দেড় বছর পর বল হাতে নিয়ে ম্যাচ জেতালেন ম্যাথুস

পুরানকে আউট করেই ম্যাচ শ্রীলঙ্কার দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন ম্যাথুস। ছবি: রয়টার্স
পুরানকে আউট করেই ম্যাচ শ্রীলঙ্কার দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন ম্যাথুস। ছবি: রয়টার্স
নিকোলাস পুরানের সেঞ্চুরির পরও ৩১৫ রানে থেমেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শ্রীলঙ্কার কাছে ম্যাচ হেরেছে ২৩ রানে। ম্যাচসেরা হয়েছেন ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান আভিস্কা ফার্নান্দো।

বোলারদের ব্যবহারে কিছুটা লেজেগোবরে পাকিয়ে ফেলেছিলেন দিমুথ করুনারত্নে। ইনিংসের তখনো বাকি তিন ওভার, অথচ লাসিথ মালিঙ্গার এক ওভার ছাড়া নির্ভরযোগ্য কোনো বোলারের ওভার বাকি নেই! বাধ্য হয়েই তাই দেড় বছর পর বল হাতে তুলে নিতে হলো অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে। সেই ম্যাথুসই কি না প্রথম বলে তুলে নিলেন শ্রীলঙ্কার গলার কাঁটা হয়ে থাকা নিকোলাস পুরানকে! অসম্ভবকে সম্ভব করা এক জয়ের স্বপ্ন দেখা ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশার কফিনে শেষ পেরেকটাও পোঁতা হয়ে গেল ওখানেই। ৩১৫ রানে ইনিংস শেষ করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে ২৩ রানে।

অথচ পুরানের ব্যাটে চড়েই রেকর্ড গড়া জয়ের স্বপ্ন বুনছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৩৯ রানের লক্ষ্যে নেমে ১৪৫ রানেই পড়ে গিয়েছিল ৫ উইকেট। সেখান থেকে ১১৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে জয়ের কিনারা পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ক্রমশ সঙ্গীহারা হয়ে পড়া পুরান শেষ করে আসতে পারেননি। ম্যাচের শেষ দিকে জয়ের সুবাস পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকেও তাই থামতে হলো ২৩ রান দূরে।

কেবল পুরানের কথা বললে ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের প্রতি কিছুটা অবিচারই করা হবে। পুরান ইনিংস গড়েছেন, আর সেটিকে গতি দিয়েছেন অ্যালেন। আটে নেমে ৩২ বলে ৫১ রানের সাহসী ইনিংস খেলেছেন। মাত্র ৯.৪ ওভারে ৮৩ রানের জুটি গড়েছেন দুজনে মিলে। ৪৫তম ওভারে পুরানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে অ্যালেন রান আউট না হলে ম্যাচটা হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজই জিতত।

বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে আরও একবার টেনেছেন সেই ‘সবেধন নীলমণি’ মালিঙ্গা। ইনিংসের শুরুতে সুনীল অ্যামব্রিস ও শাই হোপের উইকেট দুটি তুলেছেন, আর শেষ দিকে এসে নিয়েছেন ওশান টমাসের উইকেট। ১০ ওভারে মাত্র ৫৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট, ক্রিকেট বিশ্বকাপে নিজের উইকেট সংখ্যাকে নিয়ে গেলেন ৫৫ তে।

পুরান-অ্যালেনের কল্যাণে শেষ দিকে ম্যাচ জমলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা দেখে মনে হয়নি এত দূর পর্যন্ত যেতে পারবে তারা। ক্রিস গেইল আরও একবার ব্যর্থ, হোপ-হেটমায়ার-হোল্ডাররাও পারেননি চাহিদা মেটাতে। অ্যালেনেরটি সহ পুরো ইনিংসে রান আউটই হয়েছে ৩টি। ম্যাচ শেষে হয়তো এটি নিয়েই আক্ষেপ করবে হোল্ডারের দল।

এর আগে শ্রীলঙ্কার ইনিংসে রান পেয়েছেন মোটামুটি সবাই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের যেমন পুরান, শ্রীলঙ্কার তেমনি ছিলেন আভিস্কা ফার্নান্দো। মাত্রই অষ্টম ওয়ানডে খেলতে নামা ফার্নান্দো খেলেছেন ১০৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস। মাত্র তিন বছর আগেই অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলা ২১ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যানই হয়েছেন ম্যাচসেরা। ফার্নান্দো ও পুরানের সেঞ্চুরিতে একটি নতুন রেকর্ডও দেখেছে বিশ্বকাপ। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের এক ম্যাচে ২৫ বছরের কম বয়সী দুজন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি পেলেন। তবে ম্যাচশেষে হাসিটা থাকল কেবল ফার্নান্দোর মুখেই।