মান বাঁচাতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের ফ্রি টিকিট

লর্ডসের বিখ্যাত প্যাভিলিয়ন। বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে এমন ভরা গ্যালারি নাও থাকতে পারে। ছবি: রয়টার্স
লর্ডসের বিখ্যাত প্যাভিলিয়ন। বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে এমন ভরা গ্যালারি নাও থাকতে পারে। ছবি: রয়টার্স

টিকিটের জন্য হাহাকার—এমন খবরই আসছে বিশ্বকাপ থেকে। আগামীকাল বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়েও দুই দেশের সমর্থকদের মধ্যে টিকিট নিয়ে হয়তো কাড়াকাড়ি হবে, হোক না পয়েন্ট টেবিল বিবেচনায় এ ম্যাচের গুরুত্ব এখন শূন্যের কোটায়। কিন্তু লর্ডসের বিখ্যাত প্যাভিলিয়নের আসন অলংকৃত করেন যাঁরা, সেই এমসিসি সদস্যদের মধ্যে এই ম্যাচ নিয়ে কোনো আগ্রহই নেই! যেটি এমসিসির জন্য অসম্মানের হবে বলে মনে করছে ক্লাবটি। মান বাঁচাতে প্যাভিলিয়নের ২৫০টি টিকিট স্থানীয় স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে বিতরণ করেছে এমসিসি।

ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় খেলাটির সবচেয়ে বিখ্যাত মাঠ লর্ডসের। এর বিখ্যাত প্যাভিলিয়নের টিকিট সংরক্ষিত থাকে এমসিসির সদস্যদের জন্য। অন্যান্য সময় সদস্যেরা বিনা মূল্যে ম্যাচ উপভোগ করতে পারলেও বিশ্বকাপে অতিরিক্ত ৪৫ পাউন্ড খরচ করতে হচ্ছে প্রতিটা ম্যাচের জন্য। এমসিসির সদস্যদের জন্য এই অর্থ অবশ্য যৎসামান্য বলেই বিবেচিত হওয়ার কথা।

তবুও সদস্যদের মধ্যে এ ম্যাচের টিকিট কাটার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখতে না পেয়ে এমসিসির প্রধান নির্বাহী গাই ল্যাভেন্ডার ইমেইল করে রীতিমতো আকুতিই জানিয়েছেন। প্যাভিলিয়নের মাত্র ৫০ শতাংশ টিকিটই যে বিক্রি হয়েছে। বিশ্বকাপের মতো আসরের কোনো ম্যাচে প্যাভিলিয়ন ফাঁকা থাকলে তা এমসিসির জন্য সম্মানজনক কিছু হবে না বলেই মনে করেন গাই ল্যাভেন্ডার।

গত মঙ্গলবার পাঠানো ইমেইলে ল্যাভেন্ডার ২০১৭ নারী বিশ্বকাপ ফাইনালের উদাহরণও উল্লেখ করেছেন। ভারতকে নাটকীয়ভাবে হারিয়ে সেবার শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচটা গ্যালারির বাকি তিন অংশ ভরা থাকলেও প্যাভিলিয়নে ছিল হাতেগোনা কিছু দর্শক। তখন এ নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছিল ইংল্যান্ডের ক্রিকেট মহলে। আগামীকালের ম্যাচেও এর পুনরাবৃত্তি হোক, এমসিসি তা চায় না।

ইমেইলটি যখন সদস্যদের পাঠানো হয়, তখনো ইংল্যান্ডের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি। তখন পর্যন্ত বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচটি ইংল্যান্ডের সেমিফাইনাল ভাগ্যের নিয়ন্তা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ছিল। ল্যাভেন্ডার এসব কথা বলেও এমসিসি সদস্যদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন যেন টিকিট কাটা হয়। ইমেইলে তিনি লিখেছিলেন, ‘শুক্রবারের ম্যাচ টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় ভাগ্য নিয়ন্ত্রক ম্যাচ হয়ে যেতে পারে। তার পরও দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই ম্যাচের প্যাভিলিয়নের টিকিট অনেক বেশি হারে অবিক্রীত থেকে গেছে। সদস্যদের হয়তো স্মরণ থাকবে, ২০১৭ নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে মাঠের ঠাসা দর্শকের বিপরীতে ফাঁকা প্যাভিলিয়নের তুলনা করে আলোচনা হয়েছিল। এটা এমসিসির বৈশ্বিক ভাবমূর্তির জন্যই খারাপ। শুক্রবার একই ঘটনা যেন না ঘটে এর জন্য কমিটি বদ্ধপরিকর।’

এই ইমেইলের পর ইংল্যান্ড নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে। ল্যাভেন্ডার হয়তো তখনই অনুমান করেছিলেন, এই ইমেইলেও কাজ হবে না। এ কারণে ২৫০টি টিকিট তারা স্থানীয় স্কুলশিক্ষার্থীদের বিতরণ করে দিচ্ছে।