মালিকের জন্য বিদায়ী ম্যাচ নয়, নৈশভোজই যথেষ্ট!

বিশ্বকাপ শেষেই অবসরে যাচ্ছেন শোয়েব মালিক। এএফপি ফাইল ছবি
বিশ্বকাপ শেষেই অবসরে যাচ্ছেন শোয়েব মালিক। এএফপি ফাইল ছবি
>বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে পাকিস্তানি এক সাংবাদিক ওয়াসিম আকরামের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, শোয়েব মালিকের একটি ‘ফেয়ারওয়েল ম্যাচ’ প্রাপ্য কি না। কোনো রাখঢাক না রেখেই আকরাম বলে দিয়েছেন, মালিকের জন্য বড়জোর বিদায়ী নৈশভোজের আয়োজন করা যেতে পারে, বিদায়ী ম্যাচ নয়!

শোয়েব মালিক গত বছরই ঘোষণা দিয়ে দিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ ২০১৯ খেলেই অবসরে যাবেন। পাকিস্তানের সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা গাণিতিকভাবে টিকে থাকলেও বাস্তবে যে তা প্রায় অসম্ভব, সেটিও জানতেন সবাই। পাকিস্তানের জার্সিতে শোয়েব মালিকের বিদায়ী ম্যাচ তাই আজই হতে পারত। সে সুযোগটা অবশ্য পাননি মালিক, তাঁকে একাদশে রাখেনি পাকিস্তান। ওয়াসিম আকরামও মনে করছেন, ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

বিশ্বকাপে নিজের নামের প্রতি একদমই সুবিচার করতে পারেননি পাকিস্তানের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলা মালিক। তিন ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়ে ব্যাট হাতে করেছেন মাত্র ৮ রান, এর মধ্যে দুটিতেই ফিরেছেন কোনো রান না করেই! সেই যে দলে জায়গা হারালেন, এরপর আর খেলার সুযোগ পাননি। কিন্তু ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ হিসেবে কি একটি ম্যাচ প্রাপ্য মালিকের? বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ওয়াসিম আকরামকে এমন প্রশ্নই করেছিলেন এক পাকিস্তানি সাংবাদিক। জবাবে আকরাম সরাসরি বলে দিয়েছেন, মালিকের সম্মানে সর্বোচ্চ একটি নৈশভোজের আয়োজন করা যেতে পারে, বিদায়ী ম্যাচ নয়!

মালিকের বিদায়ী ম্যাচ প্রসঙ্গে ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা বাঁহাতি পেসার আকরাম বলেছেন, ‘এটা ক্লাব ক্রিকেট নয় যে কোনো খেলোয়াড়ের জন্য আপনি বিদায়ী ম্যাচের আয়োজন করবেন। তাঁর জন্য বরং আমরা একটা বিদায়ী নৈশভোজের আয়োজন করতে পারি।’

বিদায়ী ম্যাচ আয়োজনের ব্যাপারে নেতিবাচক মতামত দিয়েছেন বটে, তবে বিশ্বকাপে বাজে ফর্মে থাকা মালিককে আগলে রাখারই চেষ্টা করলেন বিশ্বকাপে ৫৫ উইকেটের মালিক আকরাম, ‘সে আগেই ঘোষণা দিয়েছিল বিশ্বকাপের পরেই অবসরে যাবে। দুর্ভাগ্যবশত শেষটা ভালো হয়নি তাঁর। পাকিস্তান ক্রিকেটকে অনেক কিছু দিয়েছে সে। তাঁর আরও সুন্দর বিদায় প্রাপ্য ছিল। বিশ্বকাপে বেশি ম্যাচ খেলেনি সে। দুবার রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছে সে, তবে এটা যেকোনো খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রেই হতে পারে।’

পাকিস্তানের ক্রিকেটে মালিকের অবদান মনে রেখে তাঁর বিদায়টাকে স্মরণীয় করে রাখা যেতে পারে, এমনটাই অভিমত সাবেক এ পাকিস্তানি অধিনায়কের, ‘পাকিস্তান ক্রিকেটকে সে যে সেবা দিয়েছে, তা আমাদের সব সময় মনে রাখা উচিত। পাকিস্তানকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছে সে। সে একজন ভালো মানুষ। সুতরাং ভালো একটা বিদায় তো তাঁকে দেওয়া যেতেই পারে। আমি জানি এ বিশ্বকাপে সে প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারেনি, কিন্তু এত বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে এসেছে সে।’

এর আগে ভারতের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর দেশবাসীর তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন মালিক। ভারত ম্যাচের আগে গভীর রাত পর্যন্ত পরিবার নিয়ে সিসা বারে সময় কাটিয়েছেন মালিক, এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল তখন। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে মালিক বলেছিলেন, ম্যাচের আগের রাতের নয়, বরং আরও দুদিন আগের ভিডিও ছিল সেটি। দেশকে এত বছর সেবা দেওয়ার পর এমন অভিযোগ ওঠা দুর্ভাগ্যজনক, এমনটাও বলেছিলেন পাকিস্তানের হয়ে ২৮৭ টি ওয়ানডে খেলা মালিক।

আরও পড়ুন