ভারতের জয় চায় বাংলাদেশ, এরপর পরাজয়

মোসাদ্দেকের ভারত নিয়ে বিশেষ কোনো উত্তেজনা নেই! ছবি: প্রথম আলো
মোসাদ্দেকের ভারত নিয়ে বিশেষ কোনো উত্তেজনা নেই! ছবি: প্রথম আলো
>এজবাস্টনে কাল ভারত–ইংল্যান্ড ম্যাচ। দুদিন পর একই মাঠে বাংলাদেশ–ভারত লড়াই। বাংলাদেশ একটি ম্যাচ দেখবে দর্শক হিসেবে, আরেকটি লড়বে। সেমিফাইনাল যাওয়ার সমীকরণে বাংলাদেশ কখনো চাইবে ভারতের জয়, কখনো পরাজয়—কী অদ্ভুত পরিস্থিতি বার্মিংহামে!

বাংলাদেশ–ভারত—দুই দলই যে উঠেছে একই হোটেলে। হোটেল হায়াট রিজেন্সি এখন তাই বাংলাদেশ–ভারতের সমর্থকেদের কাছে আকর্ষণীয় ‘স্পটে’ পরিণত হয়েছে। সকাল–বিকেল ভিড় লেগেই আছে। সমর্থকদের এই ভিড় দেখ গত কদিনে অনেক ব্রিটিশ অবাক চোখে জানতে চাইলেন, আচ্ছা এখানে কী কোনো বড় তারকা এসেছেন?

প্রিয় তারকাকে পেতেই হবে এমন কথা নয়। যদি প্রতিপক্ষ দলের কাউকে পাওয়া যায় সেটাও মন্দ নয়—সেলফি–ছবি তুলে ফেসবুকে ছাড়লেই ‘লাইক–কমেন্টে’র বন্যা বয়ে যাবে! সমর্থকদের তাই চেষ্টার কমতি নেই, হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে থাকছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আজ সকালে যেমন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে পেয়ে ছুটে এলেন ভারতীয় কজন সমর্থক। বাংলাদেশ অধিনায়ক ফোনে কোথাও কথা বলছিলেন। হাতের ইশারায় ভারতীয় সমর্থকদের থামিয়ে দেওয়ায় তারা আবার ‘মাইন্ড’ করলেন কি না ভেবে মাশরাফি ফোন রেখে ভালোভাবে ছবি তুললেন। এর মধ্যে এক বাংলাদেশি সমর্থক নিজেকে পরিচয় দিলেন যুক্তরাজ্য শাখার ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে!

ভক্ত–সমর্থকদের ভিড় চাইলেই ক্রিকেটাররা এড়াতে পারেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের সঙ্গে তো মাঠে দেখা হওয়ার আগে হোটেলেই হয়ে যাচ্ছে। কাল ধোনি–পান্ডিয়ার সঙ্গে মাশরাফির একটা আড্ডাই হয়ে গেল। দলের তরুণ অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেনের কাছে অবশ্য একই হোটেলে থাকার ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়, ‘কোনো কাজ ছাড়া বাইরে যাই না, এ কারণে একই হোটেলে থাকার ব্যাপারটা আমার কাছে কোনো ব্যাপার না। রুমে থাকার চেষ্টা করি। বাইরের বিষয় নিয়ে অত ভাবি না।’

একই হোটেলে থাকার ব্যাপার মনে না হোক, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ তো অনেক বড় মনে হওয়ার কথা। ভারত ভীষণ শক্তিশালী দল, এ টুর্নামেন্টে তাদের এখনো কেউ হারাতে পারেনি। ২ জুলাই এজবাস্টনে কোহলিদের না হারাতে পারলে বার্মিংহামেই সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন শেষ! ভারত যে অনেক শক্তিশালী দল, এটা মাথায় নিতে চান না মোসাদ্দেক, ‘টুর্নামেন্টের এমন একটা জায়গায় আছি আমরা, মনে করি না ভারত বা অন্য কোনো দলকে নিয়ে ভাবার সময় আছে! অবশ্যই ভারত শক্ত প্রতিপক্ষ। আমরা যেভাবে খেলছি সেটা করতে পারলে আশা করি ভালো কিছু হবে।’

মোসাদ্দেক হয়তো বলতে চাইছেন, প্রতিপক্ষ যেই হোক, সমীকরণ এমনই, জিততেই হবে। জয় যেখানে শেষ কথা, প্রতিপক্ষ কে, সেটি নিয়ে কি আর ভাবলে চলে! ভারতকে নিয়ে না ভাবলেন। কাল ভারত–ইংল্যান্ডে ম্যাচে কাকে সমর্থন দেবেন? এই ম্যাচে ভারতের জয়–পরাজয় যে বাংলাদেশের সমীকরণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। দন্তবিকশিত হাসিতে গুগলিটা দারুণভাবে সামলালেন মোসাদ্দেক, ‘ব্যাপারটা স্বার্থপরের মতো হয়। যে দলের জয়ে আমাদের লাভ হয় তাকেই সমর্থন করব।’

মোসাদ্দেক তথা পুরো বাংলাদেশ কাল কার জয় চাইবে, তা আর বলতে!