্পিনারদের চ্যালেঞ্জ সব সময়ই থাকবে। ভারতের বিপক্ষে জিতলে বড় পাওয়া হবে, পরের ধাপ সহজ হয়ে যাবে। স্পিনারদের কৃপণ বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। মাঝের ওভারগুলোয় ভালো করতে হবে।’

ইংলিশ কন্ডিশন ও উইকেট তেমন একটা স্পিনবান্ধব নয়। এমন উইকেটে ৬ ম্যাচে এ পর্যন্ত ৫ উইকেট নিতে পেরেছেন মিরাজ। স্পিন বিভাগে মিরাজের পরামর্শকের ভূমিকায় সাকিব আল হাসান তো আছেনই। মিরাজ মনে করেন, সাকিব একজন কিংবদন্তি এবং বোলিংয়ে তাঁর কাছ থেকে নানা পরামর্শও পেয়ে থাকেন। ‘সাকিব ভাই সব কন্ডিশনেই ভালো করেন। তিনি এটা বছরের পর বছর প্রমাণ করেছেন। তিনি যে একজন কিংবদন্তি, সেটি প্রমাণ করেছেন। এ বিশ্বকাপেই তো দেখতে পাচ্ছি। অবশ্যই ভালো লাগছে তাঁর সঙ্গে খেলছি, ড্রেসিংরুম শেয়ার করছি। আমাকে অনেক সাহায্য করেন। কোন উইকেটে কেমন বোলিং করব, না করব, এটা আমার অনেক বড় পাওয়া যে সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে খেলছি’, বলেন মিরাজ।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো করছে বলেই মনে করেন মিরাজ। সেমিফাইনালে যেতেই হবে না ভেবে খেলার ধারাটা বজায় রাখতে চান এ অফ স্পিনার। তাহলে ভালো ফল আসবে বলে বিশ্বাস করেন মিরাজ, ‘আমরা খুব ভালো খেলছি। বড় চারটা দল আমাদের নিচে আছে। সবাই ভালো খেলছি বলেই পাঁচে আছি। আগের ম্যাচ যেভাবে খেলেছি, যে তিনটা ম্যাচ যেভাবে জিতেছি, খেলার প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে সামনেও ভালো করব। সেমিফাইনালে যেতেই হবে, এটা না ভেবে ধারাটা ঠিক রেখে খেললে আশা করি ভালো কিছুই হবে।’