সবার আড়ালে বাংলাদেশ

>মাশরাফিরা আজ এজবাস্টনে অনুশীলন করেছেন লোকচক্ষুর আড়ালে। এজবাস্টনের প্র্যাকটিস এরিয়ার ঘেরাটোপ ভেদ করেই কত ঘটনা বেরিয়ে এল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন থেকে

বাংলাদেশ দল আজ অনুশীলন সেরেছে সবার আড়ালে থেকেই। যেখানে সংবাদমাধ্যম কিংবা দর্শক-সমর্থকদের কোনো ‘উৎপাত’ নেই! মাশরাফিরা এমন এক মাঠে অনুশীলন করেছেন, দূর থেকে সেটি দেখার সুযোগই নেই। মাশরাফি-সাকিবরা ভারত ম্যাচের আগে তৈরি হচ্ছেন নিশ্ছিদ্র এক ঘেরাটোপে।

এজবাস্টন মাঠে এখন চলছে ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ। মূল মাঠে প্রবেশের যেহেতু সুযোগ নেই, বাংলাদেশ দলকে তাই ঝালিয়ে নিতে হয়েছে এজবাস্টনের প্র্যাকটিস এরিয়াতে। মূল ভেন্যুর পাশেই এজবাস্টন রোডে অনুশীলন মাঠটা। সে মাঠে রুদ্ধদ্বার অনুশীলন সেরেছে বাংলাদেশ।

ভারত ম্যাচের আগে অনুশীলনটা নিভৃতেই সারছে বাংলাদেশ। ছবি: শামসুল হক
ভারত ম্যাচের আগে অনুশীলনটা নিভৃতেই সারছে বাংলাদেশ। ছবি: শামসুল হক

সেরে উঠছেন মাহমুদউল্লাহ
পায়ের মাংসপেশিতে চোটে পড়া মাহমুদউল্লাহকে আজ টিম বাসে উঠতে দেখা গেল পা টেনে টেনে। ব্যথা পুরোপুরি সারেনি। তবে চোট থেকে সেরা ওঠার অগ্রগতি বলার মতোই। অনুশীলনে হালকা নক করেছেন। অনুশীলনটা যেহেতু রুদ্ধদ্বার ছিল, নেটে ব্যাটিং করেছেন কি না, বলার উপায় ছিল না। দলের সঙ্গে থাকা প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন দুদিন আগে বলছিলেন, যেহেতু সময় আছে, মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে তাঁরা আশাবাদী। হালকা চোট আছে মাশরাফি বিন মুর্তজারও। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট তিনি বয়ে বেড়াচ্ছেন টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই। বাংলাদেশ অধিনায়ক আশাবাদী, বাকি ম্যাচগুলোও তিনি ভালোভাবে শেষ করতে পারবেন।

বাংলাদেশের অনুশীলনে ড্রোনে
আগেই বলা হলো, অনুশীলন মাঠে ঢোকার সুযোগ নেই। তবে এজবাস্টন রোডে দাঁড়িয়েই দেখা গেল খেলোয়াড়দের মাথার ওপর ঘুরছে একটা ড্রোন! বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে যেটি বিরল দৃশ্য। মাশরাফিরা তবে অনুশীলনে ড্রোন ব্যবহার করছেন? টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হলো, ড্রোনটা আসলে আইসিসির। সম্ভবত মাশরাফিদের অনুশীলনের ভিডিও করতেই তারা এটি ব্যবহার করেছে, পরে যেটি প্রচার হবে আইসিসির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।

‘লেট লতিফ’ সাইফউদ্দিন
বাংলাদেশ দলের প্রায় সবাই উঠে গেছেন টিম বাসে। বাকি ছিলেন কোর্টনি ওয়ালশ আর মিডিয়া ম্যানেজার। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশ দলের ফাস্ট বোলিং কোচ হন্তদন্ত হয়ে ছুটলেন টিম বাস ধরতে। বাস যেই রওনা দিয়েছে অনুশীলন মাঠে, এ সময় হোটেলের নিচে এলেন সাইফউদ্দিন। বাংলাদেশ দলের তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার দেরি করায় হাতছাড়া করেছেন টিম বাস! সাইফউদ্দিন পরে অনুশীলন মাঠে গেছেন আকসুর এক কর্মকর্তার সঙ্গে।

কাঁপন ধরা আওয়াজ
বাংলাদেশ দল যতই লোকচক্ষুর আড়ালে অনুশীলন করুক, ভারতীয় সমর্থকদের গগনবিদারী চিৎকার তাদের কানে ঠিকই পৌঁছে গেছে। অনুশীলন মাঠ যেহেতু এজবাস্টন স্টেডিয়ামের পাশেই, ভারতীয় বোলাররা ইংল্যান্ডের উইকেট পেলেই যে গর্জনটা তারা তুলছে, তাতে যেন পুরো বার্মিংহামই কেঁপে উঠছে! ২ জুলাই বাংলাদেশের বিপক্ষেও হয়তো বিপুলসংখ্যক ভারতীয় দর্শকের উপস্থিতি থাকবে এজবাস্টনে। তবে বাংলাদেশের সমর্থকেরা চেষ্টা করছেন ‘দ্বাদশ’ খেলোয়াড় হিসেবে ভারতীয়দের সঙ্গে টেক্কা দিতে। ২ জুলাই ম্যাচকে ঘিরে নানা রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তাঁরা। জানা গেছে, সবাই জড়ো হয়ে মিছিল করতে করতে ঢুকবেন গ্রাউন্ডে। কাগজে-কলমে এ আয়োজনের নাম সাপোর্টার্স র‍্যালি। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে থেকে মিলেছে অনুমতিও। আয়োজন শান্তিপূর্ণ করতে লাল-সবুজ সমর্থকদের মাঝ থেকেই কাজ করবেন ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবী। ভারতীয় সমর্থকদের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে পাকিস্তান-আফগানিস্তান দর্শকদের মধ্যে কোনো কাণ্ড হবে না, এটাই সবার প্রত্যাশা।