আর্জেন্টিনার ক্ষুধার্তদের জন্য মেসির রেস্টুরেন্ট 'ফ্রি'

নিজ দেশের মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন লিওনেল মেসি। এএফপি ফাইল ছবি
নিজ দেশের মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন লিওনেল মেসি। এএফপি ফাইল ছবি
>তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও ভয়ংকর দারিদ্র্যে ভুগছে আর্জেন্টিনার মানুষ। এমন অবস্থায় নিজ দেশের মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি।

মানবিক কাজে লিওনেল মেসির অংশগ্রহণ নতুন কিছু নয়। ইউনিসেফের তহবিলে শিশুদের জন্য অর্থ দান করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানবিক কাজে শামিল হতে দেখা গেছে আর্জেন্টাইন তারকাকে। এবার আরও একবার মানবিকতার নিদর্শন রাখলেন মেসি। নিজ দেশ আর্জেন্টিনায় বাস্তুহারা ও ক্ষুধার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

বেশ কিছুদিন ধরেই আর্জেন্টিনায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ চলছে। সঙ্গে দেশটির ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক মন্দা তো আছেই। গত তিন বছরে দেশটিতে অতি দরিদ্র লোকের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি এসে ঠেকেছে। দারিদ্রের কারণে খোলা রাস্তায় ঠাঁই নিয়েছে প্রচুর মানুষ। ক্ষুধা ও ঠান্ডায় এরই মধ্যে পাঁচজন মারাও গিয়েছে। নিজ দেশের মানুষদের এমন দুরবস্থা দেখে তাদের পাশে না দাঁড়িয়ে পারেননি বার্সেলোনা তারকা।

যে শহরে মেসির জন্ম, সেই রোজারিওতে ‘ভিআইপি’ নামে একটি রেস্টুরেন্ট চালায় মেসির পরিবার। গত শুক্রবার থেকে ক্ষুধার্ত মানুষদের জন্য রেস্টুরেন্টটিতে প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত করে দিয়েছেন মেসি ও তাঁর পরিবার। ক্ষুধার কারণে যারা কষ্ট পাচ্ছেন তারা সকলে যেন এ রেস্টুরেন্টে এসে গরম খাবার খেয়ে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করেছেন মেসি। খাবারের জন্য তাদের কাছ থেকে কোনো দাম রাখা হবে না বলে জানানো হয়েছে।

রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার অ্যারিয়েল আলমাদার বরাত দিয়ে স্প্যানিশ গণমাধ্যম মার্কার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘খাবারের পাশাপাশি আমরা কফি, সফট ড্রিংকস ও হালকা ওয়াইনেরও ব্যবস্থা রেখেছি। এর মধ্যেই অনেক মানুষ আমাদের রেস্টুরেন্টে এসে খাবার খেয়েছেন। টানা ১৫ দিন আমরা এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সব ক্ষুধার্ত মানুষদের জন্য রেস্টুরেন্টের দরজা খোলা থাকবে।’

এর আগে জনপ্রিয় আর্জেন্টাইন ক্লাব রিভারপ্লেটও শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে। রাস্তায় রাত কাটাতে বাধ্য হওয়া মানুষেরা যেন শৈত্যপ্রবাহে কষ্ট না পান, সে কারণে গত বুধবার থেকে ক্লাবের স্টেডিয়াম উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহায়তায় গরম কাপড়ও বিতরণ করা হয়েছে।

এমন মানবিক কাজে মেসির অংশগ্রহণ এই প্রথমবার নয়। দীর্ঘদিন ধরে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করা মেসি ২০১৩ সালে রোজারিওতে একটি শিশু হাসপাতালের সংস্কারকাজের জন্য ৬ লাখ ৭০ হাজার ইউরো দান করেছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য বার্সেলোনা থেকে নিজ উদ্যোগে চিকিৎসকও পাঠিয়েছিলেন তিনি। এর আগে ২০১২ সালে ছয় বছরের জন্য বারো বছর বয়সী একটি শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন মেসি। শৈশবে মেসি নিজে যে হরমোন সমস্যায় ভুগেছিলেন, সেই একই সমস্যায় ভুগছিল শিশুটিও। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় ইউনিসেফে বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তাও দিয়েছেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এ ফুটবলার।